জাকারিয়া হোসেন : সুনামগঞ্জের শাল্লা উপজেলার নোয়াগাঁও গ্রামে হামলার শিকার রঞ্জনা চৌধুরী ও তার স্বামী প্রানেশ চৌধুরী বলেন, আমাদের অনেক ক্ষতি হয়েছে, থাকা খাওয়ার মতো কিচ্ছু নেই। সরকারের কাছে উপযুক্ত বিচার চাই।
গ্রামের প্রবীণ ব্যক্তি হরিপদ দাস (৭০) বলেন খাটের নিচে লুকিয়ে জীবন বাঁচিয়েছি, যারা আক্রমণ করেছে তাদের সঙ্গে আমার জলমহাল নিয়ে মামলা-মোকদ্দমা চলছে। আমাদের গ্রামের ৭০-৮০টি ঘর ভাঙচুর করা হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্তরা সবাই আতঙ্কিত। তবে র্যাব প্রধান আসার কারণে আতঙ্ক কিছুটা কমেছে।
বীর মুক্তিযোদ্ধা জগত চন্দ্র দাসের ছেলে লিটন চন্দ্র দাস বলেন, যেদিন ঝুমন দাসের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছিলো, এরপরের দিন ৭-৮ হাজার মানুষ আমাদের গ্রামে আক্রমণ করতে আসে। ঝুমন দাসের মা জানান, এখনও আতঙ্কে আছেন তারা। ঝুমনের স্ত্রী বলেন হামলাকারীরা আমাকে পিটিয়েছে।
সীমা রানী নামে এক গৃহবধূ জানান, ব্যাংক থেকে উত্তোলন করা লোনের টাকা লুটে নিয়েছে হামলাকারীরা। অস্থায়ী ক্যাম্পের দায়িতে থাকা এসআই আমির খসরু বলেন, ঘটনার পরপর থেকে আমরা এই গ্রামে অবস্থান করছি। গ্রামবাসীর নিরাপত্তা ও সুরক্ষার জন্য নিয়োজিত আছি।
সুনামগঞ্জের শাল্লা উপজেলায় সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা, লুটপাট ও ভাঙচুরের ঘটনায় ২৪ জনকে আটক করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাত থেকে শুক্রবার দুপুর পর্যন্ত বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়।
শাল্লা থানার ওসি নাজমুল হক জানান, ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের আটক করার অভিযান চলছে। অভিযান পরিচালনার স্বার্থে আটকদের নাম প্রকাশ করেননি তিনি। তবে আটকদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন।
এর আগে বৃহস্পতিবার ঐ ঘটনায় দুটি পৃথক মামলা দায়ের করা হয়। একটি মামলার বাদী শাল্লা থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আব্দুল করিম। অন্য মামলার বাদী স্থানীয় হবিবপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান নোয়াগাঁও গ্রামের বাসিন্দা বিবেকানন্দ মজুমদার বকুল।
মামলায় আসামি করা হয়েছে দিরাই থানার সরমঙ্গল ইউনিয়নের চন্দ্রপুর ও নাচনী এবং শাল্লা থানার হবিবপুর কাশিপুর গ্রামের ১৫০০ জনকে। মামলার প্রধান আসামি করা হয়েছে ঘটনার উস্কানিদাতা নাচনী গ্রামের বাসিন্দা সরমঙ্গল ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য (মেম্বার) স্বাধীন মিয়াকে।