সিকিউরিটি অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের বলিষ্ঠ ভূমিকায় শেয়ারবাজারে আস্থা ফিরছে
আমিরুল ইসলাম : গত দশবছরের মধ্যে দেশের শেয়াবাজারের অবস্থা এখন সবচেয়ে ভালো। এই অবস্থা স্বাভাবিক কিনা এবং এখানে দুষ্টুচক্রের চক্রান্ত রয়েছে কিনা, জানতে চাইলে রূপালী ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান ড. আহমদ আল কবির বলেন, শেয়ারবাজারে উত্থান-পতন হবেই। শুধু উত্থান হবে, কিন্তু পতন হবে নাÑ এটা শেয়ারবাজারের চরিত্র না। তবে কথা হচ্ছে হঠাৎ বেড়ে যাওয়া, কমে যাওয়া এবং অতি উত্থান ও নিম্নগতি কাম্য নয়। হয়তো কিছু কিছু শেয়ার উঠবে, কিছু কিছু শেয়ার পড়বে, কিন্তু সবাই একসঙ্গে পড়ার মতো ঘটনা কাম্য নয়।
যারা শেয়ারবাজারের ব্যবসা করেন, এটা সবাইকে মানতে হবে যে উত্থান-পতন থাকবেই। এটি রুটিন জিনিস। পৃথিবীর সকল দেশেই শেয়ারবাজারে উত্থান-পতন হয়। একদল লোক এর মধ্যে কারসাজি করে। সবগুলো শেয়ারকে প্রভাবিত করে। এই দুষ্টুচক্রের কার্যক্রমের মাধ্যমে শেয়ারবাজার প্রভাবিত হয়। আমরা এই মুহূর্তে শেয়ারবাজারের দুষ্টুচক্র থেকে অনেকটা বের হয়ে আসতে পেরেছি সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের ব্যবস্থাপনার উন্নয়নের জন্য এবং তাদের বলিষ্ঠ ভূমিকা ও নেতৃত্বের জন্য।
এ প্রতিবেদকের সঙ্গে আলাপকালে তিনি আরও বলেন, আমাদের শেয়ারবাজার নিয়ে যে সমস্ত লার্নিং পেয়েছি সেগুলো হলোÑ শেয়ারবাজারে বিনিয়োগকারীদের অধিকাংশ ফড়িয়া এবং ব্রোকার হাউজের ওপর নির্ভরশীল। এতে করে নিজেরা নিজেদের বিচার-বিবেচনা ব্যবহার করে না। খুব কমসংখ্যাক বিনিয়োগকারী শেয়ারবাজার সম্পর্কে ভালো ধারণা রাখেন। শেয়ারবাজার সম্পর্কে বিনিয়োগকারীদের প্রশিক্ষিত হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। এই কাজটি এখন বেশি ভালোভাবে চলছে। শেয়ারবাজারে সবসময় ভালো শেয়ার করতে হবে। সবসময় একটি মূলনীতি কাজ করা উচিত, সেটা হচ্ছে এক-তৃতীয় ভালো শেয়ারে বিনিয়োগ করা উচিত, এক-তৃতীয়াংশ তুলনামূলক ভালো শেয়ারে আর এক-তৃতীয়াংশ নিয়ে আমরা গ্যামব্লিং করতে পারি। এতে করে একসঙ্গে বিনিয়োগকারীদের ফতুর হওয়ার সুযোগ থাকে না। কিন্তু আমরা শেয়ারবাজারে অধিকাংশ সময় সবাই গুজবের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ি। এরকম আচরণ থেকে আমাদের বেরিয়ে আসতে হবে।
তিনি বলেন, আমাদের শেয়ারবাজারের অনেক উন্নতি ঘটেছে, তবে বিদেশি শেয়ারগুলোকে আমরা এখনো সেরকমভাবে আকৃষ্ট করতে পারিনি। শেয়ারবাজারে যে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের টেকনিক্যাল অ্যাডভোকেসি হিসেবে নিয়ে এসেছি, সেখানে তাদের ভূমিকা খুব সীমিত। এখনো পর্যন্ত বড় ধরনের কোনো ফলাফল তাদের মাধ্যমে আসেনি। অতএব আমাদের এসব বিষয়ের দিকেও দৃষ্টি দিতে হবে। এদিকে নজর দিতে না পারলে আমরা বেশি দূর এগুতে পারবো না।
সিকিউরিটি এক্সচেঞ্জ কমিশন এখন অনেক বেশি ভিসিলাইজ্ড এবং অনেক বেশি দায়িত্বশীল। তারা যখনো হস্তক্ষেপ করার প্রয়োজন করছে এবং শাস্তির প্রয়োজন পড়লে শাস্তি দিচ্ছে। আমাদের সবসময় একশ্রেণির অতিলোভী কুচক্রীমহল আছে তাদের থেকে হুঁশিয়ার থাকতে হবে। কালো টাকা বা অপদর্শিত আয় বিনিয়োগের সুযোগ বন্ধ হয়ে যাওয়ার কারণে এমনি হয়নি। মূল বিষয়টি হচ্ছে শেয়ারবাজারের প্রতি মানুষের আস্থা আস্তে আস্তে বাড়ছে। যতোদিন পর্যন্ত আস্থা না আসবে ততোদিন বিনিয়োগকারীরা এগিয়ে আসবে না। ভালো কোম্পানিগুলো এখনো শেয়ারবাজারে আসছে না। ভালো কোম্পানিগুলো আসছে শেয়ারবাজারের আরও উন্নতি ঘটবে। সম্পাদনা : রেজা