বঙ্গবন্ধুকে আবদ্ধ করে রাখবেন না, বঙ্গবন্ধু দলমত নির্বিশেষে সকলের
ব্যারিস্টার ফারাহ্ খান : বঙ্গবন্ধু কোনো নির্দিষ্ট দলের নয়। বঙ্গবন্ধুকে দলীয়করণের বাইরে এনে সকলের বঙ্গবন্ধু করতে হবে এবং এই দায়িত্ব তাদের যারা আজ বঙ্গবন্ধুকে নিজ দলের মধ্যে আবদ্ধ করে রেখেছে। আজ আমরা হিংসার অপরাজনীতি তে লিপ্ত। যদিও এই ধারা বঙ্গবন্ধুর জীবদ্দশায় সেই স্বাধীনতার পর থেকে রক্ষী বাহিনী দ্বারা সেই সময়ের জাসদের হাজার হাজার তরুণের রক্তে রঞ্জিত। তবে আমি মনে করি আগে কিংবা বর্তমানে আমরা হিংসার অপরাজনীতি থেকে বের হতে পারিনি বলে যে আগামীতে পারবো না সেটা আমি বিশ্বাস করতে চাই না।
যেই সিরাজুল আলম খান দাদা ভাইকে বঙ্গবন্ধুর আওয়ামী লীগ, খোদ বঙ্গবন্ধুকন্যা আওয়ামী লীগের সভাপতি ‘ষড়যন্ত্রকারী’ বলে আখ্যায়িত করে অপমান করেছেন সেই সিরাজুল আলম খান দাদা ভাইয়ের কাছেও বঙ্গবন্ধু তার অত্যন্ত প্রিয় ও শ্রদ্ধেও। যেই দাদা ভাই বিগত চার যুগেরও বেশি সময় ধরে পুরোপুরি পর্দার আড়ালে চুপচাপ আছেন আজ সেই দাদা ভাইয়ের বইতেও বঙ্গবন্ধুকে সবার ওপর স্থান দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও স্বাধীনতার পর বঙ্গবন্ধুর আওয়ামী লীগ ছেড়ে স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম রাজনৈতিক দল জাতীয় সমাজতান্ত্রীক দল গঠন করে বা পরবর্তী সময়ে এসে যোগ দেন এমন সকল নেতা যেমন আ স ম আব্দুর রব, শাহজাহান সিরাজ, নূরে আলম জিকু, কাজী আরেফ, হাসানুল হক ইনু, শরীফ নুরুল আম্বিয়া, আব্দুল কুদ্দুস মাখন সহ আরো অনেকে তাদের কারো মুখে বা লেখায় আমি আজ অবধি বঙ্গবন্ধুকে ছোট করে, বঙ্গবন্ধুকে হেয় করে কোনো কথা শুনিনি কিংবা কোথাও দেখিনি। বরং বঙ্গবন্ধুকে ছেড়ে আসা এই এরাই ১৫ আগস্ট ১৯৭৫ সালে সপরিবারে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করার জন্য প্রতিবাদ করেছিলেন। তখন বঙ্গবন্ধুর হত্যার প্রতিবাদে বঙ্গবন্ধুর আওয়ামী লীগের ছায়াটিও রাস্তায় বের হয়নি! কিন্তু এখন তারাই বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও বঙ্গবন্ধুর জন্য তাদের ভালবাসার গল্প বলতে বলতে মুখে ফেনা তুলে ফেলে! আফসোস, এই স্বার্থ লোভীরাই যতো দিন গিয়েছে বঙ্গবন্ধুকে ততোটাই আবদ্ধ করে ফেলেছে একটি নির্দিষ্ট গন্ডির মাঝে। অনুগ্রহ করে বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে আপনাদের দলীয় রাজনীতি বন্ধ করুক। অনুগ্রহ করে বঙ্গবন্ধুকে সবার হতে দিন। মনে রাখবেন বঙ্গবন্ধু সবার আপনাদের একার নয়। বঙ্গবন্ধু আপনার দলের নয়। আপনারা আওয়ামী লীগ বঙ্গবন্ধুকে ‘বঙ্গবন্ধু’ বানাননি। বরং ১৯৭১ সালে আপনাদের বর্তমান শত্রæ আপনাদের চোখের বিষ সিরাজুল আলম খান দাদা ভাইয়ের পরিকল্পনায় বঙ্গবন্ধুকে বঙ্গবন্ধু উপাধি দেওয়া হয়েছিল। আজ থেকে দুইদিন পর ১৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন। আমি মনে করি বঙ্গবন্ধুর এই জন্ম শতবার্ষিকীর জন্মদিনে আওয়ামী লীগের সবচেয়ে বড় দায়িত্ব হলো বঙ্গবন্ধু যেন ‘দলীয় বঙ্গবন্ধু’ না হয়ে যায় বরং বাংলাদেশের সকল সাধারন জনগণের মনে শ্রদ্ধেয় বঙ্গবন্ধু হিসেবে সারা জীবন থাকতে পারে সেই দিকে লক্ষ্য রাখা এবং খেয়াল রাখতে হবে অবশ্যই এবং অবশ্যই যেন সকলের মনে বঙ্গবন্ধুর স্থান কোনো ভয় সামাজিকতা কিংবা আওয়ামী লীগ এখন ক্ষমতায় আছে সে কারণে নয় বরং ভালবাসা শ্রদ্ধা ও সম্মান বোধ থেকে আসে। আমি মনে করি তাহলেই শুধু আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় না থাকলেও বঙ্গবন্ধু দলমত নির্বিশেষে চীরজীবী হয়ে বাংলাদেশের মানুষের হৃদয় শ্রদ্ধার সাথে প্রকৃত অর্থে বেঁচে থাকবেন। আমার প্রিয় বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীতে জানাই বিনম্র শ্রদ্ধা। ফেসবুক থেকে