আমার দেশ • নগর সংস্করণ • প্রথম পাতা • লিড ২
৭ রেস্টুরেন্ট নির্মাণে কাটা হচ্ছে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের শতাধিক গাছ
মো. আখতারুজ্জামান : রাজধানীর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বিভিন্ন স্থানে সাতটি রেস্টুরেন্ট ও রাস্তা নির্মাণকাজ করতে বেশ কিছু গাছ কাটা হচ্ছে। রেস্টুরেন্ট স্থাপনার পাশাপাশি ওয়াকওয়ে তৈরির জন্যও চলছে মাটি খোঁড়াখুঁড়ি। এটি করতেও কাটা পড়ছে শতাধিক গাছ। উদ্যানের বিভিন্ন স্পটে পড়ে থাকা বড় বড় গাছের গুড়ি জানান দেয়, কী অত্যাচারই না করা হয়েছে উদ্যানের উপর।
বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা)-এর সাধারণ সম্পাদক শরীফ জামিল জানান, সরকার যদি পরিকল্পিতভাবে এটা করতো তাহলে যারা স্টেকহোল্ডার তাদের সঙ্গে আলোচনা করেই করতো। আর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের মতো গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় এমন একটি সিদ্ধান্ত নিলো অথচ কোনও ধরনের আলোচনা করলো না। এমন কাজ করতে হলে সরকারের উচিৎ হবে যাদের জানার অধিকার আছে তাদেরকে জানিয়ে এবং তাদের সঙ্গে আলোচনা করে করা।
তিনি আরও জানান, একটি গাছ কেটে আর একটি গাছ লাগালে কেটে ফেলা গাছের অভাব পূরণ হয় না। কারণ এ গাছকে কেন্দ্র করেই গড়ে ওঠে জীববৈচিত্র্য। রেস্তোরাঁ ও রাস্তা নির্মাণে উদ্যানের ৫০ বছরেরও বেশি পুরানো গাছ কেটে ফেলা হচ্ছে। যার ফলে একদিকে আশ্রয় হারাচ্ছে পশু-পাখি। অন্যদিকে জনজীবনেও এর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বলে জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। তীব্র দাবদাহে অতিষ্ঠ নগরবাসী যখন দুষছেন সবুজায়নের অভাবকে ঠিক তখনই গাছ কেটে উজাড় করা হচ্ছে ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে।
উদ্যানটিতে ঢুকলেই দেখা মেলে মাটি আঁকড়ে পড়ে থাকা কাটা গাছের গুঁড়ি আর কাটার জন্য চিহ্নিত করা গগণচুম্বী সব গাছ। গত ১০-১৫ দিনে গণপূর্ত অধিদপ্তরের আওতায় এখানকার প্রায় শতাধিক গাছ কাটা হয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন এ উদ্যানে রোজ যাতায়াত শিক্ষার্থীদের। এরই মধ্যে গাছ নিধনের বিরুদ্ধে শৈল্পিক প্রতিবাদ করেছেন একদল শিক্ষার্থী। কাটা গাছের স্থানে বানিয়েছেন প্রতীকী পাখির বাসা।
নগর পরিকল্পনাবিদ স্থপতি ইকবাল হাবিব বলেন, রাজধানীতে পরিবেশের ফুসফুসের ভূমিকা পালন করছে যে কয়েকটি উদ্যান তার মধ্যে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান অন্যতম। সেই উদ্যানের গাছ কেছে রেস্টুরেন্ট তৈরি করা হবে পরিবেশের জন্য বড় ক্ষতি। যারা পরিবেশের এমন ক্ষতি করে এ উদ্যানের গাছ কাটছে তাদেরকে আইনের আওতায় নিয়ে আসার দাবি করেন তিনি।
তিনি বলেন, আমরা ঢাকা শহরে গাছ লাগানোর জায়গা বাড়াতে পারছি না। তারপরেও আমরা অবিরাম গাছ কেটে যাচ্ছি।
ইকবাল বলেন, পরিবেশের ক্ষতি করে তো আমরা উন্নয়ন করতে পারি না। যদি করতেই হয় সেটা সঠিক পরিকল্পনা এবং বিকল্প উপায় কি হতে পারে তা জনগণকে জানিয়ে করার দাবি জানান। সম্পাদনা : ভিক্টর রোজারিও