কলাবাগানে নারী চিকিৎসকের রক্তাক্ত মরদেহ উদ্ধার
সুজন কৈরী : রাজধানীর কলাবাগান এলাকা থেকে কাজী সাবিরা রহমান লিপি নামে এক চিকিৎসকের রক্তাক্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। সোমবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে কলাবাগানের ৫০/১ ফার্স্ট লেনের বাড়ির নিজ ঘর থেকে চিকিৎসকের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। ডা. লিপি রাজধানীর পান্থপথের গ্রিন লাইফ হাসপাতালের রেডিওলোজি বিভাগের চিকিৎসক ছিলেন।
মরদেহের পিঠে দুটি ও গলায় একটি ধারালো অস্ত্রের আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। পুলিশের ধারণা এটি হত্যাকা-। হত্যাকা-ের পর মরদেহ পুড়িয়ে দেয়ার চেষ্টা করা হয়েছিল।
কলাবাগান থানার ডিউটি অফিসার এসআই অমিত আহমেদ বলেন, নারী চিকিৎসকের রক্তাক্ত মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় তিনজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। তিনি আরও জানান, সুরতহাল করতে গিয়ে পুলিশ সদস্যরা চিকিৎসক সাবিরা রহমানের শরীরে ধারালো অস্ত্রের একাধিক আঘাত পেয়েছেন। তার মুখম-লও ঝলসানো।
মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় ঐ বাড়িতে যায় সিআইডির ক্রাইম সিন ইউনিট ও ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। তারা ঘটনাস্থল থেকে বিভিন্ন আলামত সংগ্রহ করেন।
এ সময় ডিবি পুলিশের রমনা বিভাগের ডিসি আজিমুল হক বলেন, নিহত সাবিরার গলায় ধারালো অস্ত্রের আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। পিঠেও দুটি আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। প্রাথমিকভাবে আমাদের কাছে এ ঘটনাকে আত্মহত্যা মনে হচ্ছে না। ডিসি আজিমুল হক বলেন, ডা. সাবিরা কলাবাগানের ৫০/১ ফার্স্ট লেনের বাড়ির একটি ফ্ল্যাটে ভাড়া থাকতেন। তিনি ফ্ল্যাটের দুটি রুম এক তরুণীকে সাবলেট হিসেবে ভাড়া দেন। সকালে সাবলেটে থাকা তরুণী হাঁটতে বের হয়েছিলেন। বাসায় ফেরার পর তিনি দেখেন চিকিৎসক সাবিরার রুম বন্ধ। রুমের ভেতর থেকে ধোঁয়া বের হচ্ছে। পরে তিনি দারোয়ানকে ডেকে চাবি নিয়ে রুমের তালা খুলে দেখতে পান চিকিৎসক সাবিরা ফ্লোরে পড়ে আছেন। সবাই ভেবেছিলেন চিকিৎসক আগুনে পুড়ে মারা গেছেন। পরে পুলিশ এসে তার গলায় একটি আঘাতের চিহ্ন ও পিঠে দুটি আঘাতের চিহ্ন পায়। আমরা তদন্ত করছি। আশা করছি দ্রুত রহস্য উদঘাটন হবে।
এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তিনজনকে ডিবি হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। তারা হলেন- ডাক্তার লিপির বাসার সাবলেটের বাসিন্দা কানিজ সুবর্ণা, তার এক বন্ধু ও বাসার দারোয়ান রমজান। ডিবি সূত্র জানায়, ডা. সাবিরা দুটি বিয়ে করেছিলেন। তার প্রথম স্বামী চিকিৎসক ছিলেন। তিনি একটি সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যান। পরে সাবিরা দ্বিতীয় বিয়ে করেন। সাবিরার দ্বিতীয় স্বামী সামসুদ্দিন আজাদ, তিনি ন্যাশনাল ব্যাংকের ভাইস প্রেসিডেন্ট। তবে দ্বিতীয় স্বামীর সঙ্গে বনিবনা ছিল না তার। সাবিরার দুই সন্তান রয়েছে। তার আগের স্বামীর ঘরে একটি ছেলে এবং দ্বিতীয় স্বামীর ঘরে ৯ বছরের একটি মেয়ে রয়েছে। মেয়েকে নিয়ে কলাবাগানের বাড়িতে থাকতেন সাবিরা। রোববার রাতে মেয়েকে গ্রিন রোডের নানার বাসায় রেখে এসেছিলেন তিনি। রাতে বাসায় একা ছিলেন সাবিরা। সাবিরার মামাতো ভাই রেজাউল হাসান সাংবাদিকদের বলেন, আমাদের মনে হচ্ছে এটি একটি হত্যাকা-। সম্পাদনা : ভিক্টর রোজারিও