আমার দেশ • নগর সংস্করণ • প্রথম পাতা • লিড ৫
আগামী এডিপি ২ লাখ ২১ হাজার ৫৬০ কোটি টাকার , আকার বাড়ছে প্রায় ১৪% করোনায় এডিপি বাস্তবায়ন হার দশ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন
সোহেল রহমান : চলতি অর্থবছরের প্রথম দশ মাসে ‘বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি’ (এডিপি) বাস্তবায়নের হার দাঁড়িয়েছে ৪৬ দশমিক ৩৪ শতাংশ। যা গত দশ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন। করোনার প্রকোপের মধ্যে গত অর্থবছরে একই সময়ে এডিপি বাস্তবায়নের হার ছিল ৪৯ শতাংশ। এর আগে ২০১৮-১৯ অর্থবছরের দশ মাসে এডিপি বাস্তবায়নের হার ছিল ৫২ শতাংশ।
পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের আইএমইডি’র হিসাব মতে, আলোচ্য সময়ে (জুলাই ২০২০-এপ্রিল ২০২১) মোট এডিপি ব্যয় দাঁড়িয়েছে ৯৬ হাজার ৯৭৫ কোটি ৪০ লাখ টাকা।
চলতি অর্থবছরের মূল বাজেটে এডিপি’র আকার ছিল ২ লাখ ৫ হাজার ১৪৫ কোটি টাকা। সম্প্রতি ৭ হাজার ৫০২ কোটি টাকা কমিয়ে সংশোধিত এডিপি’র আকার নির্ধারণ করা হয়েছে ১ লাখ ৯৭ হাজার ৬৪৩ কোটি টাকা। এমতাবস্থায়, সংশোধিত এডিপি বাস্তবায়নের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে হলে চলতি মে ও আগামী জুনে মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলোকে ১ লাখ ৬৬৭ কোটি ৬০ লাখ টাকা ব্যয় করতে হবে। যা কোনোভাবেই সম্ভব নয় বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
আইএমইডি’র তথ্য পর্যালোচনায় দেখা যায়, গত এক দশকে অর্থবছরের প্রথম ১০ মাসে কোনো বছরই এত বেশি অর্থ অব্যয়িত থাকেনি। ২০১০-১১ থেকে শুরু করে ২০১৪-১৫ অর্থবছর পর্যন্ত প্রথম ১০ মাসে প্রতিবছর ৫৬ থেকে ৫৮ শতাংশ এডিপি বাস্তবায়ন হয়েছে।
এদিকে মহামারীকালে আগামী ২০২১-২২ অর্থবছরের জন্য প্রাথমিকভাবে ২ লাখ ২১ হাজার ৫৬০ কোটি টাকা এডিপি প্রাক্কলন করা হয়েছে। এটি চলতি অর্থবছরের সংশোধিত এডিপি’র চেয়ে প্রায় ১৪ শতাংশ বেশি। এর মধ্যে সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে ১ লাখ ৩৩ হাজার ৮৫৯ কোটি ৯১ লাখ টাকা এবং বৈদেশিক ঋণ সহায়তা থেকে ৮৭ হাজার ৭০০ কোটি ৪৪ লাখ টাকা ব্যয় করা হবে।
পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, চলতি অর্থবছর পর্যন্ত দেশের সব উন্নয়ন কর্মকা-কে ১৭টি খাতে ভাগ করে বরাদ্দ দেয়া হত। এবার তা ১৫টিতে নামিয়ে এনে খাতভিত্তিক বরাদ্দের প্রস্তাব তৈরি করা হয়েছে।
জানা যায়, প্রতিবছরের মত এবারও সড়ক যোগাযোগ অবকাঠামো খাতে সর্বোচ্চ বরাদ্দ প্রস্তাব করা হয়েছে। এরপর রয়েছে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত এবং শিক্ষা খাত।
খাতওয়ারী বরাদ্দ প্রস্তাব
পরিবহন ও যোগাযোগ খাতে ৬১ হাজার ৬৩১ কোটি টাকা (মোট বরাদ্দের ২৭.৪৭%); বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে প্রায় ৪৫ হাজার ৮৬৮ কোটি টাকা (মোট বরাদ্দের ২০.৪৫%); গৃহায়ণ গণপূর্ত খাতে ২৩ হাজার ৮২১ কোটি টাকা (মোট বরাদ্দের ১০.৬২%); শিক্ষা খাতে ২৩ হাজার ৩২৩ কোটি টাকা (মোট বরাদ্দের ১০.৪০%); স্বাস্থ্য খাতে প্রায় ১৭ হাজার ৩০২ কোটি টাকা (মোট বরাদ্দের ৭.৭১%); স্থানীয় সরকার ও পল্লী উন্নয়ন খাতে ১৪ হাজার ২৭৪ কোটি টাকা (৬.৩৬%); পরিবেশ জলবায়ু পরিবর্তন ও পানি সম্পদ খাতে ৮ হাজার ৪৭০ কোটি টাকা (৩.৭৮%); কৃষি খাতে প্রায় ৭ হাজার ৬৪৬ কোটি টাকা (৩.৪১%); শিল্পায়ন ও অর্থনৈতিক সেবা খাতে ৪ হাজার ৬৪৩ কোটি টাকা (২.০৭%); বিজ্ঞান ও আইটি খাতে প্রায় ৩ হাজার ৫৮৭ কোটি টাকা (১.৬০%); গণ আদেশ ও নিরাপত্তা খাতে প্রায় ৩ হাজার ২০৫ কোটি টাকা (১.৪৩%); সাধারণ গণ সেবা খাতে প্রায় ২ হাজার ৯২৩ কোটি টাকা (১.৩০%); বিনোদন, সংস্কৃতি ও ধর্ম খাতে প্রায় ২ হাজার ১৯১ কোটি টাকা (০. ৯৮%); সামাজিক নিরাপত্তা খাতে প্রায় ১ হাজার ৬৪৮ কোটি টাকা (০.৭৩%); প্রতিরক্ষা খাতে ৮৫০ কোটি টাকা (০.৩৮%)।
এছাড়া বিশেষ উন্নয়ন সহায়তা হিসেবে ২ হাজার ৯৪০ কোটি টাকা (১.৩১%) বিশেষ বরাদ্দ রাখা হয়েছে। সম্পাদনা : রেজা