চাহিদা সাড়ে ৭ লাখ টন আলু বীজ মাত্র ৩৫ হাজার টন বীজ কেনা হয় কৃষকের কাছ থেকে
মতিনুজ্জামান মিটু : বিএডিসির আলুবীজ বিভাগকে ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা করতে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চেয়েছে চুক্তিবদ্ধ আলুবীজ চাষীরা। সোমবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের আব্দুস সালাম হলে এক সংবাদ সম্মেলনে সারা দেশের আলুবীজ চাষীদের সংগঠন ‘বিএডিসি আলুবীজ চুক্তিবদ্ধ কৃষক ফোরাম কেন্দ্রীয় সংসদ’ এ কথা তুলে ধরে।
সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করে বলা হয়, সরকারি প্রতিষ্ঠানকে বেসরকারি কোম্পানীর হাতে তুলে দেওয়ার চক্রান্তে লিপ্ত বিএডিসির কিছু অসাধু কর্মকর্তা। দেশে সাড়ে ৭ লাখ টন আলু বীজের মধ্যে মাত্র ৩৫ হাজার টন বীজ কেনা হয় চুক্তিবদ্ধ কৃষকদের কাছ থেকে। বাকি বীজ নেওয়া হয় প্রভাবশালী বেসরকারি কোম্পানি থেকে। বিএডিসির বীজকে নিম্নমানের করে বেসরকারি কোম্পানির দিকে ঠেলে দিচ্ছে ওই কর্মকর্তারা। চাষাবাদের দরকারি জিনিষপত্রের দাম বাড়লেও আলুবীজের নিম্নমুখি মূল্য নির্ধারণ করা হয় উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে। ক্রয় করে টাকা পরিশোধেও নানা পায়তারা করা হয়।
বৈরী আচরণের কারণে বিএডিসির সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হাজার হাজার কৃষক লোকসান গুনতেগুনতে ভিটেমাটি ছাড়া হচ্ছেন। এ পরিস্থিতি থেকে পরিত্রাণ পেতে বিএডিসিকে আবারো কৃষকবান্ধব করতে হবে। অসাধু কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে এখনই।
সংবাদ সম্মেলনে বিএডিসির চুক্তিপত্রের একতরফা চুক্তিনামা বাতিল এবং কৃষক-বিএডিসি সমঝোতা চুক্তির প্রস্তাব করা হয়েছে। আলুবীজ চাষীরা ব্যাপক লোকসানের হাত থেকে বাঁচাতে সংগঠনের তরফ থেকে ৭ দফা দাবি তুলে ধরা হয়।
দাবির মধ্যে রয়েছেÑ আলুবীজের দাম প্রতি কেজি ৩৭ দশমিক ৫০ টাকা নির্ধারণ করা, বিএডিসি চাষিদের কাছ থেকে আলুবীজ সংগ্রহ ও বিতরণের সময় আলুবীজের মূল্য নির্ধারণ কমিটিতে বিএডিসি আলুবীজ চুক্তিবদ্ধ কৃষক ফোরাম কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ কমপক্ষে পাঁচজন প্রতিনিধিকে অন্তর্ভূক্ত করা, বিএডিসির নিজস্ব খামারে ভিত্তি বীজের উৎপাদন এবং সংগ্রহসহ সব প্রক্রিয়ায় কৃষক ফোরামের প্রতিনিধি রাখা, বীজ সংগ্রহের সর্বোচ্চ ৭ (সাত) দিনের মধ্যে আলুবীজের সমুদয় দাম কৃষকদের পরিশোধ করা, আলুবীজ বপনের আগেই মুল্য নির্ধারণী কমিটিতে চাষীদের প্রতিনিধি অর্ন্তভূক্ত করা, বীজ সংগ্রহ বিতরণ, মাঠের জমি বন্টন, কৃষকদের ব্যাংকের ঋণ প্রদানে স্বচ্ছতা এবং ফোরাম নেতাদের পরামর্শ গ্রহণ, মামলা এবং চলমান প্রক্রিয়ার সঙ্গে কাউকেই বিএডিসি কোন রূপ হয়রানি না করা।
সংবাদ সম্মেলনে প্রস্তাবনাগুলো তুলে ধরেন ফোরামের সভাপতি রুহুল আমিন মিলন। এর আগে ফোরামের কেন্দ্রীয় সংসদের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। গঠন করা হয় পুর্নাঙ্গ কমিটি। ৬৪ জেলার ২৮ টি জোনের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ জোন কমিটির নেতারা উপস্থিত ছিলেন। সম্পাদনা : ভিক্টর রোজারিও