আমার দেশ • প্রথম পাতা • লিড ২
স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে বিদেশ যাওয়ার হার প্রতিদিন ৩ হাজারের বেশি কর্মী বিদেশে যাচ্ছেন
মো. আখতারুজ্জামান : করোনার প্রভাব কাঠিয়ে উঠতে শুরু করেছে বিদেশে কর্মী যাওয়ার প্রবণতা। এখন প্রতিদিন ৩ হাজারের বেশি কর্মী বিদেশে যাচ্ছেন। চলতি বছরের জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারিতে ৮২ হাজার ৬৩৫ জন কর্মী বিশ্বের ৪৪টি দেশে গেছেন। জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো সূত্রে তথ্য জানা যায়। করোনার শুরুতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে লকডাউন হয়ে যাওয়ায় বাংলাদেশ থেকে বিদেশে কর্মী যাওয়া বন্ধ হয়ে যায়। তিন মাস এই অবস্থা চলতে থাকে।
সূত্র জানায়, ২০২০ সালে নারী-পুরষ মিলে মোট ২ লাখ ১৭ হাজার ৬৬৯ জন কর্মী বিভিন্ন দেশে গেছেন। প্রবাসীরা ২০২০ সালে ১৮৪ হাজার ৬৯৯ কোটি ৬৫ লাখ টাকা পাঠিয়েছেন। প্রবাসীদের আয়ে ভর করে বর্তমানে রিজার্ভের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৪ হাজার ৪১২ কোটি ডলার। অন্যদিকে ২০১৯ সালে দেশে থেকে কর্মী গেছেন ৭ লাখ ১৫৯ জন। ২০১৮ সালে ৭ লাখ ৩৪ হাজার ১৫৯ জন। বাংলাদেশের ইতিহাসে সব থেকে বেশি কর্মী বিশ্বের বিভিন্ন দেশে গেছেন ২০১৭ সালে। বছরটিতে ১ কোটি ৮ হাজার ৫২৫ জন কর্মী বিভিন্ন দেশে গেছে। অন্যদিকে ২০২০ সালে বাংলাদেশ থেকে ২১ হাজার ৯৩৪ জন নারী কর্মী বিভিন্ন দেশে যায়।
জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর মহাপরিচালক মো. শামছুল আলম জানান, এখন প্রতিদিন তিন হাজারের বেশি কর্মী দেশের বাইরে যাচ্ছেন। এটা আমাদের জন্য স্বস্তিদায়ক। করোনায় বিশ্বব্যাপী লকডাউন থাকায় তিন মাস আমাদের কর্মীরা দেশের বাহির যেতে পারেনি। এখন কিছুটা স্বাভাবিক অবস্থায় চলে এসেছে। চলতি বছরের জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি মাসে ৮২ হাজার ৬৩৫ জন কর্মী বিশ্বের ৪৪টি দেশে গেছেন। প্রতিনিয়ত কর্মীদের যে হারে বিদেশে যাওয়া হার বাড়ছে তাদের কয়েক মাসের মধ্যে করোনা পূর্ববর্তি সময়ের ন্যায় হবে। স্বাভাবিক সময়ে ৫ থেকে ৬ হাজার কর্মী বিদেশে যেত বলে তিনি জানান। ২০২০ সালের জানুয়ারি মাসে ৬৯ হাজার ৯৮৮ জন। ফেব্রুয়ারিতে ৫৯ হাজার ১৩৯ জন। মার্চে ৫২ হাজার ৯১ জন।
করোনার প্রভাবে বিশ্বব্যাপী লকডাউন থাকার কারণে ২০২০ সালের এপ্রিল থেকে জুন এই তিন মাস কোনো কর্মী বিদেশে যায়নি। আবার জুলাই থেকে দেশের কর্মীরা বিভিন্ন দেশে যাওয়া শুরু করে। জুলাইতে গেছে ১৬ জন। আগস্টে ৬৪ জন। এর পর থেকে ক্রমান্বয়ে যখন বিভিন্ন লকডাউন তুলে নেয় এবং প্লেন চালু করে তখন থেকে প্রবাসীদের বিদেশে যাওয়ার সূচক বাড়তে থাকে। ২০২০ সালের নভেম্বরে গেছেন ৬ হাজার ৫৭০ জন। ডিসেম্বেরে গেছেন ২৮ হাজার ৩৯৮ জন। জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
সব থেকে বেশি বাংলাদেশি প্রবাসী রয়েছে সৌদি আরবে। বাংলাদেশে মোট প্রবাসীর ৩২ শতাংশের বেশি অবস্থান করছেন। দেশটিতে ২০২০ সালে গেছে ১ লাখ ৬১ হাজার ৭২৬ জন। ২০১৯ সালে গিয়েছিলেন ৩ লাখ ৯৯ হাজার জন। ২০১৮ সালে ২ লাখ ৫৭ হাজার ৩১৭ জন। ২য় অবস্থানে রয়েছে সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই)। দেশটিতে বাংলাদেশের মোট প্রবাসীর ১৮ শতাংশের বেশি অবস্থান করছেন। ইউএইতে ২০২০ সালে গিয়েছেন ১ হাজার ৮২ জন। ২০১৯ সালে ৩ হাজার ৩১৮ জন। ২০১৮ সালে ৩ হাজার ২৩৫ জন।