আমার দেশ • প্রথম পাতা • লিড ১
মহামারী বোঝে না ব্যাবসায়ীরা, অভিযোগ ক্রেতাদের আবারও চালের দাম বাড়ায় বিপাকে নিম্নআয়ের মানুষ
মাসুদ মিয়া : দেশে হু হু করে বাড়ছে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ। সরকার ঘোষিত বিধিনিষেধ আজ থেকে শুরু হবে চলবে ২১ এপ্রিল পর্যন্ত। তার মধ্যে চালের দাম বাড়ায় বিপাকে পড়েছে নি¤œ আয়ের মানুষ। এদিকে সাধারণ ক্রেতারা অভিযোগ করে বলেন, আমাদের দেশের ব্যাবসায়ীরা রোজা মহামারী কিছুই বুঝে না তারা সব সময় সুযোগ সন্ধানে থাকে। যখন তখন চালের দাম বাড়িয়ে দিচ্ছে। গত দুই দিনে চালের দাম কেজিতে বেড়েছে ২-৩ টাকা। বাজারে চালের সরবরাহ কমে যাওয়ায় দাম বেড়েছে বলে জানিয়েছেন খুচরা ব্যবসায়ীরা। তবে পাইকারি ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন ১০ থেকে ১৫ দিন পর চালের দাম কিছুটা কমতে পারে।
মঙ্গলবার রাজধানীর বিভিন্ন খুচরা ব্যবসায়ীদের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে মিনিকেট ৬৬ টাকা নাজিরশাইল চাল বিক্রি হচ্ছে ৬৮ টাকা কেজি, যা বিধিনিষেধ ঘোষণার আগে ছিল ৬৪ থেকে ৬৬ টাকা কেজি। অর্থাৎ চিকন চালের দাম কেজিতে বেড়েছে ২ টাকা টাকা থেকে ৩ টাকা। দাম বাড়ার এই তালিকায় রয়েছে মাঝারি মানের পইজাম ও লতা চালের পাশাপাশি গরিবের মোটা চালও। বর্তমানে মাঝারি মানের চালের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫৬ থেকে ৬০ টাকা, যা আগে ছিল ৫৪ থেকে ৫৬ টাকার মধ্যে। অপরদিকে মোটা চালের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৫২ টাকা, যা আগে ছিল ৪৬ থেকে ৫০ টাকা।
চালের এমন দাম বাড়লেও গত জানুয়ারিতে চাল আমদানির শুল্ক ৬২ দশমিক ৫০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১০ শতাংশে নামিয়ে আনে সরকার। সরকার এমন ছাড় দিলেও তার সুফল মেলেনি। সরকার যখন চাল আমদানির শুল্ক কমানোর ঘোষণা দেয়, সেসময় রাজধানীর বাজারগুলোতে খুচরা পর্যায়ে নাজিরশাইল ও মিনিকেট চালের কেজি বিক্রি হচ্ছিল ৬০ থেকে ৬৪ টাকা। মাঝারি মানের পাইজাম ও লতা চালের কেজি ছিল ৫২ থেকে ৫৪ টাকা। আর মোটা চাল ছিল ৫০ টাকার নিচে।
চালের দামের বিষয়ে রোকনপুরের ব্যবসায়ী নাজমুল হুসাইন বলেন, বাজারে চালের সরবরাহ কমে গেছে। রশিদের মিনিকেট চাল কয়েকদিন ধরে আসছে না। অল্পকিছু যে চাল আসছে তার সবগুলোর দাম কেজিতে ২ থেকে ৩ টাকা বেড়ে গেছে।
লক্ষিবাজারের থেকে চাল কেনা জাকির হোসেন বলেন, অভিযোগ করে বলেন, আমাদের দেশের ব্যাবসায়ীরা রোজা মহামারী কিছু বুঝেনা অনেকদিন ধরে চালের দাম বাড়তি তার পর আবারও চালের দাম বাড়লো গত মাসে রশিদের ২৫ কেজির এক বস্তা চাল কিনেছিলাম ১৬০০ টাকা দিয়ে। এখন সেই চালের বস্তা বিক্রি হচ্ছে ১৬৮০ টাকা। ব্যবসায়ী পরিচিত হওয়ায় আমার কাছ থেকে ১৬৫০ টাকা নিয়েছে।
তিনি বলেন, মহামারিতে একদিকে মানুষ মরছে। অন্যদিকে ব্যবসায়ীরা সবকিছুর দাম বাড়িয়ে দিচ্ছেন। কিন্তু দাম নিয়ন্ত্রণে কেউ কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না। সব চাপ গিয়ে পড়ছে আমাদের মতো নি¤œ আয়ের মানুষের ওপর। আমাদের কষ্ট দেখার কেউ নেই।
রোকনপুরের ব্যাবসায়ী হাচাল আলী বলেন, এক সপ্তাহ আগেও আমরা রশিদের ২৫ কেজির এক বস্তা চাল ১৬০০ টাকা বিক্রি করেছি। কিন্তু গত তিনদিনে যে হারে দাম বেড়েছে তাতে এখন ১৬৮০ টাকা বস্তা বিক্রি করতে হচ্ছে। রশিদের মতো অন্যান্য কোম্পানির চালের দামও বেড়েছে।
হুট করে রাজধানীর বাজারে চালের দাম বাড়লেও ১০ থেকে ১৫ দিনের মধ্যে চালের দাম কমে যেতে পারে বলে জানিয়েছেন পাইকারি ব্যবসায়ীরা। এদিকে চালের অস্বাভাবিক দাম বাড়ায় প্রতিদিনই টিসিবির ট্রাকে ভিড় করছেন নি¤œ আয়ের মানুষেরা। এমন টিসিবির ট্রাক আসার আগেই অনেক স্থানে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করছেন এসব নি¤œআয়ের মানুষ। টিসিবির ট্রাকের সামনে দীর্ঘ লাইন দেখা গেছে।