২৪ ঘণ্টায় করোনায় মৃত্যু ৯৫, শনাক্ত ৪২৮০ জন নতুন ধরন ও মিউটেশনে দেশে সংক্রমণ ছড়াচ্ছে
নিজস্ব প্রতিবেদক : নতুন ধরন ও মিউটেশন দেশে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ছড়াচ্ছে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদফতর। বুধবার কোভিড-১৯ পরিস্থিতি নিয়ে স্বাস্থ্য অধিদফতর আয়োজিত ভার্চুয়াল স্বাস্থ্য বুলেটিনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মুখপাত্র ডা. মোহাম্মদ রোবেদ আমিন বলেন, করোনার দ্বিতীয় ঢেউ পার করছে দেশ। সংক্রমণ ও মৃত্যু বেড়েছে। করোনার নতুন ধরন ও মিউটেশনের কারণে এই ভাইরাস ছড়াচ্ছে। তিনি বলেন, করোনা আক্রান্ত রোগীদের জন্য সবচেয়ে জরুরি প্রয়োজন হলো অক্সিজেন সিলিন্ডার। সারাদেশে ২০/২৫ হাজার অক্সিজেন সিলিন্ডার ছড়িয়ে আছে।
রোবেদ আমিন বলেন, করোনা আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসায় নতুন করে যোগ হয়েছে ডিএনসিসি ডেডিকেটেড কোভিড-১৯ হাসপাতাল। হাসপাতালটিতে ইতোমধ্যে ১৩৮ জন চিকিৎসককে পদায়ন করা হয়েছে, যাদের মধ্যে ৩৮ জনই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক। পর্যায়ক্রমে আরও দেওয়া হবে। যারা নতুন করে আক্রান্ত হচ্ছেন, তারাই শুধু এই হাসপাতালে যাবেন। আর যারা ইতোমধ্যেই আক্রান্ত হয়ে কোথাও চিকিৎসাধীন, তারা এখানে এসে ভিড় জমাবেন না।
তিনি আরও বলেন, করোনায় যারা মারা যাচ্ছেন, তাদের অধিকাংশই বয়স্ক। আমরা প্রতিদিনের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখতে পাচ্ছি, ষাটোর্ধ্বরাই বেশি মৃত্যুবরণ করছে এবং তাদের মধ্যে ডায়াবেটিস ও হাইপারটেনশনের রোগীরাই বেশি। তবে করোনার নতুন যে ধরন এসেছে, তাতে তরুণরাও ব্যাপক হারে আক্রান্ত হচ্ছে। সুতরাং জটিল রোগে আক্রান্ত বা আক্রান্ত নয়, এটা দেখার কোনো সুযোগ নেই। সবাইকেই সচেতন হতে হবে। মাস্ক ও স্বাস্থ্যবিধিতে জোর দিতে হবে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এ মুখপাত্র বলেন, আমরা দেখতে পাচ্ছি সংক্রমণটা কমতে শুরু করেছে। তবে মৃত্যুটা বাড়ছে, যার কারণ কিছুদিন পূর্বে বেপরোয়া চলাচল। দেশে এখন কঠোর লকডাউন চলছে। আশা করছি আগামী দুই সপ্তাহ পরে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা কমে যাবে।
হাসপাতালে শয্যা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বিভিন্ন গণমাধ্যমে ছড়ানো হচ্ছে সরকারি হাসপাতালে শয্যা খালি নেই। এ তথ্যটি ভুল। দেশে এখনও ১২০০ শয্যা খালি রয়েছে। এমআইএসে যোগাযোগ করলেই কোন হাসপাতালে কতটি শয্যা, আইসিইউ ও আইসিইউ সমতুল্য শয্যা খালি আছে জানতে পারবেন। কেউ বিভ্রান্তি ছড়াবেন না। রোবেদ আমিন আরও বলেন, কোভিড চিকিৎসার জন্য আইসিইউ বেড আছে ১ হাজার পাঁচটি। ২৪৩টি বেড এখনও ফাঁকা। সব মিলিয়ে বেড সংখ্যা ১২ হাজার ১৩৯টি। এর মধ্যে রোগী ভর্তি আছে ৫ হাজার ৭৫৯টিতে। মোট বেড ফাঁকা আছে ৬ হাজার ৩৮০টি।
এদিকে দেশে করোনায় গত ২৪ ঘণ্টায় মারা গেছেন ৯৫ জন। আর ২৪ ঘণ্টায় শনাক্ত হয়েছে ৪ হাজার ২৮০ জন। বুধবার স্বাস্থ্য অধিদফতর থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়। এ নিয়ে এখন পর্যন্ত মৃত্যু ১০ হাজার ৬৮৩ জন এবং শনাক্ত ৭ লাখ ৩২ হাজার ৬০ জন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে ২৮ হাজার ৫৬১টি। অ্যান্টিজেন টেস্টসহ নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ২৮ হাজার ৪০৮টি। এখন পর্যন্ত ৫২ লাখ ৪৯ হাজার ৬৮৩টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন ৭ হাজার ৭২ জন, এখন পর্যন্ত সুস্থ ৬ লাখ ৩৫ হাজার ১৮৩ জন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর আরও জানায়, পরীক্ষা অনুযায়ী ২৪ ঘণ্টায় শনাক্তের হার ১৫ দশমিক ০৭ শতাংশ। এখন পর্যন্ত শনাক্তের হার ১৩ দশমিক ৯৪ শতাংশ। শনাক্ত বিবেচনায় প্রতি ১০০ জনে সুস্থ হয়েছে ৮৬ দশমিক ৭৭ শতাংশ এবং মারা গেছেন ১ দশমিক ৪৬ শতাংশ।
গত ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যুবরণকারীদের মধ্যে ৫৯ জন পুরুষ এবং নারী ৩৬ জন। এখন পর্যন্ত পুরুষ ৭ হাজার ৮৮৬ জন এবং নারী মৃত্যুবরণ করেছেন ২ হাজার ৭৯৭ জন।
বয়স বিশ্লেষণে দেখা যায় যায়, মৃতদের মধ্যে ৬০ বছরের বেশি বয়সী ৫৭ জন, ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে ২২ জন, ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে ১৩ জন এবং ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে ৩ জন মারা গেছেন। বিভাগ বিশ্লেষণে দেখা যায় মৃত্যুবরণকারীদের মধ্যে ঢাকা বিভাগেই মারা গেছেন ৫৮ জন, চট্টগ্রামে ১৭ জন, রাজশাহীতে ৮ জন, খুলনায় ৩ জন, বরিশালে ২ জন, সিলেটে ৩ জন, রংপুরে ৩ জন এবং ময়মনসিংহে ১ জন। ২৪ ঘণ্টায় সরকারী হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেছেন ৬০ জন, বেসরকারি হাসপাতালে মারা গেছেন ৩১ জন এবং বাড়িতে মারা গেছেন ৪ জন।
খরায় পুড়ছে খুলনার
(প্রথম পৃষ্ঠার পর) এ অবস্থা চলতে থাকলে সামনে এ অঞ্চলের কৃষি হুমকির মধ্যে পড়বে। খুলনা আঞ্চলিক আবহাওয়া অফিসের বরাতে তিনি জানান, খুলনা বিভাগের উপর দিয়ে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। দীর্ঘ খরার কারণে তাপমাত্রা বাড়ছে। গড়ে থাকছে ৩৮ ডিগ্রি থেকে ৪০ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড বা সেলসিয়াস।