মহাসড়কে অতিরিক্ত পণ্য পরিবহন বন্ধে বসছে এক্সেল লোড নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র
সোহেল রহমান : দেশের আন্তঃজেলা মহাসড়ক ও সড়কগুলোতে ধারণক্ষমতার অতিরিক্ত পণ্যবাহী যান চলাচল করছে। যে সড়কের উপর দিয়ে ১০ টন ক্ষমতাসম্পন্ন যানবাহন চলাচলের কথা, কোনো নিয়ন্ত্রণ না থাকায় দ্বি-গুন থেকে আড়াইগুন বেশি পণ্য পরিবহন করা হচ্ছে। এর ফলে সড়কগুলোর বেহাল অবস্থার সৃষ্টি হচ্ছে এবং মহাসড়কের রক্ষণাবেক্ষণ ব্যয় প্রতি বছর বাড়ছে। এমতাবস্থায় সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের আওতাধীন দেশের গুরুত্বর্পূণ মহাসড়কে পণ্য পরিবহনের প্রবেশ পথে ‘এক্সেল লোড নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র’ স্থাপনের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। বুধবার অনুষ্ঠেয় ‘সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি’র বৈঠকে এ-সংক্রান্ত একটি প্রস্তাব অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন করা হতে পারে।
সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, টেকসই, নিরাপদ ও ব্যয় সাশ্রয়ী (পরিবহন ব্যয় ও সময়) সড়ক অবকাঠামো এবং সমন্বিত যোগাযোগ ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে অনুমোদিত ওজন সীমার অতিরিক্ত পণ্য পরিবহন নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে সড়কের নির্ধারিত ডিজাইন লাইফ নিশ্চিত করা হবে। প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে মহাসড়কে অতিরিক্ত পণ্য বোঝাই যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে এবং জাতীয় মহাসড়কগুলো অতিরিক্ত লোড থেকে রক্ষা পাবে। এতে সড়কের স্থায়িত্বকাল বাড়বে। জানা যায়, প্রকল্পের আওতায় সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের পূর্ব জোনের ঢাকা, ময়মনসিংহ, চট্রগ্রাম, সিলেট ও কুমিল্লা জোনে এক্সেল রোড নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র স্থাপন করা হবে। এ লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় অবকাঠামো ও সুবিধাদি নির্মাণ করা হবে। এ কাজটি করবে ‘ন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট ইঞ্জিনিয়ার্স লিমিটেড’। এতে ব্যয় হবে ৩০১ কোটি ৩৫ লাখ টাকা।
প্রকল্পের আওতায় চারতলা ফাউন্ডেশনের উপর ২তলা ভবন নির্মাণ, ক্যাফেটেরিয়া, ভূমি উন্নয়ন (মাটির কাজ) ১৩ লাখ ৮০ হাজার ৯৬১ দশমিক ৮০ ঘন মিটার, রিজিড পেভমেন্ট নির্মাণ ১ লাখ ২৫ হাজার ৯৩৮ বর্গমিটার, ফ্লেক্সিবল পেভমেন্ট নির্মাণ ৩ হাজার ৭৯০ বর্গমিটার, আরসিসি ড্রেন নির্মাণ ১৫ হাজার ৮০০ মিটার ইত্যাদি কাজ অন্তর্ভূক্ত রয়েছে।
সূত্র জানায়, প্রকল্প বাস্তবায়নে দরপত্র প্রক্রিয়ায় ২টি প্রতিষ্ঠান অংশ নেয়। অপর প্রতিষ্ঠানটি হচ্ছে ‘স্পেকট্রা ইঞ্জিনির্য়াস লিমিটেড’। এ কোম্পানির প্রস্তাবিত ব্যয় ছিল ৩০৪ কোটি ৩২ লাখ টাকা। এমতাবস্থায় সর্বনিম্ন দরদাতা প্রতিষ্ঠান হিসেবে ‘ন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট ইঞ্জিনির্য়াস’-কে মনোনীত করেছে ‘দরপত্র মূল্যায়ন কমিটি’।
সূত্র জানায়, ‘সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের আওতাভুক্ত গুরুত্বর্পূণ মহাসড়কে পণ্য পরিবহনের উৎসমুখে এক্সেল লোড নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র স্থাপন’ র্শীষক প্রকল্পটি গত ২০১৯ সালের ৩ সেপ্টেম্বর একনেক সভায় অনুমোদিত হয়। আগামী ২০২২ সালের ৩০ জুনের মধ্যে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের কথা রয়েছে। প্রকল্প বাস্তবায়নে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ১ হাজার ৬৩০ কোটি ২৮ লাখ টাকা। প্রকল্পটির পূর্তকাজ দুটি প্যাকেজে বাস্তবায়নের কথা রয়েছে।