দেশে করোনাভাইরাসের ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট শনাক্ত
শোভন দত্ত ও শিমুল মাহমুদ : দেশে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট (ধরন) শনাক্ত হয়েছে। এ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা বলেন, ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট নিয়ে আমরা উদ্বিগ্ন। সবাইকে এটি নিয়ে উদ্বিগ্ন হওয়া উচিত।
শনিবার বিকেল সাড়ে ৩টায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট নিয়ে এক জরুরি ব্রিফিংয় তিনি এসব কথা বলেন।
নাসিমা সুলতানা বলেন, ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট নিয়ে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এবং আইইডিসিআর আলাদাভাবে পরীক্ষা করেছে। দুই প্রতিষ্ঠানের পরীক্ষাতেই ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট ধরা পড়েছে।
রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালের একটি নমুনা পরীক্ষায় ভারতীয় এ স্ট্রেইন ধরা পড়েছে। যা জার্মানির গ্লোবাল ইনিশিয়েটিভ অন শেয়ারিং অল ইনফ্লুয়েঞ্জা ডাটাতে (জিএসআইডি) প্রকাশিত হয়েছে।
এ বিষয়ে আইডিসিআর জানায়, রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালের একটি নমুনা পরীক্ষায় এ ভারতীয় স্টেইন ধরা পড়েছে। যা জার্মানির গ্লোবাল ইনিশিয়েটিভ অন শেয়ারিং অল ইনফ্লুয়েঞ্জা ডাটাতে (জিএসআইডি) প্রকাশিত হয়েছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এবিএম খুরশীদ আলম জানান, দেশে ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট পাওয়া গেছে। এ ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্ত রোগীরা ভারত থেকে ফিরেছেন। তারা চিকিৎসার জন্য ভারতে গিয়েছিলেন এবং বর্তমানে যশোরে অবস্থান করছেন।
আইইডিসিআরের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা এ এস এম আলমগীর বলেন, এভারকেয়ার হাসপাতালে একটি নমুনা পাওয়া গেছে। সেটি আমি দেখেছি। ধরা পড়েছে বলেই এ ধরনের তথ্য তাদের ওয়েবসাইটে আপলোড করা হয়েছে।
সম্প্রতি জাতিসংঘের স্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়েছে, ভারতে প্রথম শনাক্ত ‘বি.১.১৬৭’ নামে করোনার ধরনটি বিশ্বের এক ডজনের বেশি দেশে পাওয়া গেছে। এমন দেশের সংখ্যা কমপক্ষে ১৭টির বেশি।
দেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ৪৫ জনের মৃত্যু হয়েছে । এ সময় নতুন করে ১ হাজার ২৮৫ জনের মধ্যে করোনার সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। আগের দিন শুক্রবার দেশে ১ হাজার ৬৮২ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছিল। আর মৃত্যু হয়েছিল ৩৭ জনের।
এ নিয়ে দেশে করোনায় আক্রান্ত হয়ে এখন পর্যন্ত মারা গেলেন ১১ হাজার ৮৭৮ জন। আর আক্রান্ত হয়েছেন মোট ৭ লাখ ৭২ হাজার ১২৭ জন। শনিবার বিকেলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পাঠানো বুলেটিন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।
গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন ২ হাজার ৪৯২ জন। এখন পর্যন্ত মোট সুস্থ হয়েছেন ৭ লাখ ৬ হাজার ৮৩৩ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় করোনার নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ১৪ হাজার ৭০৩টি। এর মধ্যে আক্রান্ত হয়েছেন ১ হাজার ২৮৫ জন। নমুনা পরীক্ষা বিবেচনায় আক্রান্তের হার ৮ দশমিক ৭৪ শতাংশ।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ঠিক করা মানদ- অনুযায়ী, কোনো দেশে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে কি না, তা বুঝতে পারার একটি নির্দেশক হলো রোগী শনাক্তের হার। কোনো দেশে টানা অন্তত দুই সপ্তাহের বেশি সময় পরীক্ষার বিপরীতে রোগী শনাক্তের হার ৫ শতাংশের নিচে থাকলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে বলে ধরা যায়। সম্পাদনা : রেজা