নগর সংস্করণ • লিড ৫ • শেষ পাতা
শিক্ষিত তরুণদের কৃষিকাজে আনতে বাজেটে প্রণোদনা দেয়া হবে
সোহেল রহমান : অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, ‘আমাদের বাজেটে কৃষি খাত অবশ্যই প্রাধান্য পাবে। কৃষি আমাদের লাইফ-লাইন। কৃষি খাতের যে যে স্থানে হাত দেয়া উচিৎ, সেখানে সেখানে আমরা হাত দেব। পাশাপাশি আমাদের শিক্ষিত তরুণ সমাজ, যারা কৃষিতে আসতে চায়, তাদের উৎসাহিত করতে বাজেটে কিছু প্রণোদনা রেখে আমরা চেষ্টা করবো তাদের উৎসাহিত করার জন্য।’
বৃহস্পতিবার গণমাধ্যম প্রতিনিধিদের সঙ্গে এক ভার্চুয়াল প্রাক-বাজেট আলোচনা শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন। প্রাক-বাজেট আলোচনায় গণমাধ্যম ব্যক্তিত্বদের মধ্যে ‘ডেইলি স্টার’ সম্পাদক মাহফুজ আনাম, ‘আমাদের নতুন সময়’ সম্পাদক নাঈমুল ইসলাম খান, ‘বাংলাদেশ প্রতিদিন’ সম্পাদক নঈম নিজাম ও ‘চ্যানেল আই’-এর বার্তা প্রধান শাইখ সিরাজ প্রমুখ অংশ নেন।
অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘কৃষি যান্ত্রিকীকরণ হবে এবং কৃষি খাতে যেসকল পণ্য আছে, সবক্ষেত্রেই আমরা আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করবো। ম্যানুয়াল থেকে যান্ত্রিকীকরণের কাজ আমরা ইতিমধ্যে শুরু করেছি। গত বাজেটেও এ বিষয়ে আমাদের বক্তব্য ছিল, সেখানে আমরা কিছু টাকাও বরাদ্দ রেখেছিলাম। আমি মনে করি যে, আমাদের কৃষি ভালো কাজ করছে, কৃষিকে গতিশীল, বেগবান ও শক্তিশালী করার জন্য যা যা প্রয়োজন সরকার তা করবে।’
প্রাক-বাজেট আলোচনায় গণমাধ্যম ব্যক্তিত্বদের বিভিন্ন পরামর্শের কথা উল্লেখ করে অর্থমন্ত্রী জানান, শাইখ সিরাজ খাদ্য নিরাপত্তা, কৃষিতে ভর্তুকি বাড়ানো, পোল্ট্রি শিল্পের দিকে নজর দেয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। এছাড়া কৃষিখাতে শিক্ষিত তরুণরা এগিয়ে আসছে। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে শহরকেন্দ্রীক ভবনের ছাদে কৃষিকাজ হচ্ছে। সেরকম আমাদের দেশেও করা যায় কি না Ñসে বিষয়েও পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।
অর্থমন্ত্রী বলেন, সাংবাদিক নাঈমুল ইসলাম খান ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এখন আন্তর্জাতিক মানের নয়’ বলে উল্লেখ করেছেন। বিশ্ববিদ্যালয়টিকে কীভাবে স্বীকৃত করা যায় এবং গবেষণার মাধ্যমে আরও বেশি আন্তর্জাতিক মানের করার বিষয়ে তিনি পরামর্শ দিয়েছেন।
এছাড়া সাংবাদিক নঈম নিজাম নিউজপ্রিন্টের ওপর আরোপিত কর হ্রাস ও কর্পোরেট ট্যাক্স কমানোর পরামর্শ দিয়েছেন।
অর্থমন্ত্রী বলেন, এর বাইরে আমাদের বিভিন্ন কাজ সময়মতো হয় না বলে অপচয় হয়, সেই অপচয় বন্ধ করা এবং এ বিষয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়-কে আরো কঠোর হওয়ার জন্য পরামর্শ দিয়েছেন তারা।
প্রসঙ্গত, ইতিপূর্বে বিভিন্ন ফোরামের সঙ্গে প্রাক-বাজেট আলোচনায় খাদ্যে ভর্তুকী আরও বাড়ানো এবং কর্পোরেট ট্যাক্স কমানোর ইঙ্গিত দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী। গণমাধ্যম প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠকে এরকম কোনো আশ্বাস দেয়া হয়েছে কি না- জানতে চাইলে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘এগুলোর জন্য আমাদের বাজেট প্রণয়ণ টিম রয়েছে, অর্থ মন্ত্রণালয়ের বাজেট শাখা রয়েছে, তারা এগুলো নিয়ে কাজ করছে। আজ আমরা যে পরামর্শ পেয়েছি সেগুলো পর্যালোচনা করবো।
তারপর আমরা টিম নিয়ে আবার একসঙ্গে বসবো, সেখানে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে প্রাপ্ত সুপারিশগুলোর মধ্যে কোন্গুলো বাজেট প্রণয়নে কাজে লাগাব। যতটা আমাদের সাধ্যে কুলায় সেভাবেই গ্রহণযোগ্য পরামর্শ আমরা গ্রহণ করবো।’
প্রাক-বাজেট আলোচনায় অন্যান্যের মধ্যে অর্থ বিভাগের সিনিয়র সচিব আব্দুর রউফ তালুকদার, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. আসাদুল ইসলাম, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম, অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব ফাতিমা ইয়াসমিন, বাংলাদেশ ব্যাংক গভর্ণর ফজলে কবির অংশ নেন।