টানা তৃতীয় মেয়াদে মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিলেন মমতা
কেএম নাহিদ : ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে টানা তৃতীয়বারের মতো শপথ নিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বুধবার স্থানীয় সময় সকাল পৌনে ১১টায় কলকাতার রাজভবনে শপথ নেন তিনি। রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড় মমতাকে মুখ্যমন্ত্রী পদে শপথ পাঠ করান।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলো বলছে, বুধবার স্থানীয় সময় সকাল সোয়া দশটার দিকে তৃতীয় বারের জন্য মুখ্যমন্ত্রী পদে শপথ নিতে কলকাতায় নিজের কালীঘাটের বাড়ি থেকে বের হন মমতা। বরাবরের মতো এসময় তিনি সাদা শাড়ি এবং হাওয়াই চপল পরে ছিলেন। পরে সাড়ে ১০টার দিকে তিনি রাজভবনে পৌঁছে যান। সেখানেই মমতাকে শপথ বাক্য পাঠ করান রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। গত ২৭ মার্চ থেকে ২৯ এপ্রিল পর্যন্ত মোট আট দফায় পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা নির্বাচনের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে ২৯৪টি আসনের মধ্যে তৃণমূল জয়ী হয়েছে ২১৩টি আসনে। বিজেপি জয় পেয়েছে ৭৭টিতে।
করোনা পরিস্থিতির কারণে ২০১১ ও ২০১৬ সালের মতো এবার শপথগ্রহণ অনুষ্ঠান বড় আয়োজন করা হয়নি। ২০১১ সালে প্রথমবার মুখ্যমন্ত্রীর শপথ গ্রহণের সময় এসেছিলেন তৎকালীন কংগ্রেস সরকারের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পি চিদম্বরম। রাজভবনের ভেতরে বিরাট মঞ্চ তৈরি করে বিশাল জনসমাগমের মাধ্যমে শপথগ্রহণ অনুষ্ঠান হয়েছিল।
দ্বিতীয়বার মমতার শপথ হয়েছিল রেড রোডে। সেবার আবার দেশের বিজেপি বিরোধী সব নেতাদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। কিন্তু কোভিড সংক্রমণের কারণে বিশাল জয়লাভের পরও বিশাল আয়োজনের ব্যাপারে সব পরিকল্পনা বাতিল করতে হয়েছে।
২০১১ সালের মতোই এবারও বিধায়ক না হয়েই মুখ্যমন্ত্রী পদে শপথ নিলেন মমতা। কারণ, নন্দীগ্রাম থেকে দাঁড়িয়ে শুভেন্দু অধিকারীর কাছে পরাজিত হয়েছেন তিনি। যদিও, সেই ফলাফল নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে তৃণমূল।
এবারের বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির ‘সাম্প্রদায়িক অপরাজনীতির’ বিরুদ্ধে জেতা মমতা এমন পরিস্থিতিতে শপথ নিলেন যেখানে জয়ের পরে নানা সহিংসতায় অন্তত ১৪ জনের প্রাণহানি হয়েছে। নিহতদের মধ্যে তৃণমূল-বিজেপি দুই দলের নেতাকর্মী-সমর্থক আছেন। কোথাও কোথাও রাজনীতির এই সংঘাতে দেওয়া হচ্ছে সাম্প্রদায়িক রং। মমতা রাজ্যজুড়ে ভোটপরবর্তী রাজনৈতিক সংঘর্ষের দায়ও বিজেপির ওপর চাপিয়েছেন। বলেছেন, ভোটে ধর্মীয় মেরুকরণের চেষ্টা আগে থেকে করে আসছে বিজেপি। এর দায় মোদি-অমিত শাহর।
বিধানসভার ২৯৪ আসনের মধ্যে ২৯২টি আসনে ভোট হয়। প্রার্থী মারা যাওয়ায় দুই আসনে ভোট স্থগিত ছিল। ২৯২টি আসনের মধ্যে ২১৩টিতে জয় পেয়েছে মমতার তৃণমূল যা আগের বিধানসভা নির্বাচনের চেয়ে ২টি বেশি।
বিজেপি পেয়েছে ৭৭টি আসন যা আগের বিধানসভা নির্বাচনের চেয়ে ৭৪টি বেশি। কংগ্রেস ও বামপন্থী দলগুলো কোনো আসন পায়নি। সূত্র : বিডিনিউজ, ঢাকা পোস্ট, বাংলানিউজ। । সম্পাদনা : রেজা