গরীব মানুষদের জন্য পর্যাপ্ত খাদ্য সরবরাহের প্রস্তুতি নেওয়া উচিত : নাজনীন আহমেদ
শাহিন হাওলাদার : এই অর্থনীতিবিদ আরও বলেন, যখন মানুষকে ঘরে থাকার বিধি-নিষেধের কথা বলা হয়, তখন আমাদের ভেবে দেখা উচিতÑ বাংলাদেশে কেন কঠোর লকডাউন আরোপ করা কঠিন এবং কেন অধিকাংশ মানুষ এটি মানতে চাচ্ছে না। মানুষের আর্থিক অনটনই হচ্ছে কঠোর বিধিনিষেধ মানতে না চাওয়ার অন্যতম কারণ। দিনমজুর, ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা এবং নি¤œ আয়ের মানুষ এ ধরনের বিধি-নিষেধের ফলে সমস্যায় পড়েছে। কোনো ধরনের আর্থিক সহায়তা ছাড়া কঠোর বিধিনিষেধ মানানো অকল্পনীয়। লকডাউনের সময়ে ব্যাপকভাবে সামাজিক নিরাপত্তা প্যাকেজের মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের উপায় আছে। সামাজিক নিরাপত্তা, প্রণোদনা প্যাকেজ ও খাদ্য সরবরাহের পাশাপাশি যারা অক্রান্ত হচ্ছে তারা কোথায় কীভাবে এ ধরনের সহায়তা পেতে পারে, তা নিশ্চিত করা উচিত। উপজেলা পর্যায় পর্যন্ত এ ধরনের সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি করা উচিত। নিম্ন আয়ের মানুষদের সরকার মোবাইলের মাধ্যমে টাকা দেওয়ার পরিকল্পনা পুনরায় ব্যাপকভাবে চালু করতে পারে।
গত বছর এ প্রণোদনা দেওয়ার টার্গেট ছিলো ৫ মিলিয়ন বা ৫০ লাখ গরিব মানুষকে। বাংলাদেশে অতি দরিদ্র মানুষের সংখ্যা ১১ শতাংশ তার মানে হচ্ছে ১৭ মিলিয়ন মানুষ প্রণোদনার আওতায় পড়ে। তাই মাত্র ৫ মিলিয়ন মানুষকে সহায়তা করা যথেষ্ট নয়। যদিও সব দরিদ্র পরিবারে এ সহয়তার প্রয়োজন নেই কিন্তু আমাদের প্রস্তুত থাকা দরকার। তাৎক্ষাণিকভাবে এতো সংখ্যক মানুষকে অথনৈতিক সহায়তা দেওয়াও কঠিন। গরিব মানুষকে সহায়তার প্রস্তুতি ছাড়াই দীর্ঘ মেয়াদে লকডাউনের ঘোষণা ক্ষতিকর হতে পারে। বিশৃঙ্খলভাবে লকডাউন না দিয়ে আমদের উচিত দীর্ঘ মেয়াদী পরিকল্পনা গ্রহণ করা। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে লকডাউন একমাত্র সমাধান নয় যেহেতু দীর্ঘ মেয়াদে লকডাউন সঠিকভাবে কার্যকর করার সক্ষমতা নেই। আগের বছরের তুলনায় এ বছর লকডাউনের বিধিনিষেধ ও প্রেক্ষাপট সম্পূর্ণ ভিন্ন। গত বছরের লকডাউনের সময়ে আমাদের অর্থনীতি গতিশীল ছিলো এবং মানুষর কাছে সঞ্চয় ছিলো। এমনকি কিছু গরিব মানুষের কাছেও অল্প সময়ে অর্থনৈতিকভাবে টিকে থাকার জন্য সঞ্চয় ছিলো। চাকরি হারিয়ে ও ব্যবসায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে করোনা মহামারির এই সময়টা গত বছেরের থেকে সম্পূর্ণ ভিন্ন ও জটিল।