প্রবৃদ্ধি নেগেটিভ হওয়ার আশঙ্কা থাকলেও জীবন বাঁচাতে লকডাউন প্রয়োজন : ড. মাহবুব উল্লাহ
আমিরুল ইসলাম : অর্থনীতিবিদ ড. মাহবুব উল্লাহ বলেছেন, সবকিছুর একটা মূল্য আছে। কোনো লোক যেন করোনা আক্রান্ত না হয়, এজন্য ব্যবস্থা নিতে হবে। সেটা করতে গেলে অর্থনীতির কিছু ক্ষতি হবে। অর্থনীতির চেয়ে মানুষের জীবন অনেক বড়। মানুষের জীবন অমূল সম্পদ। অর্থনৈতিক মূল্যে জীবনের দাম নির্ধারণ করা যায় না। মানুষের জীবনকে রক্ষা করার জন্য কোনো প্রবৃদ্ধি না হলেও কিংবা নেগেটিভ প্রবৃদ্ধিও হলেও লকডাউন করতে হবে। অনেক ধনী দেশের অর্থনৈকি প্রবৃদ্ধি সংকোচিত হয়েছে করোনা মহামারির কারণে।
এ প্রতিবেদকের সঙ্গে আলাপে তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত দেশে সত্যিকার দুস্ত ও গরিব লোকদের একটি বিশ্বাসযোগ্য তালিকা করা হয়নি। তাদের বাসস্থান কোথায়, তারা কোথায় থাকে, ঠিকানা কী সেটা তালিকাবদ্ধ করা হয়নি। এনআইডিতে তাদের সামাজিক অবস্থান লিপিবদ্ধ নেই। এ শ্রেণির লোককে বাঁচিয়ে রাখতে হলে তাদের মধ্যে খাদ্য সরবরাহ করতে হবে, অর্থ নয়। একটি নির্দিষ্ট জায়গায় তাদের জন্য খাবারের ব্যবস্থা করতে হবে। আমাদের জাতীয় চরিত্রের পরিববর্তন হওয়া দরকার। রাজনৈতিক নেতৃত্বের চরিত্রের পরিবর্তন না হলে জাতীয় চরিত্রের পরিবর্তন কখনো আসে না।
যদি সংক্রমণ কমিয়ে আনতে হয় তখন ঢাকার মতো শহরে লোকজনের চলাচল, বাজারে যাওয়া, গণপরিবহনে চলা এবং আরও অন্যান্য যে সমস্ত জমায়েত আছে সেটা রাজনৈতিক হোক, সামাজিক হোক এগুলোকে অবশ্যই বন্ধ করতে হবে। সকল নাগরিককে স্বাস্থবিধি পালনে উদ্বুদ্ধ করতে হবে এবং তারা যদি নিজ দায়িত্বে স্বাস্থ্যবিধি না মানে, তাহলে তাদের আর্থিক জরিমানা করতে হবে। কারণ তাদের এই আচরণের কারণে অন্যরা সংক্রমিত হচ্ছে।
তিনি বলেন, শারীরিক দূরত্ব মেনে চলতে হবে, হাত ধোতে হবে। সরকারি অফিস খোলা রাখতে চাইলে যানবাহনের ব্যবস্থা না থাকলে কিছুদিনে জন্য বেসরকারি খাত থেকে চুক্তিভিত্তিক ভাড়া করতে পারে। এই যানবাহনগুলোকে জীবানুমুক্ত করে, যাত্রীসংখ্যা কমিয়ে ব্যবহার করতে হবে। সবাই মাস্ক ব্যবহার করলে সংক্রমণ ৯৫ শতাংশ কমে যায়। এই মুহূর্তে যে ধরনের সংক্রমণ হচ্ছে তাতে অনেকেই পরামর্শ দিচ্ছে ডাবল মাস্ক পরার জন্য। হোটেল ও ক্যান্টিনে খেতে বসে যে আড্ডা হয় সেখান থেকেও সংক্রমণ হয়। সংক্রমণের সকল রকম উৎসকে যাথাসাধ্য বন্ধ করার চেষ্টা করতে হবে।