করোনাকালীন সংকট কাটিয়ে উঠতে না পারলে অর্থনীতি চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বে : ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ
আমিরুল ইসলাম : করোনা মহামারি দ্বিতীয় ঢেউ আছড়ে পড়েছে বাংলাদেশে। করোনার প্রথম ঢেউয়ের ধাক্কা কোনোভাবে সামলে নিতে পারলেও দ্বিতীয় ধাক্কায় দেশের অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার শঙ্কা করা হচ্ছে। করোনার এই মহাসংকটকালে কেমন আছে বাংলাদেশের অর্থনীতি এবং দেশের অর্থনৈতিক বৈষম্য দূর করার জন্য কী পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন জানতে চাইলে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, দেশের আয়তন ও জনসংখ্যার দিক দিয়ে পৃথিবীর অন্যান্য দেশের তুলনায় আমরা মোটামুটি একটা স্টেবল অবস্থায় আছি। কিন্তু হঠাৎ করে কোভিডের জন্য অবস্থার অবনতি হচ্ছে। এটা সামলে নিতে না পারলে আমাদের একটা বিরাট চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হতে হবে। বিশাল জনসংখ্যার স্বাস্থ্যসেবা ও কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা কঠিন হবে। আমাদের সমস্যা হলো সমন্বয়হীনতার অভাব। যথাসময়ে ব্যবস্থাপনার অভাব।
তিনি আরও বলেন, গ্রামীণ অর্থনীতি তার নিজস্ব গতিতেই চলে। কৃষি এবং কৃষি সংশ্লিষ্ট মৎস্য এবং পশুপালন এগুলো চলছে। সরকারি সহায়তা না পেলেও মানুষজন এগুলো তার নিজস্ব তাগিদে করছে। বড় কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ দেখা না দেওয়ার কারণে আমরা খাদ্যের প্রকট সংকটে পড়িনি। খাদ্য দ্রব্যের কিছুটা সংকট আছে। বিশেষ করে চালের ক্ষেত্রে। গ্রামীণ অর্থনীতির মূলধারাটা মোটামুটি চলছে, কিন্তু অন্যান্য কর্মসংস্থান স্থবির হয়ে গেছে। শহর ছেড়ে সবাই গ্রামে চলে যাওয়াতে চাপও সৃষ্টি হচ্ছে। গ্রামীণ কর্মসংস্থানকে পুনর্জাগরণ করা এবং এ খাতে আরও বেশি সহযোগিতা করা প্রয়োজন। শুধু শহরের দিকে খেয়াল রাখলে হবে না।
তিনি বলেন, অর্থনৈতিক বৈষম্য দূর করার জন্য যারা কর্মহীন তাদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে হবে। আয়ের সংস্থান না করলে বৈষম্য দিন দিন বাড়বে। দিনমজুরদের আয় কমে যাচ্ছে সম্প্রতি তাদের মজুরিও কমে যাচ্ছে। সামাজিক নিরাপত্তার বেষ্টনী আরও ব্যাপকভাবে বাড়ানো দরকার। চার-পাঁচ মাস যাবত বয়স্ক ভাতা দেওয়া হচ্ছে না। বেকারদেরও একটি ভাতা দেওয়ার কথা ছিলো, সেটাও দেওয়া হচ্ছে না। ক্ষুদ্র, কুটির ও মাঝারি শিল্পখাতগুলোতে অর্থায়ন না করলে দিন দিন বৈষম্য বাড়বে। বৃহৎ শিল্পগুলোতেও বিনিয়োগ বাড়িয়ে সাধারণ মানুষের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে হবে।