নগর সংস্করণ • প্রথম পাতা • লিড ১ • শেষ পাতা
স্বাস্থ্যবিধি মানতে অনীহা ২২ দিন পর সড়কে গণপরিবহন চিরচেনা রূপে রাজধানী
শোভন দত্ত : স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার শর্তে গণপরিবহন চালুর প্রথম দিনে রাজধানীর সড়কে বাসের সংখ্যা খুব বেশি না থাকলেও ব্যক্তিগত পরিবহনসহ অন্যান্য যানবাহনের সঙ্গে বাস যোগ হওয়ায় দেখা মিলেছে নিত্যকার যানজটের। মহামারী ঠেকাতে ‘সর্বাত্মক লকডাউনে’ টানা ২২ দিন বন্ধ থাকার পর বৃহস্পতিবার মহানগর ও জেলার মধ্যে গণপরিবহন চলাচল শুরু হয়েছে।
সকালে রাজধানীর রামপুরা, মালিবাগ, মগবাজার ও মোহাম্মদপুর থেকে বিভিন্ন গন্তব্যে যাতায়াত করা বাসগুলোতে যাত্রী সংখ্যা ছিল কম। এখান থেকে ছেড়ে যাওয়া বাসগুলোতে চালক, হেলপার এবং যাত্রীদের থুতনির নিচে থেকে যাচ্ছে মাস্ক। হরেক রকম অজুহাতে বেশিরভাগ চালক ও কন্ডাক্টর মুখ ডাকছেন না মাস্ক দিয়ে।
শিয়া মসজিদ-বনশ্রী রুটের আলিফ পরিবহন বাসের চালক আবদুল্লাহ বলেন, যাত্রী অহনও কম। আমাগো মাস্ক ছাড়া মানুষ উডাইতে মানা করছে। আমরা উডাইতেছি না। সেনিটাইজারও রাখছি।
দীপন পরিবহনের চালক মোশারফ বলেন, লকডাউনের কারণে আমাদের পরিবার নিয়ে চলতে অনেক সমস্যা হচ্ছিল। এখন আমরা বাস চালানোর সুযোগ পেয়েছি। স্বাস্থ্যবিধি মেনে আমরা যাত্রী পরিবহন করছি এবং করব।
সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী দুই সিটে একজন করে যাত্রী বসা দেখা গেছে দেখা গেছে বেশ কয়েকটি বাসে। সকাল থেকে যাত্রীর চাপ কিছুটা কম থাকায় পরিবহনের চালক ও হেলপাররা অতিরিক্ত যাত্রী ওঠানোর সুযোগ পাচ্ছেন না।
গণপরিবহন চালুর প্রথম দিনে আজিমপুর থেকে ঠিকানা পরিবহন, দেওয়ান পরিবহন ও ভিআইপি পরিবহনসহ কয়েকটি বাস সকাল থেকে বিভিন্ন গন্তব্যে ছেড়ে গেছে।
দেওয়ান পরিবহনের চালক আলাউদ্দিন বলেন, যাত্রী অনেক কম। হয়তো বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে যাত্রী পাব। তবে অর্ধেকের বেশি আসনে আমরা যাত্রী উঠাচ্ছি না এবং স্বাস্থ্যবিধি মানছি। তবে যাত্রীর সংখ্যা বাড়তে থাকলে সরকারের দেওয়া নির্দেশনা মানা হবে কি-না তা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ কছেন কেউ কেউ।
মোহাম্মদপুরে আলিফ পরিবহনের এক যাত্রী বলেন, ভাড়া বেশি নিলেও বাস চলাচল শুরু হওয়ায় আমাদের জন্য ভালোই হয়েছে। কিন্তু সামাজিক দূরত্ব বিধি কতক্ষণ এরা মানবে সেটা নিয়ে আমার সন্দেহ রয়েছে।
যাত্রী কম থাকায় আসন সংখ্যার অর্ধেক যাত্রী দেখা যাচ্ছে বলে মনে করেন মতিঝিলগামী কাজল মিয়া। তিনি বলেন, এখন মানুষ কম সেজন্যই হয়তো বাসে ফাঁকা ফাঁকা বসানো হচ্ছে। যাত্রী বাড়লে বাসের লোক নিয়ম মানবে বলে মনে হয় না।
মিরপুর দুয়ারিপাড়া বাসস্ট্যান্ড থেকে নিউ মার্কেট, আজিমপুর ও গুলিস্তানের উদ্দেশ্যে আশির্বাদ ও বিহঙ্গ বাস সার্ভিস ছেড়ে যেতে দেখা যায়। সকালে যাত্রী সংখ্যা কম থাকলে বেলা বাড়ার সঙ্গে সেটাও বেড়েছে।
গণপরিবহন চালু হওয়ায় অন্যদিনের চেয়ে বাস, প্রাইভেট কার, ট্রাক-কাভার্ড ভ্যান ও রিকশার সংখ্যা বেড়ে সকাল ৯টার দিকে রাজধানীর কাকরাইল, মালিবাগ, মৌচাক, রামপুরা, গুলশান সড়কে যানজট সৃষ্টি হয়।
গুলিস্তান থেকে গুলশানে আসা একটি বেসরকারি ব্যাংকের কর্মকর্তা বলেন, আমি জানতাম আজকে গণপরিবহন নামবে। সেজন্য সকাল সকালে বেরিয়েছি বাসা থেকে। কিন্তু যে অবস্থা দেখলাম পথে পথে যানজট। আমার গুলশানে আসতেই পাক্কা এক ঘণ্টা ১০ মিনিট সময় লেগেছে।
মহাখালীর সিএনজি চালক শামসু মিয়া বলেন, গত কয়েকদিন যাবতই রাস্তায় গাড়ি বেশি। আজকে সিটি সার্ভিস নামায় আমরা খুব বেকাদায় পড়েছি। মহাখালী থেকে গুলিস্তানে একজন যাত্রীকে নিয়ে গেছি দেড় ঘণ্টায়। সূত্র : বিডিনিউজ, বাংলানিউজ, জাগোনউিজ, সারাবাংলা। সম্পাদনা : রেজা