নিজস্ব প্রতিবেদক : বাংলাদেশের তৈরি পোশাক রপ্তানির ওপর ইন্দোনেশিয়ার আরোপিত সেইফগার্ড ডিউটি আরোপের বিরুদ্ধে আপিল করেছে বাংলাদেশ। শুল্কারোপের সঙ্গে বাংলাদেশের স্বার্থ সংশ্লিষ্টতা তুলে ধরে এ ব্যাপারে শুনানী আহ্বানের অনুরোধ জানিয়ে রোববার ইন্দোনেশিয়ান সেইফগার্ড কমিটি’র কাছে চিঠি পাঠিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। আগামী ১৯ মার্চের মধ্যে এ বিষয়ে শুনানী হবে।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, এর আগে গত নভেম্বরে তৈরি পোশাক রপ্তানিতে সেইফগার্ড মেজার্স আরোপের বিরুদ্ধে শুনানীতে অংশ নিয়েছিল বাংলাদেশ। ওই শুনানিতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন ও বিজিএমইএ প্রতিনিধিরা বিভিন্ন যুক্তি তুলে ধরলেও তা গ্রহণ করেনি ইন্দোনেশিয়া।
এদিকে ইন্দোনেশিয়ার সঙ্গে ‘প্রিফারেন্সিয়াল ট্রেড এগ্রিমেন্ট’ (পিটিএ) সই করার প্রস্তুতি নিচ্ছে বাংলাদেশ। এর আওতায় তৈরি পোশাক রপ্তানিতে শুল্কমুক্ত সুবিধা চাওয়া হয়েছে। বাংলাদেশের এ প্রস্তাবে ইন্দোনেশিয়ার বাণিজ্য মন্ত্রণালয় প্রাথমিক সম্মতিও দিয়েছিল বলে জানা গেছে।
জানা যায়, স্বল্পোন্নত দেশ হিসেবে বাংলাদেশ ইন্দোনেশিয়ায় কিছু পণ্যে শুল্কমুক্ত সুবিধা পেলেও তৈরি পোশাক রপ্তানিতে তা পায় না। বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক রপ্তানিতে ২৫ শতাংশ শুল্ক পরিশোধ করতে হয়। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে বাংলাদেশ ইন্দোনেশিয়া থেকে ১৮৭ মিলিয়ন ডলার টেক্সটাইল আর্টিকেল আমদানি করেছে, এর মধ্যে ১৩২.৫৯ মিলিয়নডলারের ফাইবার রয়েছে। একই অর্থবছরে বাংলাদেশ থেকে মাত্র ৩০ মিলিয়ন ডলারের পোশাক রপ্তানি করা হয়।
বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা (ডব্লিউটিও)-এর বিধান অনুযায়ী, কোন পণ্য অতিরিক্ত আমদানির কারণে কোন দেশের সংশ্লিষ্ট শিল্পখাত ক্ষতিগ্রস্ত হলে স্থানীয় শিল্পের স্বার্থ সুরক্ষায় সেইফগার্ড মেজার্স নেয়ার সুযোগ রয়েছে। তৈরি পোশাক আমদানির কারণে ‘স্থানীয় শিল্প ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে’ বলে দেশটির টেক্সটাইল এসোসিয়েশন আবেদন করার পর ২০১৭-২০১৯ সালের সময়ের তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে এ পদক্ষেপ নিয়েছে ইন্দোনেশিয়ান সেইফগার্ড কমিটি। ডিউটি আরোপ করে কমিটি গত ২৩ ফেব্রুয়ারি নোটিফিকেশন ইস্যু করেছে। আগামী ৯০ দিনের মধ্যে এটি কার্যকর করবে বিশ্বের ১৬তম বৃহৎ অর্থনীতির দেশটি। এতে বলা হয়েছে বাংলাদেশ, চীন, ভিয়েতনাম ও সিঙ্গাপুর থেকে ইন্দোনেশিয়ায় রপ্তানি হওয়া তৈরি পোশাক পণ্যের প্রতি পিসে ০.৪৪ ডলার থেকে ১১.২৯ ডলার পর্যন্ত সেইফগার্ড ডিউটি আরোপ করা হলো।
টপ গার্মেন্টস (ক্যাজুয়াল), টপ গার্মেন্টস (ফরমাল), বটম গার্মেন্টস, স্যুটস, এনসেম্বলস এন্ড ড্রেসেস, আউটওয়্যার, বাচ্চাদের পোশাক, এক্সেসরিজ, হেডওয়্যার এবং নেকওয়্যার প্রভৃতি রপ্তানির ক্ষেত্রে এটি আরোপ করা হয়েছে।