চলতি বছরের প্রথম তিন মাসে এসি বিক্রি বেড়েছে ২৫-৩০ শতাংশ
অর্থনীতি ডেস্ক : দেশে এয়ার কন্ডিশনারের উৎপাদক ও বিক্রেতারা বলছেন, চলতি বছরের প্রথম তিন মাসে এয়ার কন্ডিশনারের বিক্রি যেকোনো সময়ের তুলনায় ২৫-৩০ শতাংশ বেড়েছে। আর গত বছরের তুলনায় এ বিক্রি কয়েকগুণ বেশি। করোনা নিয়ে প্রচার ও দীর্ঘদিন কারখানা-মার্কেট বন্ধ থাকায় ২০২০ সালে বিক্রি কমে গেছে সব প্রতিষ্ঠানের।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, করোনার কারণে ‘নতুন স্বাভাবিক’ পরিস্থিতিতে হোম অফিসের প্রয়োজনীয়তা তৈরি হওয়ায় বাসা বাড়িতে এসি ব্যবহার করতে শুরু করেছে মানুষ। তাছাড়া দেশে মধ্যবিত্ত শ্রেণির উদ্ভব ঘটায় বেড়েছে এসি ব্যবহারের পরিমাণ।
দেশের ইলেকট্রিক বাজারের জায়ান্ট ওয়ালটন এয়ার কন্ডিশনারের বাজারেও শীর্ষ নেতৃত্বে। ওয়ালটন এসির সিইও তানভির রহমান সজিব বলেন, ২০১৯ সাল থেকে স্ট্যান্ডার্ড ধরে হিসাব করলে চলতি বছরের প্রথম তিন মাসে ৩০ শতাংশের বেশি প্রবৃদ্ধি রয়েছে। ২০২০ সালের সঙ্গে তুলনা করলে তা ১০০ শতাংশের বেশি।
আবহাওয়ার পরিবর্তন এবং দাম কমে যাওয়াও এসির বাজার বৃদ্ধির অন্যতম কারণ বলে মনে করছেন দেশের ভিতর বিদেশী ব্র্যান্ডের বৃহত্তম বিক্রেতা ইসকোয়ার ইলেকট্রনিক্স। প্রতিষ্ঠানটি যুক্তরাষ্ট্রের বিখ্যাত প্রতিষ্ঠান জেনারেল ইলেকট্রনিক্সের জেনারেল এয়ারকন্ডিশনার, জাপানের শার্প, ফিলিপসসহ বেশ কয়েকটি আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ডের পরিবেশক।
ইসকোয়ার ইলেকট্রনিক্সের চিফ মার্কেটিং অফিসার মনজুরুল করিম বলেন, করোনার প্রথম আক্রমণের পর মানুষের মধ্যে এক ধরনের ভীতি তৈরি হয়। মার্কেটেও বন্ধ থাকে। ফলে ওই সময় বিক্রি কমে। তবে এ বছর সাধারণ সময়ের তুলনায় বিক্রি অন্তত ৩০-৩৫ শতাংশ বেড়েছে।
এক সময় এয়ার কন্ডিশনার বা শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্র বিলাসিতা হলেও এখন উচ্চ-মধ্যবিত্তের ঘরে ঘরে এসি। এসি ও কুলার কেনার হিড়িক দেখা যায় রাজধানীতে। শীতাতপ সুবিধা ছাড়া শহরে গাড়ি, দোকান, সিনেমা হল, হোটেল, রেস্তোরাঁ কল্পনাই করা যায় না এখন। এর সঙ্গে বাড়তি যোগ হয়েছে ‘ওয়ার্ক ফ্রম হোম’ পরিস্থিতি।
এয়ার কন্ডিশনার উৎপাদকদের তথ্যমতে, বছরে ১৫ শতাংশের বেশি প্রবৃদ্ধি নিয়ে ২০১৯ সালে দেশে এসি বিক্রি হয়েছিল ৪.৫ লাখ ইউনিট। টাকার অংকে যা ৫০০০ কোটি টাকারও বেশি।
করোনা মহামারিতে দীর্ঘদিন কারখানার উৎপাদন ও বাজারজাতকরণ বন্ধ থাকায় ২০২০ সালে তা ৩ লাখ ইউনিটের নিচে নেমে আসে। তবে বিপুল চাহিদা তৈরি হওয়ায় ২০২১ সালে এ বাজার ৬ লাখ ইউনিট ছাড়িয়ে যেতে পারে বলে ধারণা করছে তারা।
দশ বছর আগেও জেনারেল, হিটাচি, প্যানাসোনিক, সিঙ্গার, স্যামসাং এবং এলজি’র মতো বিদেশি ব্র্যান্ডের এসি আমদানির মাধ্যমে বাজারে যোগান দেয়া হতো। এখন বাজারে ৩০ শতাংশের বেশি দখলে নিয়েছে ওয়ালটন। দেশে উৎপাদন করা হচ্ছে স্যামসাং, মাই ওয়ান, ইউনিটেক, ট্রান্সকম ডিজিটাল, ভিশন, যমুনা এবং বাটারফ্লাই এর এয়ার কন্ডিশনার।
অন্যদিকে অ্যাসেম্বিংসহ এখন মাত্র ৩৫ শতাংশের মতো এসি বিদেশ থেকে আমদানি হয়।
মূলত উৎপাদনে ভ্যাটছাড়ের কারণে দেশেই সব ব্র্যান্ড এসি উৎপাদনে মনোযোগী হয়েছে বলে মনে করছেন ফেয়ার গ্রুপের চিফ মার্কেটিং অফিসার মেসবাহ উদ্দিন আহমেদ। সম্প্রতি নরসিংদীতে স্যামসাংয়ের এয়ার কন্ডিশনারের কারখানা স্থাপন করেছে ফেয়ার ইলেকট্রনিক্স। সূত্র : টিবিএস বাংলা অনলাইন। সম্পাদনা : শোভন দত্ত, রেজা