মানা হচ্ছে না বিধিনিষেধ অতিরিক্ত ভাড়ায় ঢাকা ছাড়ছেন যাত্রীরা
অর্থনীতি ডেস্ক : বাংলাদেশ করোনা ভাইরাস ব্যাপকহারে সংক্রামণের কারণে রাজধানী ছাড়ছেন অনেকে। রাজধানীর ভিতরে পুলিশের ব্যাপক তৎপরতা থাকার কারণে যানবাহনগুলো সরকারি আদেশ মেনে চললেও রাজধানীর বাইরে চলছে ভিন্ন চিত্র।
শনিবার নারায়ণগঞ্জের সাইনবোর্ড এলাকায় ভাড়ায় প্রাইভেটকার মাইক্রোবাসগুলো বিভিন্ন জেলায় অতিরিক্ত ভাড়ায় যাত্রী পরিবহন করছে। সাইনবোর্ড থেকে চট্টগ্রাম, ফেনী, নোয়াখালী, কুমিল্লা, সিলেট, ভৈরব-কিশোরগঞ্জ যাত্রী পরিবহন করছে ওইসব গাড়িগুলো। যেখানে আন্তঃজেলা বাসগুলোর ভাড়া ছিলো ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা, সেখানে এসব গাড়ি ৮০০-৯০০ টাকায় জন প্রতি ভাড়া আদায় করছে।
সিলেটগামী মনির হোসেন বলেন, আমি ঢাকায় একটি ছোট দোকানে কাজ করি। লকডাউনের কথা শুনে আগেই বাড়ি যাচ্ছি। কারণ ঐ সময় বেচা বিক্রি হবে না। দোকান রাখতে হবে বন্ধ। আবার ঢাকায় থেকে খরচও চালাতে পারবো না। কিন্তু যেখানে ৫০০ টাকায় বাসে যেতাম, সেখানে মাইক্রোবাসে ভাড়া নিচ্ছে ৯০০ টাকা। আমার জন্য এই ভাড়া অতিরিক্ত তবুও ঢাকা ছাড়তে হচ্ছে।
এদিকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের চিটাগাং রোড এলাকায় দেখা যায়, মানুষ নির্দিষ্ট গন্তব্যে যাওয়ার জন্য বাস ও লেগুনাগুলোতে সামাজিক দূরত্ব বজায় না রেখে ধাক্কাধাক্কি করে উঠছেন। দ্বিতীয় দফায় করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ব্যাপকভাবে বেড়ে যাওয়ায় গত ৫ এপ্রিল থেকে ১১ এপ্রিল পর্যন্ত এক সপ্তাহের জন্য কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করেছিলো সরকার। কিন্তু সেটি মানছে না সাধারণ মানুষ।
রাজধানীর বিভিন্ন বাজারগুলোতে দেখা যায় শারীরিক দূরত্ব ও স্বাস্থ্যবিধি না মেনে বাজার করছেন অনেকে। কেউ কেউ আবার চায়ের দোকানে বসে আড্ডায় মশগুল হয়ে আছেন।
করোনায় একদিনে শনাক্তের হার ও মৃত্যুর হার বৃদ্ধি পাওয়ায় আগামী ১৪ এপ্রিল থেকে সারাদেশে কঠোরভাবে লকডাউন পালন করা হবে বলে জানিয়েছেন জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন।
প্রসঙ্গত, গত বছরের ৮ মার্চ দেশে প্রথমবার করোনা শনাক্ত হওয়ার পর ২৬ মার্চ থেকে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করে সরকার। শুরুতে ২৬ মার্চ থেকে ৪ এপ্রিল পর্যন্ত ‘ছুটি’ ঘোষণা হলেও পরে তার মেয়াদ বাড়ে কয়েক দফা। ওই সময় দেশে টানা ৬৬ দিন সাধারণ ছুটি ছিল। সে সময় সব অফিস-আদালত, কল-কারখানা, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রেখে সারা দেশে সব ধরনের যানবাহন চলাচলে নিষেধাজ্ঞা জারি হয়। ছুটির মধ্যে সবকিছু বন্ধ থাকার সেই পরিস্থিতি ‘লকডাউন’ হিসেবে পরিচিতি পায়। কিন্তু তাতে নি¤œবিত্তের জীবন-জীবিকা আর দেশের উৎপাদন ব্যবস্থা অস্তিত্ব সংকটে পড়লে বিভিন্ন মহলের দাবিতে সরকার ৩১ মের পর থেকে ধাপে ধাপে বিধিনিষেধ শিথিল করতে থাকে। বছরের শেষে এসে সব স্কুল-কলেজ বন্ধ থাকা ছাড়া আর সব কড়াকড়িই উঠে যায়। ভাইরাসের বিস্তার নিয়ন্ত্রণে রেখেই অর্থনৈতিক কর্মকা- সচল রাখার ভাবনা থেকে মাঝে পুরো দেশকে লাল, হলুদ ও সবুজ জোনে ভাগ করে পরিস্থিতি অনুযায়ী লকডাউনের বিধিনিষেধ আরোপের পরিকল্পনা হয়েছিল। পরীক্ষামূলকভাবে কয়েকটি এলাকায় সেই ব্যবস্থা চালানোও হয়েছিল। কিন্তু পরে আর তা এগোয়নি।
তবে অভ্যন্তরীণ রুটে চলাচলকারী বিমান সংস্থা ইউএসবাংলা এয়ারলাইন্স, নভোএয়ার এবং রাষ্ট্রীয় ক্যারিয়ার বিমান সূত্রে জানা গেছে- তারা এখন পর্যন্ত সিভিল এভিয়েশন থেকে ফ্লাইট বন্ধের কোনো নির্দেশনা পাননি। এ কারণে তারা এখনো ফ্লাইট শিডিউল অব্যাহত রেখেছেন। সিভিল এভিয়েশনের নির্দেশনা পাওয়ার পর তারা ফ্লাইট বন্ধের সিদ্ধান্ত যাত্রীদের অবহিত করবেন। সূত্র : বাংলানিউজ, সারাবাংলা