
ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশ কনসোর্টিয়ামের দূষণবিরোধী প্রকল্প উদ্বোধন নদী দূষণকারী শিল্পকারখানাকে শাস্তির আওতায় আনতে হবে : গওহর রিজভী

মো. আখতারুজ্জামান : প্রধানমন্ত্রীর আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ক উপদেষ্টা ড. গওহর রিজভী বলেন, নদীগুলোর বেশিরভাগ দূষণে জর্জরিত হয় শিল্পকারখানার মাধ্যমে। শিল্পকারখানাগুলো আবার অর্থনীতি আর উন্নয়নের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাই শিল্পকারখানাগুলোকে ইটিপি স্থাপন ও পরিচালনা করতে হবে নয়তো তাদেরকে শাস্তির আওতায় আনতে হবে।
গত বৃহস্পতিবার ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশ কনসোর্টিয়ামের দূষণবিরোধী অ্যাডভোকেসি প্রকল্পের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। অনুষ্ঠানটি অনলাইনে আয়োজন করা হয়।
গওহর রিজভী বলেন, যেকোন উদ্যোগের জন্য সরকার, ব্যক্তিখাত এবং এনজিওদের একত্রে কাজ করতে হয়। আর পরিবর্তনের লক্ষ্যে যেকোন অ্যাডভোকেসি কাজের জন্য এভিডেন্স বেজড ডাটা গুরুত্বপূর্ণ। এই প্রকল্পটি বিজ্ঞানভিত্তিক এভিডেন্স বেজড ডাটা নিয়ে কাজ করবে। আশা করি এই প্রকল্পটি পরিবেশ দূষণ রোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
তিনি আরও বলেন, পরিবেশ সংরক্ষণ বাংলাদেশ সরকারের অন্যতম একটি অগ্রাধিকার। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সবসময় বলে থাকেন, আমরা সবাই নদীর সন্তান। নদী বাঁচলে আমরা বাঁচবো।
ইউএসএআইডি ও এফডিসিও’র আর্থিক সহযোগিতায় কাউন্টারপার্ট ইন্টারন্যাশনাল এর পরামর্শে ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশ কনসোর্টিয়াম পরিচালিত এই দূষণবিরোধী প্রকল্পের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. গওহর রিজভী।
ঢাকা উত্তরের মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, প্রধানমন্ত্রী দুর্নীতির বিরুদ্ধে সদা সোচ্চার। ঢাকা শহরের পানি, বায়ু আর শব্দ দূষণের জন্য যে দুর্নীতিগুলো হয় সিটি কর্পোরেশন তার বিরুদ্ধে শাক্তিমূলক ব্যবস্থা নেবে। পানি দূষণ বন্ধে প্রত্যেককে এগিয়ে আসতে হবে। দূষণের সূত্রপাত যেখানে সেখানেই রোধ করতে হবে। বায়ু দূষণ রোধে গাছ লাগাতে হবে। গড়ে তুলতে হবে পরিবেশবান্ধব সুন্দর ঢাকা নগরী।
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন উপমন্ত্রী হাবিবুন নাহার বলেন, আমরা সবাই অধিকারের কথা বলি কিন্তু পরিবেশ রক্ষায় জনগণেরও যে দায়িত্ব রয়েছে তা আমরা ভুলে যাই। আমাদের চিন্তা ও মানসিকতায় পরিবর্তন আনতে হবে। পরিবেশ রক্ষায় একসাথে কাজ করতে হবে। যারা আইনভক্ত করবে তাদের বিরুদ্ধে শাক্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
দূষণবিরোধী শক্তিশালী প্রচেষ্টা বাস্তবায়নের উদ্দেশ্যে ইউএসএআইডি, এফসিডিও এবং কাউন্টারপার্ট ইন্টারন্যাশনালের সহায়তায় দূষণবিরোধী অ্যাডভোকেসি প্রকল্প বাস্তবায়নের লক্ষ্যে বিপিআই এর অন্তর্ভূক্ত সংগঠন ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগ এবং স্ট্যামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের বায়ুম-লীয় দূষণ অধ্যয়ন কেন্দধ (ক্যাপস) কে সাথে নিয়ে একটি কনসোর্টিয়াম গঠন করেছে। এই দূষণবিরোধী অ্যাডভোকেসি প্রকল্পটি ঢাকা শহরের বায়ু এবং শব্দ
দূষণসহ বুড়িগঙ্গা নদীতে নৌযান কতক দুষণ, ডাইং কারখানা কর্তৃক দূষণ এবং ট্যানারি দূষণ মোকাবেলায় ঢাকা শহরের শব্দ এবং বায়ু দূষণ নিয়ন্ত্রণে স্থানীয় জনগোষ্ঠী, সরকারি সংস্থা এবং উন্নয়ন সহযোগিদের সাথে নিয়ে একত্রে পরীবিক্ষণ এবং কার্যক্রম পরিচালনা করবে। বিপিআইএর চেয়ারপারসন সুলতানা কামাল বলেন, ঢাকার দূষণবিরোধী অ্যাডভোকেসি এ প্রকল্প বিভিন্ন অংশীজনের সাথে এভিডেন্সভিত্তিক অ্যাডভোকেসি করবে। পানি, বায়ু এবং শব্দদূষণের বিরুদ্ধে এই কার্যক্রমকে এগিয়ে নিয়ে সর্বোপরি বাংলাদেশের পরিবেশদূষণ কমিয়ে আনার মাধ্যমে জলবায়ু পরিবর্তনের স্থিতিস্থাপকতা বৃদ্ধিতে সকল অংশীজনকে হাতে হাত ধরে কাজ করার আহ্বান জানান।
আন্তর্জাতিক সংস্থা ওয়াটারকিপার অ্যালায়েন্সের নির্বাহী পরিচালক মার্ক ইয়াগি বলেন, সারা পৃথিবীতেই এখন সুপেয় পানির সংকট চলছে। পৃথিবীর মানুষ আজ খাবার পানির জন্য সংগ্রাম করছে।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি মেয়র আতিকুল ইসলাম এবং বন পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী হাবিবুন নাহার। আরও উপস্থিত ছিলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রেধর বাংলাদেশে নিযুক্ত ডেপুটি চিফ অব মিশন জো অ্যান ওয়্যাগনার, ফরেন কমনওয়েলথ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অফিস এর উন্নয়ন পরিচালক জুডিথ হারবার্টসন, ওয়াটারকিপার অ্যালায়েন্সের নির্বাহী পরিচালক মার্ক ইয়াগহি, স্ট্যামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশ এর উপাচার্য অধ্যাপক মোহাম্মদ আলী নকি প্রমূখ। সভাটি সঞ্চালনা করেন কনসোর্টিয়াম প্রধান এবং ব্লু প্যানেট ইনিশিয়েটিভ এর নির্বাহী পরিচালক শরীফ জামিল।
