আমার দেশ • নগর সংস্করণ • প্রথম পাতা • লিড ২
সংগীতশিল্পী মিতা হক আর নেই
কেএম নাহিদ : বিশিষ্ট সংগীতশিল্পী ও শুদ্ধ সংগীত চর্চার অন্যতম পুরোধা মিতা হক আর নেই (ইন্নালিল্লাহি…রাজিউন)। রোববার ভোর ৬টা ২০ মিনিটে তিনি না ফেরার দেশে পাড়ি জমান। তার দেবর শাহীন খান এ তথ্য জানিয়েছেন।
মিতা হক দীর্ঘদিন ধরে শারীরিক নানা জটিলতায় ভুগছিলেন। ২০১৬ সাল থেকে তিনি ডায়ালাইসিস করাচ্ছিলেন।
সম্প্রতি তিনি করোনা পজিটিভ হয়েও সেরে ওঠেন। তবে শনিবার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাকে রাজধানীর বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতালে নেওয়া হয়। দেওয়া হয় লাইফ সাপোর্ট। রোববার সকালে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়, আজই কেরানীগঞ্জে তাকে তার বাবা-মায়ের কবরের পাশে শায়িত করা হবে। এর আগে বেলা ১১টায় ছায়ানটে নেওয়া হবে মরদেহ।
তার জামাতা মোস্তাফিজ শাহীন ফেসবুকে লেখেন, ‘মিতা হক….সকাল ৬.২০ এ চলে গেলেন। চলেই গেলেন… সবাই ভালোবাসা আর প্রার্থনায় রাখবেন।’
রাষ্ট্রপতি মিতা হকের রুহের মাগফিরাত কামনা করেন ও তার শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। রোববার দেওয়া শোকবার্তায় প্রধানমন্ত্রী মরহুমার আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন এবং তার শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।
১৯৬২ সালে জন্মগ্রহণ করেন মিতা হক। তিনি প্রথমে তার চাচা ওয়াহিদুল হক এবং পরে ওস্তাদ মোহাম্মদ হোসেন খান ও সনজীদা খাতুনের কাছে গান শেখেন। ১৯৭৬ সাল থেকে তিনি তবলাবাদক মোহাম্মদ হোসেন খানের কাছে গান শেখা শুরু করেন। ১৯৭৭ সাল থেকে নিয়মিত তিনি বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বেতারে সংগীত পরিবেশনা করতেন।
২০২০ সালে তিনি একুশে পদকে ভূষিত হন মিতা হক। তারও আগে ২০১৬ সালে শিল্পকলা পদক লাভ করেন। এরপর কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৫৬তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে মিতা হককে বাংলা একাডেমির রবীন্দ্র পুরস্কার দেওয়া হয়।
তিনি সুরতীর্থ নামে একটি সংগীত প্রশিক্ষণ দল গঠন করেন। এছাড়া তিনি ছায়ানটের রবীন্দ্রসংগীত বিভাগের প্রধান ছিলেন। তিনি রবীন্দ্রসংগীত সম্মিলন পরিষদের সহ-সভাপতিও ছিলেন।একুশে পদকপ্রাপ্ত রবীন্দ্রসংগীত শিল্পী মিতা হকের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ। রোববার শোকবার্তায় রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘বাংলাদেশে রবীন্দ্র চর্চা এবং রবীন্দ্রসংগীতকে সাধারণ মানুষের কাছে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে তার প্রচেষ্টা মানুষ শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করবে।’