মার্চে মোট রপ্তানি আয়ের এক-তৃতীয়াংশ আসে পাটজাত পণ্য থেকে ৯ মাসে পাটপণ্যে রপ্তানি আয় বিলিয়ন ডলার
মো. আখতারুজ্জামান : বিশ্বব্যাপী করোনা সংক্রমনে বাংলাদেশ যে কয়েকটিখাতে ভালো করেছে তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে পাটজাত পণ্যে রপ্তানি আয়। চলতি অর্থবছরের ৯ মাসে পাটজাত পণ্যে থেকে রপ্তানি আয় প্রায় এক বিলিয়ন মার্কিন ডলার।
রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) প্রকাশিত হালনাগাদ পরিসংখ্যানের তথ্যমতে, মার্চে পাটজাত পণ্যে রপ্তানি আয় ৯৫ কোটি ৩৬ লাখ ডলার। যা মার্চ মাসের দেশের মোট রপ্তানি আয়ের ৩১ শতাংশ। মার্চে মোট রপ্তানি আয় ৩০৭ কোটি ৬ লাখ ডলার। পরিসংখ্যানে দেখা যায়, মার্চে কাঁচা পাটে রপ্তানি আয় ১১ কোটি ৫ লাখ ডলার। পাটের সুতা ও বস্তাজাত পণ্য থেকে আয় ৫৫ কোটি ২৮ লাখ ডলার। বস্তা ও ব্যাগজাত পণ্য থেকে আয় ১০ কোটি ৭ লাখ ডলার।
বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব মো. আবুল কালাম জানান, কাঁচা পাটের রপ্তানি গত বছরের তুলনায় চলতি বছর কমেছে। তবে আশার দিক হচ্ছে প্রক্রিয়াজাত বা পাট পণ্যের রপ্তানি গত বছরের তুলনায় বেড়েছে। এটা মুলত হচ্ছে বিশ্বব্যাপী পরিবেশ বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধি পেয়েছে। বিভিন্ন দেশে এখন পচনশীল পণ্যের ব্যবহার বেড়েছে।
তিনি জানান, পরিবেশের বিষয়টি দীর্ঘদিন আলোচনায় চলে এসেছে। ২০১৯ সালে জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে প্রাকৃতিক উৎস থেকে প্রাপ্ত পণ্যের ব্যবহারের বিষয়ে গুরুত্বারোপ করা হয়। এর পর অনেক দেশেই প্লাস্টিকজাত পণ্যের ব্যবহার বন্ধ করা হয়েছে বা হতে যাচ্ছে। গত বছরের শুরু থেকেই করোনার সংক্রমণের পর থেকে প্রাকৃতিক উৎস থেকে প্রাপ্ত পণ্যের ব্যবহার বৃদ্ধি পেয়েছে। এই সব কিছু মিলেই বহির্বিশ্বে আমাদের পাটজাত পণ্যের চাহিদা বেড়েছে।
আবুল কালাম জানান, পাশাপাশি আমাদের উদ্যোক্তাদের মাঝে বহুমুখী পাটজাত পণ্য তৈরির হার বৃদ্ধি পেয়েছে। চলতি অর্থবছরের পাটজাত পণ্যে রপ্তানি আয়ের গ্রোথ ৩৩ শতাংশ রয়েছে। এ নয় মাসে প্রায় ১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার আয় হয়েছে। আশা করা হচ্ছে অর্থবছর শেষে এক বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যাবে।
ইপিবির তথ্য মতে, চলতি অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে ৯৫ কোটি ডলারের পাট ও পাটজাত পণ্য রপ্তানি হয়েছে। এই আয় গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ২২ দশমিক ৯৪ শতাংশ বেশি। পাটপণ্যের মধ্যে পাটের সুতা ও বস্তার রপ্তানি বেড়েছে যথাক্রমে ২৫ ও ২৩ শতাংশ। এর মধ্যে নভেম্বরে ৫৫ কোটি ৩৪ লাখ ডলার। ডিসেম্বরে পাটজাত পণ্য থেকে রপ্তানি আয় ৬৬ কোটি ৮১ লাখ ডলার। জানুয়ারিতে ৭৬ কোটি ৫৬ লাখ ডলার। ফেব্রুয়ারিতে পাটজাত পণ্য থেকে রপ্তানি আয় হয় ৮৬ কোটি ২৭ লাখ ডলার। মার্চে পাটজাত পণ্যে রপ্তানি আয় ৯৫ কোটি ৩৬ লাখ ডলার।
আলোচ্য সময়ে চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য রপ্তানি আয় ৬৮ কোটি ডলার। যা গত বছরের একই সময়ের চেয়ে দশমিক ৫৩ শতাংশ কম। বিশ্বব্যাপী করোনার কারণে দেশের কৃষি প্রক্রিয়াজাত পণ্যের রপ্তানি কমলেও আবার গতি ফিরেছে। চলতি অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে ৭৪ কোটি ডলারের কৃষি প্রক্রিয়াজাত পণ্য রপ্তানি হয়েছে। আয় গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ৩ দশমিক ৪৩ শতাংশ বেশি। এ ছাড়া হিমায়িত খাদ্যের রপ্তানি ৮ দশমিক ৬৬ শতাংশ কমে গেছে। রপ্তানি হয়েছে ৩৬ কোটি ৭৭ লাখ ডলারের হিমায়িত খাদ্য। সম্পাদনা : ভিক্টর রোজারিও