গ্যাভি কোভেক্স যেকোনও সময় পাঠাবে ১ লাখ ডোজ দ্রুতই আসছে সেরামের টিকার তৃতীয় চালান
প্রিয়াংকা আচার্য্য ও শিমুল মাহমুদ : আগামী ৮ এপ্রিল থেকে দেশে কোভিড-১৯ প্রতিরোধে দ্বিতীয় ডোজ টিকা দেয়া শুরু হবে। এর মধ্যে এখনও ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট থেকে টিকার তৃতীয় চালান আসেনি। কবে নাগাদ টিকা দেশে এসে পৌঁছাবে সেই তারিখও সুনির্দিষ্ট হয়নি।
এরমধ্যে শুক্রবার ভারত টিকা রপ্তানি সাময়িক স্থগিত রেখেছে বলে ঘোষণা করেছে। ফলে উদ্বিঘœ হতে দেখা গেছে অনেককেই। তবে সংশ্লিষ্টরা আশা করছেন, নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই টিকা পাওয়া যাবে।
এ বিষয়ে বেক্সিমকোর ব্যবস্থাপনা পরিচালক নাজমুল হাসান পাপন বলেন, ‘ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বাংলাদেশ সফর শেষে সেরাম ইনস্টিটিউট থেকে টিকার তৃতীয় চালান আসবে বলে আমরা জানি। পাশাপাশি গ্যাভি কোভেক্স ফ্যাসিলিটি থেকে করোনাভাইরাসের ৬ কোটি ৮০ লাখ ডোজের ১ লাখ ৯ হাজার ভ্যাকসিন আসার কথা রয়েছে। এটা যেকোনও সময় দিয়ে দেবে। বলা হয়েছে ‘বাই মে’।’
‘গ্যাভি থেকে আসা ভ্যাকসিনগুলোর মেয়াদ ৩ মাস। সেরামের কৃর্তপক্ষ জানিয়েছিলো, ৬ মাস, ৯ মাস এবং ১২ মাস মেয়াদে ভ্যাকসিন দিবে তারা। কিন্তু এই মেয়াদ এখনও তারা বাড়ায়নি। তাই সব মিলিয়ে একটু ধীর গতিতে যেতে হচ্ছে। তা না হলে টিকার মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়ে অপচয় হবে।’
প্রসঙ্গত, গত বছরের আগস্টে করোনা প্রতিরোধে টিকা পেতে ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটের সঙ্গে বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালসের মধ্যে ক্রয় চুক্তি হয়। চুক্তি অনুযায়ী বেক্সিমকো সেরাম ইনস্টিটিউট থেকে টিকা এনে সরকারকে সরবরাহ করবে। প্রতি মাসে ৫০ লাখ করে আনবে। এভাবে ৬টি চালানে মোট ৩ কোটি টিকা আনার কথা।
এদিকে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মুখপাত্র অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ রোবেদ আমিন বলেন, ভ্যাকসিনের তৃতীয় চালান সময় মতো আসলেই দ্বিতীয় ডোজের টিকা নিশ্চিত হবে। তিনি আশা করেন, ৪র্থ চালান থেকে চুক্তি অনুযায়ী প্রতি মাসে ৫০ লাখ ডোজ টিকা সেরামের কাছ থেকে পাওয়া যাবে। এর ফলে সঙ্কট সৃষ্টি হবে না।
এর আগে গত সপ্তাহে স্বাস্থ্যসচিব আব্দুল মান্নান সাংবাদিকদের বলেছিলেন, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সফরের পরপরই সেরাম থেকে পরবর্তী চালান পেতে পারে বাংলাদেশ। সেটা এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহেও আসতে পারে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের লাইন ডিরেক্টর (এমএনসিএইচ) এবং পরিচালক সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচি ডা. শামসুল হক বলেন, ঠিক কবে নাগাদ টিকা আসবে সে সম্পর্কে আমার জানা নেই। তবে এলে আমরা যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
অধিদপ্তরের তথ্যানুযায়ী, গত ২০ জানুয়ারি ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট উৎপাদিত অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার ২০ লাখ ডোজ টিকা ভারত সরকার উপহার হিসেবে বাংলাদেশে পাঠায়। পরবর্তীতে ক্রয়কৃত টিকার ৫০ লাখের প্রথম চালান আসে ২৫ জানুয়ারি। দেশে ২৭ জানুয়ারি টিকাদান কর্মসূচি শুরু হয়। এরপর ২২ ফেব্রুয়ারি ভারত থেকে দ্বিতীয় চালানে আসে আরও ২০ লাখ ডোজ। সর্বশেষ ২৬ জানুয়ারি ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বাংলাদেশের মানুষেকে আরও ১২ লাখ ডোজ টিকা উপহার হিসেবে দেন।