মামুনুলের ব্যাংক হিসেবে সাড়ে ৬ কোটি টাকার লেনদেন হেফাজতের ৩১৩ অর্থদাতা চিহ্নিত
সুজন কৈরী : হেফাজতে ইসলামের অর্থের যোগানদাতা হিসেবে ৩১৩ জনকে চিহ্নিত করার কথা জানিয়েছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) অতিরিক্ত কমিশনার এ কে এম হাফিজ আক্তার।
মঙ্গলবার দুপুরে ডিএমপি সদর দপ্তরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত আমরা ৩১৩ জন ব্যক্তিকে শনাক্ত করেছি যারা হেফাজতকে বিভিন্ন সময় অর্থ দিয়েছে। হেফাজতে ইসলামের সদ্য বিলুপ্ত হওয়া কমিটির যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হকের দ্ুিট ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ৬ কোটি ৪৭ লাখ টাকা লেনদেনের হিসাব পাওয়া গেছে।
হেফাজতে ইসলামের প্রতিষ্ঠাতা আমির মাওলানা আল্লামা আহমদ শফীকে পদ থেকে সরিয়ে দিতে জুনায়েদ বাবুনগরীর বাসায় বৈঠক হয়েছিল বলে মামুনুল হক পুলিশকে জানিয়েছেন উল্লেখ করে এ কে এম হাফিজ আক্তার বলেন, হেফাজতে ইসলামের সদ্য বিলুপ্ত কমিটির আমির জুনায়েদ বাবুনগরীর ছেলের বিয়েতেই সাবেক আমির আল্লামা শফীকে সরিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা হয়।
ঐ বিয়ের অনুষ্ঠানে মামুনুল হক, জুনায়েদ আল হাবিবসহ কয়েকজন নেতার বৈঠক হয়। সেই বৈঠকে আল্লামা শফীকে সরিয়ে বাবুনগরীকে আমির করার পরিকল্পনা হয়। পরবর্তীতে হাটহাজারি মাদ্রাসায় বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে শফী অনুসারীদের মাদ্রাসা থেকে বিতাড়িত করে। গত ১৮ এপ্রিল রাজধানীর মোহাম্মদপুরের জামিয়া রাহমানিয়া মাদরাসা থেকে মামুনুল হককে গ্রেপ্তার করা হয়। মতিঝিল শাপলা চত্বরে ২০১৩ সালের ৫ মে হেফাজতের তা-ব ও চলতি বছরের ২৬ মার্চ বায়তুল মোকাররমের ঘটনার পৃথক দুই মামলায় বর্তমানে তিনি সাত দিনের রিমান্ডে আছেন।
এদিকে রাজধানীর মোহাম্মদপুরের একটি বাসা থেকে মামুনুল হকের কথিত দ্বিতীয় স্ত্রী জান্নাত আরা ঝর্নাকে উদ্ধার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ। ছেলে ও বাবার দায়ের করা জিডির প্রেক্ষিতে ঝর্ণাকে উদ্ধার করা হয়। ওই বাসাটি মামুনুল হকের বোন দিলরুবার বাসা বলে পুলিশ জানিয়েছে।
গত ১১ এপ্রিল জান্নাত আরা ঝর্নার বড় ছেলে আব্দুর রহমান জামি মাকে উদ্ধারের আবেদন জানিয়ে রাজধানীর পল্টন থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। এছাড়া মঙ্গলবার ঝর্নার বাবা মেয়েকে উদ্ধারের জন্য কলাবাগান থানায় আরেকটি সাধারণ ডায়েরি করেন। ঝর্ণাকে উদ্ধারের পর তার আইনগত অভিভাবকের কাছে হস্তান্তর করার কথা জানিয়েছে পুলিশ।
গত ৩ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জের রয়েল রিসোর্টে এক নারীসহ স্থানীয় লোকজনের হাতে আটক হওয়ার পর মামুনুল হক তাকে দ্বিতীয় স্ত্রী হিসেবে দাবি করেন। তবে বিয়ের কাবিননামা দেখাতে পারেননি তিনি। মামুনুলের দাবি, শরিয়তের বিধি মোতাবেক তিনি ঝর্ণা নামের ঐ নারীকে বিয়ে করেছিলেন। সম্পাদনা : ভিক্টর রোজারিও