ব্যস্ততা নেই চাঁপাইনবাবগঞ্জের দর্জিপাড়ায়
সাহাবুদ্দিন সনু : প্রতিবছর ঈদে চাঁপাইনবাবগঞ্জে দর্জিপাড়ার কারিগরদের দম ফেলার ফুরসত থাকতো না। এ সময় তারা ব্যস্ত সময় পার করতেন। পছন্দের পোশাক বানাতে দর্জির দোকানগুলোতে ভিড় জমতো আর দিনরাত চিরচেনা মেশিনের চাকা ঘুরার শব্দ শোনা যেত। মার্কেট ও দোকানপাট খুলে দেয়া হলেও তারা আশানরুপ অর্ডার পাচ্ছেন না।
দর্জিপাড়া ঘুরে দেখা যায়, প্রতিবছর রমজানের শুরু থেকেই ঈদুল ফিতরের নতুন কাপড় তৈরির ভিড় লেগে যেত দর্জিপাড়ায়। ঈদ যত এগিয়ে আসে দর্জিপাড়ার কারিগরদের ব্যস্ততাও ততই বাড়তে থাকে। কিন্তু এ বছর সেই চিরচেনা রূপের পরিবর্তন ঘটেছে করোনাভাইরাসের কারণে। করোনা কেড়ে নিয়েছে দর্জিপাড়ার কারিগরদের উপার্জন।
ঈদকে ঘিরে মালিক এবং কারিগররা এ সময়ের দিকে তাকিয়ে থাকেন। সারা বছর যত না কাজ হয়, তার চেয়ে বেশি কাজ রোজার ঈদকে ঘিরে। করোনার থাবায় অনেকেই হতাশায় পড়েছেন। প্রতিবছর শবেবরাতের পর থেকে পুরো রমজান মাসে দর্জিপাড়ায় মেশিনের চাকা অবিরাম গতিতে চলতে দেখা যেত। এসময় কারিগররাও বাড়তি আয়ও করতেন। এবার তাদেরকেও ভাবিয়ে তুলেছে, যেখানে পনের রমজানের পর ক্রেতাদের আর অর্ডার নিতেন না। এইবার পাল্টে গেছে দীর্ঘদিনের সেই চিত্র। তবে রোজার মধ্যভাগে দোকান খোলায় কারিগররা কিছুটা হলেও তাদের মধ্যে আশার সঞ্চার জেগেছে।
কেউ কেউ আশানুরূপ অর্ডার পেয়েছেন, আবার তেমন পাননি, এভাবেই চলছে দর্জিপাড়া। ইয়োর চয়েস টেইলার্সের মালিক সাদেকুল ইসলাম জানান, প্রতি বছর শবে বরাতের পর থেকে রমজানের শেষভাগ পর্যন্ত কাজের ধুম থাকতো। এবার সৌখিন গ্রাহকরা লকডাউনের আগেই অর্ডার দিয়েছিল।
ঈদের আর ১২ দিন বাকি, আরও কিছু অর্ডার পাওয়া যাবে। তাহলে কারিগরদের হতাশা দূর হবে। দর্জিরা জানান, দোকান খুলে দেয়ায় ক্রেতারা কেনাকাটা করছেন, তাদের বেশির ভাগই তৈরি পোশাকের দিকে ঝুঁকে পড়েছেন। এরপরেও যারা কাপড় তৈরির জন্য দর্জির দোকানে যাচ্ছেন, তাদের সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে কাপড় ডেলিভারি দেয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। এছাড়াও সুতাসহ সব সরঞ্জামের দাম বেড়ে যাওয়ায় পোশাক তৈরির খরচ আগের মতই রয়ে গেছে।
জেলা দর্জিকারিগর সমিতির সাধারণ সম্পাদক ইমাম হোসেন জানান, টেইলার্সের মালিকরা এবার প্রত্যাশিত অর্ডার না পাওয়ায় কারিগররা হতাশায় ভুগছেন। যৎসামান্য আয় করে এখন খরচের মাত্রা বেড়ে যাওয়ায় প্রতিনিয়তই তারা হিমশিম খাচ্ছেন। সম্পাদনা : ভিক্টর রোজারিও