নগর সংস্করণ • প্রথম পাতা • মিনি কলাম • লিড ৩
আগামী বাজেটে কালোটাকা সাদা করা বহাল রাখার পরামর্শ সাবেক এনবিআর সদস্য আমিনুর রহমানের
বিশ্বজিৎ দত্ত : করোনায় সবাই সমানভাবে ক্ষতিগ্রস্ত নয়। সুতরাং আগামী বাজেটে করারোপ করতে হবে এই দিকগুলো বিবেচনা করে। এরজন্য সরকারের উচ্চ পর্যায়ের পলিসি লেবেলে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। আগামী বাজেটের রাজস্ব আয় কীভাবে হবে এ বিষয়ে কথা বরতে গিয়ে সাবেক এনআির সদস্য আমিনুর রহমান এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, করোনায় ওষুধ শিল্প, ব্যাংক, হাসপাতাল, নিত্যপণ্য উৎপাদনকারী বড় ব্যবসায়ী, ইন্টারনেট প্রোভাইডা, ডাক্তার, অনলাইন পরিসেবা দানকারী সংস্থা, এধরনের অনেক ব্যাক্তি ও শিল্প প্রতিষ্ঠান রয়েছে তাদের চিহ্ণিত করে কর আহরণ বা করোরোপের চিন্তা করতে হবে। কালো টাকা সাদা করার জন্য জুন পর্যন্ত যে সুযোগ দেয়া হয়েছে তা আরো বাড়িয়ে দেয়া দরকার। যাতে বাইরে থাকা অর্থ আরো বেশি করে মূল অর্থনীতিতে প্রবেশ করতে পারে। কোভিড কালীন অনেক উচ্চবিত্তের ব্যায় কমে গেছে। তাদের হাতে সঞ্চয় রয়েছে। এই টাকাকে যাতে নিয়ে আসা যায় সে ব্যবস্থার জন্যও কারো টাকা সাদা করার সুযোগ থাকা দরকার।
আমিনুর রহমান বলেন, কোভিড আসলে রাজস্ব আদায়ে একটি সুযোগও এনে দিয়েছে । সেটি হলো, উচ্চবিত্তের কাছ থেকে কর নেয়া। দেশের ৪০ লাখ করদাতার মধ্যে উচ্চবিত্তের সংখ্যা মাত্র ২ থেকে ৩ লাখ। এরা আসলে কর দেয় না। কর কর্মকর্তারাও তাদের ঘাটায় না। কারন এই উচ্চবিত্তেরা ইনফ্লুয়েনশিয়াল। কর কর্মকর্তাদের আগ্রহ থাকে ছোট ও মাঝারি করদাতাদের উপর। এবারে করারোপে এই ছোট ব্যবসায়ী বা করদাতাদের অনেকটাই মাপ করে দিতে হবে। যাতে তাদের হাতে নগদের যোগান থাকে। এটি করা হলে আগামীতে যতি কোভিড পরিস্থিতির উন্নতি হয় তবে অনেক রাজস্ব আদায় করা যাবে।
তিনি বলেন, ভ্যাট ব্যবস্থা একেবারেই দুর্নীতিগ্রস্ত। ভ্যাট কর্মকর্তারা ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আলাপ আলোচনার মাধ্যমে ভ্যাট নির্ধারণ করেন। এটি এমনও হয় সরকারকে এত টাকা দিবেন। আর আমাকে দিবেন এত। তিনি বলেন, শুল্ক খাতে যারা বিনা শুল্কে গত বছর ভ্যানটিলেশান, আইসিইউ, হাসপাতাল সরঞ্জাম আমদানি করেছেন। করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে সেইসব যন্ত্রপাতি গেল কোথায়। সরকারে উচিত হবে স্বাস্থ্যখাতে আরো গভীরভাবে নজর দেয়ার। আগামী বাজেটে এই সুযোগ সন্ধানিরা আবারো শুল্কফাঁকির সুযোগ নিতে পারে। সরকারের এমন পলিসি থাকা দরকার কাদের, কোথায় কত শুল্ক ছাড় দেয়া হচ্ছে। এগুলোর মনিটরিং করা। না হলে অতিমারিকে সুযোগ হিসাবে নিয়ে অনেকে আঙ্গুল পুলে কলাগাছ হয়ে উঠবেন। দেশে স্বাস্থ্য সেবার উন্নতি না হলে করোনা মোকাবেলা করা সম্ভব হবে না। এরজন্য আগামী বাজেটে প্রয়োজন হবে বিপুল অর্থের। কিন্তু দেশের অর্থনীতির যে অবস্থা তাতে মানুষের আয় নাই কর দিকে কোত্থেকে। আমার দোকানপাট খোলা নাই ক্রয় বিক্রয় নাই ভ্যাট দিবে কোত্থেকে। সব মিলিয়ে আগামীতে রাজস্ব বাজেট রিভাইজ করার পরেও সরকারের ঘাটতি থাকবে। তিনি মনে করেন, এই ঘাটতি কাটাতে করদাতাদের উপর চাপ না দিয়ে ঋণ করে মেটানোই সবচেয়ে ভাল পদ্ধতি হবে।