অজুহাত তৈরি করে গার্মেন্টস মালিকদের প্রণোদনা চাওয়া নৈতিকতাবিরোধী
ড. আহমদ আল কবির
শাহিন হাওলাদার : রূপালি ব্যাংকের সাবেক এই চেয়ারম্যান আরও বলেন, গার্মেন্টস মালিকদের আবারও প্রণোদনা চাওয়া অযৌক্তিক, কোনোভাবেই তা কাম্য নয়। দেশের সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় এ ধরনের আবদার অন্যায়। মহামারিতে যখন প্রায় সবকিছু বন্ধ রাখা হয়েছে, তখনো শিল্পকারখানার কাজ চালিয়ে যাওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়েছে। হয়তো তাদের ব্যবসা-বাণিজ্যের পরিমাণ কমেছে, কিন্তু পুনরায় প্রণোদনা দেওয়ার কোনো পরিস্থিতি তৈরি হয়নি। বিভিন্ন সময়ে অজুহাত তৈরি করে প্রণোদনা চাওয়া নৈতিকতা বিবর্জিত কাজ। বরং মহামারিকালে গার্মেন্টস মালিকদের গরিব মানুষের পাশে দাঁড়ানো উচিত। যারা ধনী তাদেরও জাতীয় এই দুর্যোগে এগিয়ে আসা উচিত।
এ প্রতিবেদকের সঙ্গে আলাপে তিনি বলেন, এই মুহূর্তে সব থেকে বেশি প্রয়োজন করোনা নিয়ন্ত্রণ ও চিকিৎসা ব্যবস্থা উন্নত করা। আমরা এখন করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে আছি, তৃতীয় ঢেউ এলে অবস্থা ভয়াবহ হওয়া আশঙ্কা আছে। ফলে করোনা মোকাবেলায় সকল প্রস্তুতি আগে থেকেই নেওয়া উচিত। তৃতীয় ঢেউ বাংলাদেশে আসতে পারে, তা বিবেচনায় রেখেই আমাদের কাজ করতে হবে।
গার্মেন্টেসের একটি ক্ষুদ্র অংশ ব্যবসায় এমনিতেই খারাপ করছিলো। অন্যদের আংশিক সমস্যা হলেও বারবার প্রণোদনা চাওয়া অবিবেচনামূলক। জাতীয় অগ্রাধিকার চিহ্নিত করে এখন অক্সিজেন ও ভ্যাকসিনের সরবরাহ নিশ্চিত করা উচিত। পাশাপাশি জনগণকে সম্পৃক্ত করার জন্য ব্যাপক কর্মসূচি হাতে নিতে হবে। ভ্যাকসিন নেওয়ার জন্য মানুষকে উদ্ধুদ্ধ করা উচিত। কিছু মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, এটা সত্য। বিশেষ করে যাদের কাজ করতে দেওয়া হচ্ছে না। তবে জীবন-জীবিকার তাগিদে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের দোকান ইতোমধ্যে খুলে দেওয়া হয়েছে। দীর্ঘদিন যাবৎ রাজধানীর গণপরিবহন ও দূর-পাল্লার পরিবহন বন্ধ আছে, তাই শ্রমিকদের জন্য কিছু করা প্রয়োজন। কিন্তু বছরের পর বছর এক শ্রেণির লোক এসোসিয়েশনের নামে টাকা আদায় করেছে, তাদের সে টাকা কোথায় গেলো? এসোসিয়েশনের নামে তোলা টাকা শ্রমিকদের এই বিপদের দিনে দেওয়া হচ্ছে কিনা সে প্রশ্ন করা উচিত। যারা এসোসিয়েশনের নামে টাকা তোলেন, তাদের জবাবদিহিতার আওতায় নিয়ে আসতে হবে।
বাংলাদেশের জন্য ভালো খবর হলো, মন্দার এই সময়েও বোরো ফসল উঠে গেছে। সমাজিক নিরাপত্তা বলায় আরও বৃদ্ধি করতে হবে। গ্রামের মানুষ মোটামুটি ভালোই আছে। শহরের গরিব শ্রেণিকে কীভাবে বেশি করে প্রণোদনার আওতায় আনা যায়, সে ব্যবস্থা করতে হবে। অর্থনীতিকে সচল রাখতে হলে আমাদের প্রশিক্ষিত জনগোষ্ঠী গড়ে তুলতে হবে।