আমার দেশ • প্রথম পাতা • লিড ৫
‘৫ দশকে রপ্তানি বেড়েছে ৯৮ গুণ’
আমিরুল ইসলাম : বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. আতিউর রহমান বলেছেন, ১৯৭৫ সালের পরে এখন পর্যন্ত আমাদের মাথাপিছু আয় ৭ গুণ বেড়েছে। এখন আমাদের মাথাপিছু আয় দুই হাজার ডলারের ওপরে। এই যে বৃদ্ধি তার ৭৩ শতাংশ হয়েছে গত ১২ বছরে। গত এক দশক ধরে আমাদের গড় প্রবৃদ্ধি ৭ শতাংশের মতো হচ্ছে।
যেটা আগের দশকে বা তারও আগের দশকে ৫ শতাংশের বেশি হয়নি। পাঁচ দশকে আমাদের টোটাল রপ্তানি কয়েক মিলিয়ন থেকে ৪০ বিলিয়নে গেছে, ৯৮ গুণ বেড়েছে। রপ্তানি বৃদ্ধির দুই তৃতীয়াংশ ঘটেছে গত ১০-১২ বছরে। গত ১০ বছরে রেমিটেন্স দ্বিগুনেরও বেশি হয়ে গেছে। আমাদের পরিবার বা দম্পতি প্রতি সন্তানের সংখ্যা ১৯৭২ সালে যেখানে ৬ জন ছিলো, এখন সেটা ২-এ নেমে এসেছে। আমাদের জীবনের আয়ু ১৯৭২ সালে ৪৭ বছর ছিলো, এখন ৭৩ বছর। মাতৃমৃত্যু ও শিশুমৃত্যুর হার অর্ধেক হয়ে গেছে গত এক দশকে।
এ প্রতিবেদকের সঙ্গে আলাপে তিনি বলেন, তলাবিহীন ঝুড়ি এখন উপচে পড়ছে। আমাদের খাদ্যে, মাছে, ভাতে সবকিছু উপচে পড়ছে। আমরা একটা উচ্চ প্রবৃদ্ধির দেশ আবার একই সঙ্গে অন্তর্ভূক্তিমূলকও। আমরা আত্মনির্ভরশীল দেশ আবার আমরা সবার সঙ্গে অংশগ্রহণও করি। আমরা নিজেদের মতো নিজেরা চলি আবার খোলামেলা একটা দেশ।
আমাদের তিনটি খাতÑ এক্সপোর্ট, রেমিটেন্স এবং কৃষি একসঙ্গে সাফল্য অর্জন করে চলেছে। এমনকি করোনাকালেও আমাদের ডিজিটাল বাংলাদেশ ও ডিজিটাল অর্থায়নের কারণে আমরা অনেক দেশের চেয়ে ভালো করছি। আমরা সম্প্রতি এলডিসি থেকে উন্নয়নশীল দেশে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি পেয়ে গেছি। সুতরাং মানুষের ওপরে যে বিনিয়োগের কথা বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন সেটা বর্তমান সরকার করেছে বলে সবকিছু সম্ভব হয়েছে এবং আমরা এই অবস্থানে আসতে পেরেছি।
ড. আতিউর রহমান বলেন, করোনা থাকা সত্ত্বেও আমরা একটা নতুন বাস্তবতায় প্রবেশ করেছি। এটা সম্ভব হয়েছে বঙ্গবন্ধু যে লড়াকু মনের কথা বলেছিলেন, সেই লড়াকু মনটাকে শক্তি বানিয়ে আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। ভবিষ্যতে আমাদের খেয়াল রাখতে হবে। কারণ সবকিছু ডিজিটাল হবে। আমাদের অর্থনীতি হবে ডিজিটাল।
আমাদের এসএমই সেক্টর হবে আগের মতোই গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের প্রাইভেট সেক্টর নেতৃত্ব দেবে। আমাদের শিক্ষার গুণমানের ওপর নির্ভর করবে আমাদের শিল্পায়নের ধারা।
আমাদের কৃষিকে আরও আধুনিক করে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতাকে বজায় রাখতে হবে। আমাদের নগরায়ন আরও অনেক বেশি স্মার্ট করতে হবে। আরও অনেকবেশি পরিবেশ সহায়ক এবং পিপল ফ্রেন্ডলি করতে হবে।
আমাদের রিজিওনাল করপোরেশনের প্রতি জোর দিতে হবে। বেশি বেশি করে কর দিতে হবে। এখন জিডিপির ১০ শতাংশ করও আমরা দিই না। এটি খুবই খারাপ কারণ নেপালও ১৫ শতাংশ দেয়। আমাদের অভ্যন্তরীণ সম্পদ আহরণ করার ক্ষমতা বাড়াতে হবে।
বিদেশ থেকেও আমরা কম সুদে অর্থ জোগাড় করবো সেজন্য স্মার্ট অর্থনৈতিক কূটনীতি পরিচালনা করতে হবে। আমরা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে উন্নয়ন করছি, এটা চালিয়ে যাবো। কারণ ৭ মার্চ আমাদের যে রাষ্ট্র গঠন করতে বলেছিলেন বঙ্গবন্ধু সেই গরিব মানুষের রাষ্ট্র, সাধারণ মানুষের কল্যাণের রাষ্ট্র, সেটাকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন তারই কন্যা। এই প্রক্রিয়াকে অব্যাহত রাখতে হবে।