আফ্রিকার তেল থেকে চোখ সরিয়েছে চীন, আগ্রহ খনিজে
সালেহ্ বিপ্লব : চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং জি গত জানুয়ারিতে ডেমোক্রেটিক রিপাবলিক অব কঙ্গো (ডিআরসি) সফর করেন। সে সময়ই আভাস পাওয়া যায়, আফ্রিকান দেশগুলোতে তেল উত্তোলনের বদলে খনিজ আহরণ খাতে ঋণ ও বিনিয়োগের কথা ভাবছে তার দেশ। বিশেষ করে কোবাল্ট, কপার এবং দুষ্পাপ্য খনিজ পদার্থের দিকে নজর পড়েছে চীনের। সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট
জানুয়ারিতে কিংশাসা সফরে ওয়াং জি আশ্বাস দিয়েছেন, সেন্ট্রাল আফ্রিকান দেশগুলোর কাছে ঋণ বাবদ পাওনা ২ কোটি ৮০ লাখ ডলার মওকুফ করবে চীন। সেই সঙ্গে কোভিড পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার জন্যে ১ লাখ ৭০ হাজার ডলার দেওয়া হবে সহায়তা হিসেবে।
তিনি জানান, চীন এখন থেকে কঙ্গোর অবকাঠামো খাতে বিনিয়োগ করবে। দেশটির প্রতি চীনের আগ্রহের আরেকটি বড়ো কারণ হচ্ছে, চীনের প্রস্তাবিত বেল্ট এন্ড রোড মহাপরিকল্পনায় ৪৫তম দেশ হিসেবে সই করেছে কঙ্গো। বিশ্বব্যাপী আন্তঃযোগাযোগ ও বাণিজ্য বৃদ্ধির লক্ষ্যে চীন এ উদ্যোগ নিয়েছে। গত দুই দশকে আফ্রিকায় চীন যে ঋণ দিয়েছে, তার বেশিরভাগ পেয়েছে অ্যাঙ্গোলা। বিশ্বের অনত্যম শীর্ষ তেল উত্তোলনকারী এ দেশটিতে সড়ক, জলবিদ্যুৎ ও বন্দর নির্মাণ খাতে এ ঋণ দেয়া হয় অপরিশোধিত তেলের বিনিময়ে।
চায়না আফ্রিকা রিসার্চ ইনস্টিটিউটের হিসেবে, ২০০০ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত অ্যাঙ্গোলা ডলার চীনা ঋণ পেয়েছে, যা গোটা আফ্রিকায় দেয়া ঋণের ৩০ শতাংশ।
অ্যাঙ্গোলার ক্রুড অয়েলের ৬৬ দশমিক ৯ শতাংশ যায় পৃথিবীর বৃহত্তম তেল আমদানিকারক দেশ চীনে। তবে মধ্যপ্রাচ্য থেকে এখন ক্রুড অয়েল পাওয়া যাচ্ছে বলে আফ্রিকার গুরুত্ব অনেকটাই কমেছে। কিন্তু অ্যাঙ্গোলায় রয়েছে খনিজ সম্পদের বিশাল সমাহার। আর এ কারণেই আফ্রিকার অন্যান্য দেশ ছেড়ে অ্যাঙ্গোলার দিকে বেশি মনোযোগী হবে চীন, আরইডিডি ইন্টেলিজেন্সের সিনিয়র অ্যানালিস্ট মার্ক বোলান্ড এক রিসার্চ পেপারে এ কথা বলেছেন।
কঙ্গো (ডিআরসি) হচ্ছে বিশ্বের বৃহত্তম কোবাল্ট উৎপাদনকারী দেশ। ইলেকট্রিক গাড়ির ব্যাটারি, স্মার্টফোন, ট্যাব ও ল্যাপটপ তৈরিতে মূল্যবান এ খনিজটি ব্যবহার হয়।
২০২০ সালে কঙ্গোর খনি থেকে উত্তোলিত কোবাল্টের পরিমাণ ছিলো ৯৫ হাজার টন। সম্পাদনা : ভিক্টর রোজারিও