বাংলাদেশ-তুরস্ক সামরিক যৌথ সামরিক উৎপাদন চুক্তি প্রথমবারের মতো বাংলাদেশে উৎপাদন হচ্ছে ১৫৫ মিলিমিটার শেল
বিশ^জিৎ দত্ত : প্রথমবারের মতো বাংলাদেশ ও তুরস্কের মধ্যে যৌথ বিনিয়োগে সামরিক অস্ত্র উৎপাদনের একটি চুক্তি সাক্ষরিত হয়েছে। চুক্তি অনুযায়ি তুরস্কের রাষ্ট্রায়ত্ব রেপকর্ন কোম্পানির সহযোগিতায় বাংলাদেশ অর্ডিন্যান্স ফ্যাক্টরিতে ১০৫ ও ১৫৫ মিলিমিটার শেল উৎপাদন করবে বাংলাদেশ।
তুরস্কের বার্তা সংস্থা আনাদুলু জানায়, তুরস্কের সঙ্গে ক্রমেই বাংলাদেশের সামারিক সহযোগিতা বাড়ছে। বিশেষ করে সামরিক প্রযুক্তি হস্তান্তরে বাংলাদেশকে অগ্রাধিকার দিচ্ছে তুরস্ক। সম্প্রতি তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেভলাট বাংলাদেশ সফরের সময় দুই দেশের মধ্যে সামরিক সহযোগিতার বিষয়ে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। তিনি বাংলাদেশে অস্ত্র উৎপাদনের কারখানা গড়ার জন্যও আগ্রহ দেখান।
আনাদুলু জানায়, ২০২১ সালের জানুয়ারি থেকে এপ্রিল পর্যন্ত এই ৪ মাসে তুরস্ক সারা বিশে^ অস্ত্র রপ্তানি করেছে ১ বিলিয়ন ডলারের। এরমধ্যে বাংলাদেশ ৬০ মিলিয়ন ডলারের অস্ত্র ক্রয় করেছে। তাদের হিসাবে তুরস্কের অস্ত্র রপ্তানির ৪র্থ বড় ক্রেতা বাংলাদেশ। ২০২১-২২ সালের বাজেটে বাংলাদেশ প্রতিরক্ষাখাতে ৪.৪৫ বিলিয়ন ডলার বরাদ্দের প্রস্তাব করেছে।
সংস্থাটির খবরে বলা হয়, বাংলাদেশ অর্ডিন্যান্স ফ্যাক্টরি একটি প্রকল্প নিয়েছে অ্যান্টি ট্যাঙ্ক মিসাইল ও আকাশ প্রতিরক্ষা যন্ত্রপাতি উৎপাদনের। এই প্রকল্পটির মেয়াদ ২০৩০ সাল পর্যন্ত। প্রাথমিকভাবে ২০১৬ সালে এই প্রকল্পে চীন যুক্ত থাকলেও২০২১ সাল পর্যন্ত এ বিষয়ে কোনো অগ্রগতি হয়নি। এখন প্রকল্পটিতে সহযোগিতা করছে তুরস্ক। বিশেষ করে সামরিক হার্ডওয়্যার, নেভি ও বিমানবাহিনীর হার্ডওয়ার ইতিমধ্যে সরবরাহ করেছে তারা। খুলনা শিপইয়ার্ডে নৌবাহিনীর ড্রাইভিং সাপোর্ট ৩টি বোট নির্মাণ করে দিয়েছে তুরস্ক।
বাংলাদেশ ইতিমধ্যেই তুরস্ক থেকে টিআরজি ৩০০ নামের স্বল্পপাল্লার রকেট ক্রয় করেছে তুরস্ক থেকে যার নাম কাপলান এমএলআরএস । এটি ১২০ কিলোমিটার দূরত্বে আঘাত হানতে সক্ষম। এর রকেট পরিচালনার জন্য ৪১ সদস্যের বাংলাদেশি একটি সামরিক দলকে প্রশিক্ষণ দিয়েছে তুরস্ক সেনাবাহিনী। এছাড়াও তুরস্কের সঙ্গে সামারিক সহযোগিতা বৃদ্ধির জন্য বিমানবাহিনী, নৌবাহিনী প্রধান ছাড়াও উচ্চ পর্যায়ের বেশ কয়েকজন সামরিক কর্মকর্তা তুরস্ক সফর করেছেন। এই সময় তারা তুরস্কের বিভিন্ন সমারিক স্থাপনা ঘুরে দেখেন ও সামরিক অস্ত্র প্রদর্শনিতেও অংশ নেন।
এব্যাপারে সামরিক বিশেষজ্ঞ ব্রিগেডিয়ার (অব) জেনারেল শাখাওয়াত হোসেন বার্তা সংস্থাটিকে জানান, সম্প্রতি তুরস্কের জয়েন ভেঞ্চারে মিসাইল ও এয়ারক্রাফট তৈরির প্রস্তাবটি দিয়েছেন তুরস্কের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী। তিনি বলেন, এটি খুবই ভাল প্রস্তাব। তবে চুক্তি না হওয়া পর্যন্ত এ বিষয়ে কোনো কিছু বলা ঠিক না। কারণ তুরস্ক একটি ন্যাটোভুক্ত দেশ। তাদের সামরিক সক্ষমতা রয়েছে। প্রযুক্তি ও উদ্ভাবনে তুরস্ক উন্নত বিশে^র প্রযুক্তির সমকক্ষ। তাদের প্রযুক্তি দিয়ে যদি বাংলাদেশ অস্ত্র উৎপাদনে যায় তবে তা রপ্তানিও করা যাবে।
উল্লেখ্য, ডিফেন্স টেকনোরজি নামের একটি অনলাইন দাবি করেছে, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে খুব শ্রীঘ্রই যুক্ত হতে যাচ্ছে ১৫৫ মিলিমিটারের হাউইৎজার কামান।