অপ্রদর্শিত টাকা যতদিন থাকবে, ততদিন প্রদর্শিত করার সুযোগও থাকবে : অর্থমন্ত্রী
সোহেল রহমান : আগামী বাজেটে অপ্রদর্শিত অর্থ বৈধ করার সুযোগ থাকবে। এবারও এটি কন্টিনিউ করব। যতদিন পর্যন্ত অপ্রদর্শিত টাকা প্রদর্শিত না হবে, ততদিন প্রদর্শিত করার সুযোগ রাখা হবে বলে মন্তব্য করেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।
বুধবার সচিবালয়ে অনুষ্ঠিত ‘সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি’র ভার্চুয়াল বৈঠক শেষে ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এমন মন্তব্য করেন।
অর্থমন্ত্রী বলেন, যতদিন পর্যন্ত অপ্রদর্শিত টাকা প্রদর্শিত না হবে, ততদিন আমরা এটি চালিয়ে যাব। আমাদের সিস্টেমের কারণে অনেক সময় অপ্রদর্শিত টাকা সিস্টেমে চলে আসে। এগুলোকে যদি মেইনস্ট্রিমে না নিয়ে আসা হয় তাহলে ঠিকমতো ট্রিটমেন্ট পাবে না। তবে আমরা আশা করি অপ্রদর্শিত টাকা আমাদের ইকোনমিক সিস্টেম থেকে বিলীন হয়ে যাবে, থাকবে না। তবে কালো টাকা সাদা করার বিষয়টি এখন যেভাবে আছে সেভাবে থাকবে কি-না, সেটি এ মুহূর্তে বলা যাচ্ছে না। আগামী ৩ তারিখ এটি জানা যাবে।
কী কী কারণে হয় অপ্রদর্শিত টাকার সৃষ্টি হয়Ñ এমন প্রশ্ন তুলে তিনি বলেন, জমি রেজিস্ট্রেশন ফি আমরা অনেক রেখে দিয়েছি। মৌজার যে প্রাইস আছে সেটা অনেক কম। মার্কেট প্রাইসে লেনদেন হলে অপ্রদর্শিত টাকা থাকতো না। আমাদের সিস্টেমের কারণেই এখন বায়ার এবং সেলাররের কাছে তাদের অপ্রদর্শিত টাকা থাকে, সেজন্য তারা বিপদে পড়ে। আগে ইনকাম ট্যাক্স রেট বেশি ছিল, কেউ দিতো না। সেজন্য আমরা পর্যায়ক্রমে ইনকাম ট্যাক্স রেট কমিয়ে এনেছি।
করোনার বছরে মাথাপিছু আয় বাড়ার কারণ জানতে চাইলে অর্থমন্ত্রী বলেন, করোনার মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর একের পর এক সময়োপযোগী প্রণোদনা প্যাকেজ এবং সঠিক উদ্যোগের কারণে প্রত্যেক মানুষের কাছে প্রণোদনার অর্থ পৌঁছেছে। সে কারণে টাকার সাপ্লাই এখন বেশি। বিশেষ করে আমাদের গ্রামীণ অর্থনীতি এখন অনেক ভালো। আমাদের আমদানি আগের চেয়ে অনেক ভালো হচ্ছে। প্রত্যেকটি ক্ষেত্রে আমরা আগের চেয়ে অনেক ভালো করছি। আমাদের সামষ্টিক অর্থনীতির প্রতিটি সূচক এখন উন্নতির দিকে, নেগেটিভ কিছু নাই। এসব কারণে মাথাপিছু আয় বেড়েছে।
প্রসঙ্গক্রমে অর্থমন্ত্রী জানান, আমাদের মূল্যস্ফীতির হার এখন ৫ দশমিক ৪৭, যা আগের মতোই আছে। দুর্যোগের মধ্যেও গত এপ্রিল পর্যন্ত আমাদের পণ্য রপ্তানি ৩২ দশমিক ১ বিলিয়ন ডলার, যেটার গ্রোথ ৮ দশমিক ৭ শতাংশ। রেমিটেন্সের গ্রোথ হলো ৪০ শতাংশ। এগার মাসে রেমিটেন্স এসেছে ২২ বিলিয়ন ডলার।
রিজার্ভ গত জুনে ছিলো ৩৬ বিলিয়ন ডলার, এখন এটি ৪৪ দশমিক ৬ বিলিয়ন ডলার। এ মাসেই এটি ৪৫ বিলিয়ন ডলার হয়ে যাবে। আমরা আশা করি, আগামী অর্থবছরে নিঃসন্দেহে এটা ৫০ বিলিয়ন ডলার টাচ্ করবে।
তিনি আরও জানান, নন-পারফরমিং লোন অনেক কমে এসেছে, এখন ৭ দশমিক ৬৬ আছে। গত বছরের জুনে ছিলো ৯ দশমিক ১৬ শতাংশ। পুঁজিবাজারে গত বছরের জুনে ৩ লাখ ১২ হাজার কোটি টাকা মার্কেট ক্যাপিটালাইজেশন ছিলো। এখন সেটা বেড়ে ৪ লাখ ৯৫ হাজার কোটি টাকা হয়েছে। আমাদের জাতীয় রাজস্ব নিয়ে সব সময় বিচলিত থাকি, সেই জাতীয় রাজস্ব এপ্রিল পর্যন্ত গ্রোথ ১১ দশমিক ৮ শতাংশ।
এসএমই খাতের উদ্যোক্তাদের প্রণোদনার অর্থ না-পাওয়া প্রসঙ্গে জানতে চাইলে অর্থমন্ত্রী বলেন, আমরা এখন একটা সিস্টেমে নিয়ে দিচ্ছি এটা। কোন মিডলম্যানকে ইউজ করছি না। মিডলম্যান ইউজ করলে যাদেরকে টাকা দিচ্ছি তারা পেতো না। সেজন্য যাদের অ্যাকাউন্ট নাম্বার নেই, তাদের যার যে মাধ্যম আছে সেটি দেখেশুনে দেয়া হচ্ছে। সম্পাদনা : রেজা