প্রথম পাতা • লিড ৩ • শেষ পাতা
শ্বাসতন্ত্রের রোগীরা করোনা মহামারীতে বেশি ঝুঁকিতে রয়েছেন : ডা. আবু রায়হান
শাহীন খন্দকার : শ্যামলী ২৫০ শয্যা টিবি হাসপাতালের অতিরিক্ত পরিচালক ডা. আবু রায়হান বলেন, করোনা রোগীদের অধিকাংশের মধ্যেই ফুসফুস ও শ্বাসকষ্টজনিত জটিলতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। যারা করোনায় মৃত্যুবরণ করেছেন, তাদের বড় একটি অংশের ফুসফুসে তীব্র সংক্রমণ হয়েছিল।
তিনি জানান, গবেষণা বলছে, করোনা আক্রান্তদের মধ্যে ১২ শতাংশ রোগী অ্যাজমা ও শ্বাসকষ্টজনিত রোগে ভুগছিলেন। জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের অভিমত, এ ধরনের রোগীদের করোনায় আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি অনেক গুণ বেশি। মৃত্যুঝুঁকিও বেশি। সুতরাং অ্যাজমা ও শ্বাসকষ্টজনিত রোগীরা করোনা আক্রান্ত হলে দ্রুত হাসপাতালে ভর্তি হওয়া প্রয়োজন; অন্যথায় বড় বিপদ হতে পারে।
ডা. রায়হান বলেন, তাই যাদের অ্যাজমা আছে কিংবা জ্বরে আক্রান্ত তাদের করোনা হোক বা না হোক নিজস্ব তত্ত্বাবধানে কোয়ারেন্টাইনে থাকা প্রয়োজন।
তিনি আরও বলেন, তাদের বাড়ির বাইরে যাওয়া বন্ধ রাখতে হবে। অ্যাজমা ও শ্বাসকষ্টের রোগী করোনা আক্রান্ত হলে হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে। যেসব হাসপাতালে হাইফ্লো ন্যাজাল ক্যানোলা, আইসিইউ ও ভেন্টিলেটর সুবিধা আছে, এসব হাসপাতালে ভর্তি হতে হবে।
ডা. আবু রায়হান জানান, টেলিহেলথ সেন্টার নামে একটি প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশে করোনার সংক্রমণ ও মৃত্যু নিয়ে একটি গবেষণা করেছে। গত বছরের ১৫ জুলাই থেকে ৩০ আগস্ট পর্যন্ত ৪৫ দিনের তথ্য বিশ্নেষণ করে প্রতিষ্ঠানটি একটি প্রতিবেদন তৈরি করেছে। এতে বলা হয়, করোনা আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে আগে থেকে ৩৬ শতাংশ উচ্চ রক্তচাপ, ৩৬ শতাংশ ডায়াবেটিস, অ্যাজমায় ১২ শতাংশ, হৃদরোগজনিত সমস্যায় ৪ শতাংশ, কিডনি সমস্যা ৩ শতাংশ এবং ৯ শতাংশ রোগী অন্যান্য রোগে ভুগছিলেন।
আইসিইউতে ভর্তি হওয়া রোগীদের মধ্যে অ্যাজমা, হাঁপানি, শ্বাসকষ্টের পাশাপাশি অ্যাকিউট রেসপিরেটরি ডিসট্রেস সিন্ড্রোম (এআরডিএস) আক্রান্ত ছিলেন অনেকে। এ জন্য তাদের আইসিইউ সাপোর্ট দিতে হয়েছিল। তাদের মধ্যে কেউ সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন। আবার কাউকে কাউকে বাঁচানো সম্ভব হয়নি।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, বিশ্বের প্রায় ৩০ কোটি মানুষ অ্যাজমায় ভুগছে। বাংলাদেশে ৭ শতাংশ মানুষ অ্যাজমায় আক্রান্ত। বাংলাদেশ লাং ফাউন্ডেশনের ২০১০ সালে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে দেশে এক কোটি ১০ লাখ মানুষ অ্যাজমা রোগে আক্রান্ত বলে জানানো হয়।
এদিকে গ্লোবাল ইন ইনিশিয়েটিভ ফর অ্যাজমা (জিনা) তাদের ওয়েবসাইটে এক বিজ্ঞপ্তিতে করোনাকালে অ্যাজমা রোগীদের সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বনের পরামর্শ দিয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত এক বছরে অ্যাজমা ও শ্বাসকষ্টজনিত রোগে আক্রান্তদের সংখ্যা বেড়েছে। অ্যাজমা আক্রান্ত রোগীদের ইনহেলার এবং ওষুধ নিয়মিত ব্যবহার করতে হবে। শ্বাসকষ্ট বেড়ে গেলে অক্সিজেন থেরাপি নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। সম্পাদনা : রেজা