এবারের বাজেটে মন্ত্রণালয়-বিভাগের জন্য থাকছে না থোক বরাদ্দ
সোহেল রহমান : সাধারণভাবে আগামী অর্থবছরের বাজেটে মন্ত্রণালয়/ বিভাগ ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য কোনও থোক বরাদ্দ থাকছে না। মন্ত্রণালয়/ বিভাগ ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠানগুলোকে এমনভাবে বাজেট প্রাক্কলন করতে হবে- যাতে মধ্যমেয়াদী কৌশলগত উদ্দেশ্য ও অষ্টম-পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা (২০২০-২৫) ও দ্বিতীয় প্রেক্ষিত পরিকল্পনায় (২০২১-৪১) অন্তর্ভূক্ত সরকারের নীতি ও অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে কার্যক্রম পরিকল্পনা এবং মধ্যমেয়াদী লক্ষ্যমাত্রাগুলো অর্জন করা সক্ষম হয়; যাতে দারিদ্র্য নিরসনে বরাদ্দ বাড়ে এবং দরিদ্র জনগোষ্ঠীকে প্রদেয় সেবার মান ও পরিমাণ বাড়ে; বাজেট প্রাক্কলনে জিডিপি প্রবৃদ্ধির সঙ্গে ব্যয় বৃদ্ধির সামঞ্জস্য থাকতে হবে এবং বাজেট বরাদ্দের সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে।
সম্মত বাজেট কাঠামোর আওতায় সকল মন্ত্রণালয়/ বিভাগ ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠানগুলোকে আগামী ২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেট প্রাক্কলন এবং ২০২২-২৩ ও ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রক্ষেপন প্রণয়নে এসব নির্দেশনা দিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ।
সকল মন্ত্রণালয়/ বিভাগ ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠানগুলোকে তাদের নিজ নিজ বাজেট প্রাক্কলন ও প্রক্ষেপণ আগামী ৯ মে অর্থ বিভাগে পাঠাতে বলা হয়েছে।
অর্থ বিভাগ-এর নির্দেশনায় মন্ত্রণালয়/ বিভাগ ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠানগুলোর বাজেট প্রাক্কলন ও প্রক্ষেপণে রাজস্ব ও প্রাপ্তির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ এবং ব্যয়সীমা সংশোধন/ পুনর্নির্ধারণে তিনটি বিষয় বিবেচনায় রাখতে বলা হয়েছে। এগুলো হচ্ছে- সরকারের কৌশলগত উদ্দেশ্য অর্জনে সহায়ক হয় সে ধরনের সুনির্দিষ্ট কার্যক্রমের বিপরীতে অর্থ বরাদ্দ দিতে হবে। তবে সাধারণভাবে বাজেটে কোনও প্রকার থোক বরাদ্দের প্রস্তাব করা যাবে না।
অন্যদিকে সাধারণভাবে ব্যয়সীমার অতিরিক্ত বরাদ্দের কোনও প্রস্তাব করা যাবে না। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়/ বিভাগ ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য অর্থ বিভাগে অনুষ্ঠিত ত্রি-পক্ষীয় সভার আলোচনার ভিত্তিতে যে ব্যয়সীমা নির্ধারণ করা হয়েছে, সেটাই সর্বোচ্চ বরাদ্দ এবং এ বরাদ্দ বাড়ানোর কোনও অবকাশ থাকবে না।
সরকারি অনুদানে পরিচালিত স্বায়ত্তশাসিত সংস্থাগুলোকে বরাদ্দ নির্ধারণের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট সংস্থার চলতি অর্থবছরের নিজস্ব আয় ও আয়ের উৎস/ আইটেমগুলো পর্যালোচনা করতে হবে। ত্রি-পক্ষীয় সভায় সম্মত প্রাক্কলিত ও প্রক্ষেপিত আয় সংশ্লিষ্ট অর্থবছরে দেখাতে হবে। নিজস্ব আয়ের অর্থ বাদ দিয়ে সংশ্লিষ্ট সংস্থার জন্য ব্যয়সীমা/ সরকারি অনুদানের পরিমাণ নির্ধারণ করে তার ভিত্তিতেই প্রদত্ত অর্থনৈতিক কোড অনুযায়ী বাজেট প্রাক্কলন ও প্রক্ষেপণ প্রণয়ন করতে হবে।
অন্যদিকে সরকারি অনুদান প্রাপ্ত বেসরকারি সংস্থাগুলোর ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব আয়ের পরিমাণ বিবেচনায় নিয়ে ব্যয়সীমা নির্ধারণ করতে হবে এবং সরকারি অনুদানের পরিমাণ ন্যূনতম পর্যায়ে রেখে তার ভিত্তিতেই বিস্তারিতভাবে বাজেট প্রাক্কলন প্রক্ষেপণ করতে হবে।
অর্থ বিভাগ জানায়, চলমান করোনা মহামারির দ্বিতীয় ঢেউয়ের মধ্যেই আগামী অর্থবছরের বাজেট প্রণয়নের কাজ চলছে। সকল মন্ত্রণালয়/ বিভাগ ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠান কর্তৃক প্রণীত বাজেট কাঠামো ইতিমধ্যে অর্থ বিভাগ, পরিকল্পনা কমিশন ও সংশ্লিষ্ট সকল মন্ত্রণালয়/ বিভাগ ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে অনুষ্ঠিত ত্রি-পক্ষীয় সভায় পর্যালোচনা করা হয়েছে এবং ঐ সভার পর্যবেক্ষণের আলোকে একটি সম্মত বাজেট কাঠামো প্রণয়নের কাজ চলমান রয়েছে। মধ্য মেয়াদী বাজেট কাঠামো পদ্ধতিতে বাজেট প্রণয়নের দ্বিতীয় পর্যায়ে মন্ত্রণালয়/ বিভাগ ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠানগুলোকে ত্রি-পক্ষীয় সভায় সম্মত রাজস্ব ও প্রাপ্তির লক্ষ্যমাত্রা এবং ব্যয়সীমার আলোকে বিস্তারিত বাজেট প্রাক্কলন ও প্রক্ষেপণ এবং প্রয়োজনে সংশোধন/ পুনর্নির্ধারণ করতে হবে। সম্পাদনা : প্রিয়াংকা