আমার দেশ • প্রথম পাতা • লিড ৫
জুনেই কোভ্যাক্সের ১ কোটি ৯ লাখ ৮ হাজার টিকা পাচ্ছে বাংলাদেশ
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক : জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে কোভিড ভাইরাস মোকাবেলায় বৈশ্বিক জোট কোয়ালিশন ফর ভ্যাকসিন (কোভ্যাক্স) কর্মসূচির অধীনে বিভিন্ন দেশকে বিনামূল্যে এ বছরেই ২ বিলিয়ন ডোজ টিকা দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে বিশ^ স্বাস্থ্য সংস্থা ‘হু’। মঙ্গলবার এ পরিকল্পনা প্রকাশ করা হয়। যা আগামী মে-জুন মাস থেকে ধারাবাহিকভাবে টিকা সরবরাহ কার্যক্রম শুরু হচ্ছে। দরিদ্র এবং মধ্যম আয়ের দেশগুলোতে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে এ টিকা পৌঁছে দেওয়া হবে। কোভ্যাক্স মে মাসের শেষ নাগাদ বিশ্বের ১৪২টি দেশে ২৩ কোটি ৮২ লাখ ডোজ টিকা সরবরাহ করবে। জাতিসংঘের হিসেবে এখনো ১৩০টি দেশে কোনো টিকা পৌঁছেনি। জুনের আগে যে কয়েকটি দেশ টিকা পাচ্ছে বাংলাদেশ রয়েছে সেই তালিকার অগ্রভাগে।
কোভ্যাক্সের আওতায় কেবল উন্নয়নশীল কিংবা অনুন্নত রাষ্ট্রই নয়, সিঙ্গাপুরের মতো উন্নত রাষ্ট্রসহ মোট ১৯৮টি রাষ্ট্র কোভ্যাক্সের টিকা পাচ্ছে। উন্নত দেশগুলো তাদের জনসংখ্যার চেয়ে কয়েকগুণ বেশি টিকা সংগ্রহের ব্যবস্থা করার পর টিকা নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়ে গরিব দেশগুলো। ব্রিটেনের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে অতিরিক্ত টিকা এ বছরের শেষ নাগাদ বিভিন্ন দেশকে দিয়ে দেয়া হবে। ইসরায়েলও প্রতীকী হিসেবে কিছু সংখ্যক টিকা পাঠাচ্ছে সেইসব দেশকে যারা তেলআবিবের আহ্বানে সাড়া দিয়ে জেরুজালেমে তাদের দূতাবাস খুলেছে।
‘হু’ পরিকল্পনা অনুযায়ী, জুনের আগে সবচেয়ে বেশি টিকা যে দেশগুলো পাবে, তার মধ্যে বাংলাদেশ আছে ৪ নম্বরে। অন্যদেশগুলো হচ্ছে নাইজেরিয়া, ইন্দোনেশিয়া, পাকিস্তান ও ব্রাজিল। প্রথম টিকা পেয়েছে আফ্রিকার দেশ ঘানা। সব দেশই প্রথম দফায় টিকা সরবরাহের আওতায় আসছে না। পাকিস্তান ১ কোটি ৪৬ লাখ ৪০ হাজার, নাইজেরিয়া ১ কোটি ৩৬ লাখ ৫৬ হাজার, ইন্দোনেশিয়া ১ কোটি ১৭ লাখ ৪ হাজার ৮০০ ও ব্রাজিল ৯১ লাখ ২২ হাজার ৪০০ টিকা পাবে। তালিকায় পরের পাঁচটি দেশ হিসেবে ইথিওপিয়া ৭৬ লাখ ২০ হাজার, ডেমোক্রেটিক রিপাবলিক অব দ্য কঙ্গো ৫৯ লাখ ২৮ হাজার, মেক্সিকো ৫৫ লাখ ৩২ হাজার, মিসর ৪৩ লাখ ৮৯ হাজার ৬০০ ও ভিয়েতনাম ৪১ লাখ ৭৬ হাজার টিকা পাবে। ইরান, মিয়ানমার, কেনিয়া ও উগান্ডাও টিকা পাওয়ার তালিকায় রয়েছে। প্রতিটি দেশ ৩০ লাখের বেশি টিকা পাবে। মে মাসের শেষ দিকে ভারতও কোভ্যাক্সের টিকার বড় সরবরাহ পেতে পারে।
প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপদেশ টুভালু ৪ হাজার ৮০০ ডোজ টিকা পাবে। নাউরো ও মোনাকো পাবে মাত্র ৭ হাজার ২০০ ডোজ টিকা। কোভ্যাক্স কর্মসূচিতে এ বছর শেষ হওয়ার আগে ৯২টি দরিদ্র দেশের ২৭ শতাংশ জনগণকে টিকা দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। কোভ্যাক্স প্রথম দফায় অ্যাস্ট্রাজেনেকা ও অক্সফোর্ডের ২৩ কোটি ৭ লাখ ডোজ টিকা সরবরাহ করবে। ফাইজার ও বায়োএনটেকের ১২ লাখ ডোজ টিকাও এর মধ্যে থাকবে। তবে ফাইজার ও বায়োএনটেকের টিকা বিশেষ তাপমাত্রায় সুরক্ষিত রাখা ও দুটি ডোজ নেওয়া বাধ্যতামূলক। ঘানা, আইভরি কোস্ট, দক্ষিণ কোরিয়া, ভারত ও কলম্বিয়া প্রথম দফায় কোভ্যাক্সের টিকা পেয়েছে। গত মঙ্গলবার নাইজেরিয়া, অ্যাঙ্গোলা, কম্বোডিয়াতেও কোভ্যাক্সের প্রথম চালানের টিকা পৌঁছেছে। কঙ্গোতেও টিকা পৌঁছানোর কথা রয়েছে।
বুধবার সেনেগালে প্রথম দফায় টিকা পৌঁছানোর কথা রয়েছে। এ সপ্তাহের মধ্যেই আরো ২০টি দেশে কোভ্যাক্সের টিকা পৌঁছে যাবে। এমনকি কিছু ধনী দেশ কোভ্যাক্সের টিকা বিতরণের তালিকায় ছিল। যেমন দক্ষিণ কোরিয়া ২২ লাখ ডোজ, কানাডা ১৬ লাখ, সৌদি আরব ১৫ লাখ, সিঙ্গাপুর ২ লাখ ৪৫ হাজার ও নিউজিল্যান্ড ২ লাখ ১১ হাজার টিকা পাওয়ার কথা। কোভ্যাক্স কর্মসূচির আওতায় যেসব টিকা বিতরণ করা হবে তা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার অনুমোদিত হতে হবে। নোভাভ্যাক্স কোভ্যাক্সকে ১১০ কোটি ডোজ টিকা দেবে। সানোফি-জিএসকে, জনসন অ্যান্ড জনসনের সঙ্গেও কোভ্যাক্সের চুক্তি রয়েছে।