আসিফ সুফিয়ানঃ কিছু অভিনেতা পরিচিতি পায় অস্কার পুরস্কার পাওয়ার পর আবার কিছু অভিনেতার মাধ্যমে পরিচিতি পায় অস্কার পুরস্কার যেমনটা জনি ডেপের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য,এবার জনি ডেপের অস্কার ভাগ্য খুলবে কিনা তা সময়ই বলবে তাছাড়া জনি ডেপ মিনামাতা সিনেমায় অনেক ভালো অভিনয় করেছে কিনা সেটাও দর্শকরা ভালো উত্তর দিতে পারবে, তবে তার এবারের সিনেমাটা একটু ভিন্ন ঘরানার এবং সিনেমাটি সত্য ঘটনা অবলম্বনে নির্মিত।
মজার ব্যাপার হল এই সিনেমাতে বাংলাদেশও আছে,কি অবাক লাগছে? এর উত্তর পেতে অবশ্যই সিনেমাটি দেখতে হবে আপনাদের।
এই সিনেমাটার মূল ভিত্তি হচ্ছে মিনামাতা নামক একটি রোগ, সেই রোগের ফলে জাপানের সে এলাকার মানুষের কি পরিণতি হয়েছে এবং সেটা বিশ্ব-এর কাছে তুলে ধরতে একজন ফটো সাংবাদিককে কি পরিমান কষ্ট সহ্য করতে হয়েছে সিনেমাটিতে তা পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে তুলে ধরা হয়েছে ।
মিনামাতা রোগটি মারাত্মক পারদের বিষক্রিয়া দ্বারা সৃষ্ট একটি স্নায়বিক রোগ।এই রোগটি ১৯৫৬ সালে জাপানের মিনামাতা শহরে প্রথম আবিষ্কৃত হয়েছিল। এটি মূলত জাপানের চিসো কর্পোরেশনের মালিকানাধীন একটি রাসায়নিক কারখানার শিল্প বর্জ্য পানির মধ্যে মিথাইলমার্কুরি ছাড়ার কারণে ঘটেছিল,যা ১৯৩২ থেকে ১৯৬৮ সাল অবধি অব্যাহত ছিল।
এই বিষাক্ত রাসায়নিকটি জৈব চক্রের মাধ্যমে মিনামাতা উপসাগর এবং শিরানুই সাগরে শেলফিস এবং মাছের মধ্যে যুক্ত হয়। সেই সমুদ্র থেকে স্থানীয় জনগণ মাছ তুলে খেত যার ফলস্বরূপ তাদের পারদের বিষক্রিয়া হয়।এই রোগের ফলে মানুষের শরীরে অসমক্রিয়া, হাত ও পায়ের অসাড়তা, শরীরের সাধারণ পেশীগুলির দুর্বল হয়ে যাওয়া, দৃষ্টিশক্তি হ্রাস,শ্রবণশক্তি হ্রাস এবং রোগটি যদি খুব তীব্র হয় তখন পাগলামি, পক্ষাঘাত, কোমা এবং পরে রোগীর মৃত্যুও ঘটে যা সিনেমাটি দেখলে প্রকৃত ধারনা পাবেন দর্শকরা এই রোগ এমনকি গর্ভের ভ্রূণকেও প্রভাবিত করতে পারে। মিনামাতা রোগের কারণে জাপানে বিড়াল, কুকুর, শূকর এবং মানুষের মৃত্যু প্রায় ৩৬ বছর অব্যাহত ছিল। পশুর মধ্যে বিড়ালের শরীরে এই বিষের প্রভাব এতই তীব্র ছিল যে জাপানিরা মিনামাতা রোগের মাধ্যমে যে জ্বর আসত সেটাকে “ডান্সিং ক্যাট ফিভার’’ নাম দিয়েছিল।
মিনামাতা সিনেমায় উইলিয়াম ইউজিন স্মিথ নামক একজন আমেরিকান ফটো সাংবাদিকের চরিত্রে অভিনয় করেছেন জনি ডেপ।
মিনামাতায় উপরের ঘটনাগুলো কিভাবে হয়েছে এবং ফটো সাংবাদিক ইউজিন কিভাবে তা দুনিয়ার সামনে তুলে ধরেছে সে সব ঘটনার উত্থান-পতনের গল্প খুব সুন্দর করে ফুটিয়ে তুলেছেন সিনেমার কারিগররা।
করোনার লকডাউনের মধ্যে এই সিনেমাটি পরিবারের সবাইকে নিয়ে দেখে নিতে পারেন। সিনেমাটিতে গুরুত্বপূর্ণ কিছু বার্তা আছে যা আমাদেরকে ভবিষ্যত নিয়ে চিন্তায় ফেলতে পারে। সিনেমাটি পরিচালনা করেছেন এড্রু লেভিতাস এবং মূল চরিত্রে অভিনয় করেছেন জনি ডেপ,হিরুউকি সানাডা,মিনামী প্রমুখ।