মহামারীর মধ্যেও দৃশ্যমান হচ্ছে শাহজালাল বিমানবন্দরের থার্ড টার্মিনাল
অর্থনীতি ডেস্ক : দফায় দফায় লকডাউনের পরও থেমে নেই হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নির্মাণ কাজ। প্রকৌশলীদের তত্ত্বাবধানের মাধ্যমে রাতদিন কাজ করে চলেছেন শ্রমিকরা। এরইমধ্যে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ৩০৪৯টি পিলার দাঁড়িয়ে গিয়েছে। তবে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, নির্ধারিত সময়ের আগেই কাজ শেষ হবে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের।
দুবাইয়ের বুর্জ আল খলিফা কিংবা সিঙ্গাপুরের চ্যাঙ্গি বিমানবন্দরের দর্শনীয় স্থাপনা যারা নির্মাণ করেছে তাদের হাত ধরেছে দৃশ্যমান হচ্ছে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের থার্ড টার্মিনাল। ২ লাখ ৩০ হাজার বর্গমিটারের টার্মিনালে থাকবে অত্যাধুনিক সব প্রযুক্তির ছোঁয়া।
নতুন টার্মিনালে একইসঙ্গে ৩৭টি বিমানবন্দরের অ্যাপ্রোন বা পার্ক করার জায়গা থাকবে। আর ভেতরে থাকবে ১২টি বোর্ডিং ব্রিজ, ১১টি বডি স্ক্যানার, ১৬টি লাগেজ বেল্ট থাকবে। এছাড়াও থাকবে স্বয়ংক্রিয় ইমিগ্রেশন সিস্টেম। গতবছর শুরু থেকে দফায় দফায় লকডাউন আর মাটিতে পুঁতে থাকা পাঁচটি শক্তিশালী বোমা উদ্ধারের পরও কাজের গতিতে কোন ধরনের সমস্যা হয়নি বরং সচল আছে কাজের গতি। তাই সিভিল অ্যাভিয়েশন বলছে, এরইমধ্যে বিমানবন্দরের প্রায় ২৫ শতাংশের বেশি নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে।
হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের বর্তমানের দুটি টার্মিনালে বর্তমানে যাত্রী ধারণ ক্ষমতা ৬৫ থেকে ৭০ লাখ। সবমিলে বছরে শুধু হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর দিয়ে প্রায় ২ কোটি যাত্রী সেবা পাবেন। সবকিছু ঠিক থাকলে ২১ হাজার ৩শ কোটি টাকা ব্যয়ে এই বিমানবন্দরের কাজ শেষ হবে ২০২৩ সালের জুনে।
হজরত শাহজালাল বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনাল নির্মাণ প্রকল্পটি ২০১৭ সালের ২৪ অক্টোবর অনুমোদন পায় জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটিতে (একনেক)। শুরুতে টার্মিনালটি নির্মাণের ব্যয় ধরা হয়েছিল ১৩ হাজার ৬১০ কোটি টাকা। পরে অবশ্য প্রকল্প ব্যয় ৭ হাজার ৭৮৮ কোটি ৫৯ লাখ টাকা বাড়ানো হয়। সবমিলে এখন প্রকল্পটির খরচ ২১ হাজার ৩৯৮ কোটি টাকারও বেশি।
প্রকল্পটি বাস্তবায়নে বাংলাদেশ সরকার দিচ্ছে ৫ হাজার ২৫৮ কোটি ৩ লাখ ৮৮ হাজার টাকা। বাকি ১৬ হাজার ১৪১ কোটি ২ লাখ ৪৫ হাজার টাকা ঋণ হিসেবে দিচ্ছে জাপানের সংস্থা জাইকা।
তৃতীয় টার্মিনালের ভেতরের ভবনটির নকশা করেছেন বিখ্যাত স্থপতি রোহানি বাহারিন। সিঙ্গাপুরের চ্যাঙ্গি এয়ারপোর্টের টার্মিনাল ৩, চীনের গুয়াংজুর এটিসি টাওয়ার ভবন, ভারতের আহমেদাবাদ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, ইসলামাবাদ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের মতো সব স্থাপনার নকশাকার তিনি। এছাড়া মালদ্বীপ, ফিলিপাইন, কম্বোডিয়া, ব্রুনাই, মিয়ানমার ও ভিয়েতনামসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের বিমানবন্দরের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন প্রকল্পের নকশা করেছেন তিনি।
সিভিল অ্যাভিয়েশনের চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল এম মফিদুর রহমান বলেন, আমরা বিমানবন্দরের থার্ড টার্মিনালের নির্মাণ কাজ করোনার মধ্যেও বন্ধ রাখিনি। এই বিমানবন্দরটি চালু হলে বাংলাদেশ অন্য কাতারে চলে যাবে। পুরো বিমানবন্দর থাকবে কম্পিউটারাইজড। এর মাধ্যমে মাধ্যমে আধুনিক বিমানবন্দরের মালিকানার তালিকায় যাবে বাংলাদেশ। সূত্র : সারাবাংলা। সম্পাদনা : শোভন দত্ত