চীনের সিনোফার্মা থেকে দেড় কোটি ভ্যাকসিন ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন
সোহেল রহমান : করোনাভাইরাস প্রতিরোধে চীনের ‘চায়না ন্যাশনাল ফার্মাসিউটিক্যালস গ্রুপ’ (সিনোফার্মা) থেকে দেড় কোটি ডোজ কিনবে সরকার। প্রতি ডোজ টিকার দাম ধরা হয়েছে ১০ ডলার। বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৮৫০ টাকা। ইতোপূর্বে সেরাম থেকে আনা অ্যাস্ট্রাজেনেকার প্রতি ডোজ টিকার দাম ছিল ৫ ডলার।
বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে অনুষ্ঠিত ‘সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি’র এক ভার্চুয়াল বৈঠকে এ-সংক্রান্ত একটি ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন দেয়া হয়েছে। অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন।
বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব ড. শাহিদা আক্তার এক ভার্চুয়াল ব্রিফিং-এ সাংবাদিকদের জানান, জনস্বাস্থ্য সংরক্ষণ ও করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে জরুরি বিবেচনায় সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে চীনা প্রতিষ্ঠান সিনোফার্মা থেকে গণচীনের তৈরি সার্স কোভ-২ ভ্যাকসিন কেনার অনুমোদন দেয়া হয়েছে। প্রস্তাবটি টেবিলে উপস্থাপন করা হয়েছে। জুন, জুলাই ও আগস্টের শেষ দিকে প্রতিমাসে ৫০ লাখ ডোজ করে মোট দেড় কোটি টিকা আসবে। বাংলাদেশি টাকায় এতে মোট ব্যয় হবে ১ হাজার ২৬৭ কোটি ৫০ লাখ টাকা।
গত ১২ মে চীন থেকে উপহার হিসেবে করোনাভাইরাসের ৫ লাখ ডোজ সিনোফার্মার ভ্যাকসিন বাংলাদেশ সরকারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। আরও ৬ লাখ ডোজ টিকা চীন উপহার হিসেবে দেবে বলে জানিয়েছে।
এর আগে ১১ মে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেছেন যে, আমরা চীন থেকে ৪ থেকে ৫ কোটি ভ্যাকসিন সংগ্রহ করবো। ইতিমধ্যে আমরা তাদের কাছে চাহিদাপত্র পাঠিয়েছি।
সে ধারাবাহিকতায় চীনের সিনোফার্মা থেকে টিকা কেনার বিষয়টি গত ১৯ মে অনুষ্ঠিত ‘অর্থনীতি বিষয়ক মন্ত্রিসভা কমিটি’র বৈঠকে নীতিগত অনুমোদন দেয়া হয়।
টিকা সরবরাহের ক্ষেত্রে আমাদের দেশিয় কোনো প্রতিষ্ঠানের সম্পৃক্ততা আছে কি নাÑ জানতে চাইলে অতিরিক্ত সচিব বলেন, না, আমাদের দেশিয় কোনো প্রতিষ্ঠান এখানে নেই। সরাসরি চীন সরকারের সঙ্গে বাংলাদেশ সরকারের এই ক্রয় চুক্তি হচ্ছে।
এতদিন ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট থেকে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা কোভিশিল্ড কিনে এতদিন টিকাদান চালিয়ে আসছিল বাংলাদেশ। সব খরচ মিলিয়ে ওই টিকার দাম ছিল ৫ ডলার। সেরাম ইনস্টিটিউট থেকে বাংলাদেশের কেনা ৩ কোটি ডোজ টিকা জুনের মধ্যে সরবরাহ করার কথা ছিল। কিন্তু ভারত রপ্তানি বন্ধ রাখায় বাংলাদেশ এ পর্যন্ত ৭০ লাখ ডোজ হাতে পেয়েছে। ফলে টিকাদান কর্মূচি চালিয়ে নিতে এখন নতুন উৎস থেকে টিকা আনতে হচ্ছে সরকারকে।
এর অংশ হিসেবে সিনোমফার্মার ‘বিবিআইবিপি-করভি’ এবং রাশিয়ার তৈরি ‘স্পুৎনিক-ভি’ টিকা বাংলাদেশে জরুরি ব্যবহারের অনুমতি দেয়া হয় এপ্রিলের শেষে এবং মে মাসের শুরুতে।
উল্লেখ্য, চীন থেকে আসা প্রথম চালানের টিকা ঢাকার চার মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীদের দেয়া শুরু হয়েছে গত ২৫ মে। কোভিশিল্ডের মত সিনোফার্মের টিকাও নিতে হবে দুই ডোজ করে। উৎপাদকদের ভাষ্য, পরীক্ষামূলক প্রয়োগে তাদের টিকা ৭৯ দশমিক ৩৪ শতাংশ কার্যকরিতা দেখিয়েছে।