ভ্যাকসিন দিতে জি সেভেনকে বিশ^তারকাদের আহ্বান
রাশিদ রিয়াজ : ভারতের অভিনেত্রী ও সাবেক বিশ্বসুন্দরী প্রিয়াংকা চোপড়া, ফুটবলার ডেভিড বেকহ্যাম, অভিনেতা অ্যান্ডি মারে, অলিভিয়া কোলম্যান, সঙ্গীতজ্ঞ লিয়াম পাইনে, রিয়েলিটি তারকা কেটি পেরি, মডেল ক্লাউডিয়া শিফারের মত বিশ্বের প্রথম সারির সেলিব্রেটিরা করোনা ভাইরাসের উদ্বৃত্ত টিকা দরিদ্র দেশগুলোকে দ্রুত দেয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, আগামী আগস্টের মধ্যে তাদের দানের শতকরা ২০ ভাগ টিকা সরবরাহ করতে। তারা এও বলেন এর পরিবর্তে যদি ধনী দেশগুলো একসঙ্গে বড় অংকের টিকা পাঠায় তাহলে মজুদকৃত টিকার অনেক বেশি নষ্ট ও অপচয় হবে। তার আগে অনেক মানুষ কোভিডে মারা যাবেন।
এদিকে ইউনিসেফ দাবি করেছে সারাবছর ধারাবাহিকভাবে এসব টিকা গরিব দেশগুলোকে দান করে যাওয়া উচিত। একবারে পাঠানোর চেয়ে বার বার অল্প অল্প করে অব্যাহতভাবে পাঠানো হলে তাতে অধিক প্রাণ রক্ষা পাবে। এর আগে ব্রিটেন, যুক্তরাষ্ট্রসহ অন্য ধনী দেশগুলো তাদের উদ্বৃত্ত টিকা গরিব দেশগুলোকে দান করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। এর প্রেক্ষিতে বিশ^ তারকারা ইউনিসেফের পক্ষে ওই দাবি জানান। ফুটবল তারকা ডেভিড বেকহ্যাম বলেন, সারা বিশ্বের সব জায়গা থেকে করোনা মহামারির বিদায় না হওয়া পর্যন্ত কোথাও থেকে এর বিদায় হবে না। জি সেভেনের কাছে লেখা ওই চিঠিতে আরো যেসব তারকা স্বাক্ষর করেছেন তার মধ্যে আছেন অলিভিয়া কোলম্যান, ইওয়ান ম্যাকগ্রেগর, অরল্যান্ডো ব্লুম, জেমা চ্যান, উপি গোল্ডবার্গ, বিলি আইলিশ, ক্রিস হোই, হুপি গোল্ডবার্গ, জেমা চান প্রমুখ।
ইউনিসেফের নির্বাহী পরিচালক লিলি ক্যাপরানি বিবিসি’কে বলেন প্রতিটি দেশের যেমন নিজেদের নাগরিকের জন্যে কোভিড ভ্যাকসিনের প্রয়োজন তেমনি প্রয়োজন অন্য দেশেরও। সন্দেহ নেই যাদের বয়স ১৮ বছরের কম তাদের জন্যেও ভ্যাকসিন প্রয়োজন হবে। কিন্তু বিশে^র সকল দেশের দুর্বল ও অগ্রাধিকার গোষ্ঠীর কাছে আগে ভ্যাকসিন পৌঁছানো প্রয়োজন। তাই জি সেভেন গ্রুপের দেশগুলোর উচিত তাদের উদ্বৃত্ত ভ্যাকসিনগুলো কম আয়ের দেশগুলোকে দিয়ে দেওয়া। তবে গত সপ্তাহে ব্রিটেনের স্বাস্থ্যমন্ত্রী ম্যাট হ্যানকক বলেন অন্য দেশে ভ্যাকসিন পাঠানোর আগে তার দেশের শিশুদের ভ্যাকসিন প্রাপ্তির বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া জরুরি।
এর আগে ব্রিটেন উদ্বৃত্ত ভ্যাকসিন দিতে রাজি হলেও দেশটির স্বাস্থ্যমন্ত্রী এখন বলছেন অতিরিক্ত ভ্যাকসিন তাদের কাছে নেই। কিন্তু ব্রিটেন ইতিমধ্যে ৪০ কোটি ভ্যাকসিন সংগ্রহ করার পর দেশটির নাগরিকদের অধিকাংশকেই ভ্যাকসিন প্রদান করা হয়েছে। ইউনিসেফের নির্বাহী পরিচালক বলছেন বিভিন্ন দেশে এখনো অনেক স্বাস্থ্যকর্মীকে পর্যন্ত ভ্যাকসিন দেওয়া যায়নি। অথচ ক্রিসমাসের সময় পর্যন্ত এসব ভ্যাকসিন সংরক্ষণের অযৌক্তিক পরিণতি হবে গরীব দেশগুলো তা আর গ্রহণ বা কার্যকর করতে সক্ষম হবে না এবং মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়ে গেলে সেগুলো নষ্ট হয়ে যেতে পারে। আর লাখ লাখ ডোজ ভ্যাকসিন ব্যবহার না করতে পারা হবে একটি ট্র্যাজেডি। বিশ^তারকারা জি সেভেন গ্রুপের কাছে লেখা চিঠিতে এও উল্লেখ করেন ইউনিসেফ বিভিন্ন দেশে ভ্যাকসিন দিলেও এখনো ১৯ কোটি ডোজের ঘাটতি রয়েছে। কিন্তু জি-সেভেন গ্রপের দেশগুলো যদি কোনো রকম বিলম্ব না ঘটিয়ে জুন ও আগস্টের মধ্যে তাদের মজুদ ২০ শতাংশ ভ্যাকসিন দিয়ে দেয় তাহলে কোভ্যাক্সের আওতায় ১৫ কোটি ডোজ টিকা বিতরণ করা সম্ভব হবে। চিঠিতে তারা আরও বলেন, এখনো কোভিড মহামারীর নতুন ভ্যারিয়েন্টের সংক্রমণ ঘটছে। সম্পাদনা : রেজা