কামরাঙ্গীরচরে জাল টাকার কারখানার সন্ধান
সুজন কৈরী : রাজধানীর কামরাঙ্গীরচরে জাল টাকার একটি কারখানার সন্ধান পেয়েছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা গুলশান বিভাগ। রোববার কারখানায় অভিযান চালিয়ে নারীসহ চক্রের চার সদস্যকে আটক করা হয়েছে। তারা হলেন- জীবন, পিয়াস, ইমাম হোসেন এবং ভিদে। তাদের কাছ থেকে ৪৬ লাখ জাল টাকা ও তা তৈরিতে ব্যবহৃত দুটি ল্যাপটপ, দুটি প্রিন্টার, হিট মেশিন, বিভিন্ন ধরনের স্ক্রিন, ডাইস, জাল টাকার নিরাপত্তা সূতা, বিভিন্ন ধরনের কালি, আঠা এবং স্কেল কাটারসহ বিভিন্ন সামগ্রী উদ্ধার করা হয়েছে।
পুলিশ বলছে, উদ্ধার সরঞ্জাম দিয়ে কম করে হলেও দেড় কোটি জাল টাকা তৈরি করা সম্ভব হতো। চক্রের মূল হোতা জীবন ইতোপূর্বেও জাল টাকা তৈরির অপরাধে একাধিকবার গ্রেপ্তার হয়ে জেল খেটেছে। কিন্ত বের হয়ে আবারও একই কাজে নিয়োজিত হয়েছে।
গোয়েন্দা পুলিশের সূত্র জানায়, গোয়েন্দা গুলশান বিভাগ কামরাঙ্গীরচরের নোয়াগাঁও এলাকায় অভিযান চালিয়ে জাল টাকার একটি মিনি কারখানা আবিষ্কার করে। এ সময় চারজনকে আটক করা হয়।
পুলিশ জানায়, লকডাউন একটা সহনশীল পর্যায়ে চলায় এবং রাজধানীরসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বিপণিবিতান, দোকানপাট খুলে দেওয়ায় এবং ক্রমান্বয়ে ক্রেতাসাধারণের ভিড় দেখা যাওয়ায় জাল টাকা তৈরি করার কাজগুলো চক্রটি জোরেসোরে শুরু করেছে। প্রথমদিকে তারা সাভারের গেন্দা এলাকায় জাল টাকা তৈরি করলেও আসন্ন ঈদকে কেন্দ্র করে গত তিন মাস ধরে কামরাঙ্গীরচরে জাল টাকা তৈরির ব্যবসা শুরু করে।
পুলিশ আরও জানায়, আটক জীবন পাইকারি বিক্রেতার কাছে প্রতি লাখ জাল টাকা বিক্রি করতেন ১০ থেকে ১২ হাজার টাকায়। পাইকারি বিক্রেতারা খুচরা বিক্রেতার কাছে বিক্রি করতেন ১৪ থেকে ১৬ হাজার টাকায়।
ডিএমপির গোয়েন্দা গুলশান বিভাগের উপ কমিশনার মশিউর রহমান বলেন, আটকদের মধ্যে পিয়াস ও ইমাম বরিশাল পলিটেকনিকেল থেকে নেটওয়ার্ক ইঞ্জিনিয়ারিং ও কম্পিউটার সাইন্স বিষয়ে ডিপ্লোমা অর্জন করেছেন। এর আগে তিনি গ্রামীণফোনে নেটওয়ার্ক ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে কাজ করতেন। আটক অপর আসামি ভিদেও বরিশাল সরকারি পলিটেকনিকেল কলেজ থেকে পাওয়ারের উপর ডিপ্লোমা করেছেন। বেশি টাকার লোভে তিনিও বৈধ চাকরি ছেড়ে জাল টাকা তৈরির অবৈধ কাজে যোগ দেন। এই দুই ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারের তৈরি জাল টাকার কোয়ালিটি যথেষ্ট উন্নত।
আসন্ন ঈদকে কেন্দ্র করে জাল টাকা তৈরি করার বড় ধরনের পরিকল্পনা ছিল তাদের। আটকদের বিরুদ্ধে ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা করা হবে। সম্পাদনা : ভিক্টর রোজারিও