লক-ডাউনে গরীব মানুষদের ‘টেক কেয়ার’ করা হবে : অর্থমন্ত্রী
সোহেল রহমান : অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, আসন্ন লক-ডাউনে গরীব মানুষদের ‘টেক কেয়ার’ করা হবে, নতুন কিছু করবো। আমরা গরিবদের সাহায্য করে থাকি। তাদের ক্যাশ ট্রান্সফার করা হয়ে থাকে। করোনা পরিস্থিতিতে যারা গরিব হয়েছেন তাদের চিহ্নিত করে সাহায্য করা হবে। আমার বিশ্বাস যারা গরিব, তাদের আমরা আইডেন্টিফাই (চিহ্নিত) করতে পারব। এ বিষয়টির জন্য আমাদের আলাদা একটি কমিটি আছে। প্রধানমন্ত্রী এটি দেখাশোনা করেন। আর আইডেন্টিফাইড যারা, তাদের তো ডেফিনেটলি সাহায্য করা হবে।
শনিবার ‘সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি’র ভার্র্চ্যুয়াল বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
‘করোনা পরিস্থিতি বিশ্বের প্রায় ৬ কোটি মানুষকে চরম দারিদ্র্যের দিকে ঠেলে দিচ্ছে’Ñ এ ধরনের জরিপের বিষয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘এমন ডাটা এখনো আমাদের হাতে আসেনি। এ ব্যাপারে কমেন্টস করার প্রয়োজন নেই। তারপরও আমরা গরিবদের সাহায্য করি। গরিবদের ক্যাশ ট্রান্সফার করা হচ্ছে।
টিকাদান কর্মসূচি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমরা ভ্যাকসিনেশন নিয়ে কনসার্ন। যতদ্রুত সম্ভব দেশের মানুষকে টিকা দেওয়া হবে। আপনারা শিগগিরই এর রেজাল্ট পাবেন।
‘বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি’ (এডিপি)-এর অর্থছাড়ে কড়াকড়ি আরোপ প্রসঙ্গে অর্থমন্ত্রী বলেন, সবাই জানেন সময়টা ভালো যাচ্ছে না। শুধু আমাদের নয়, সারা পৃথিবীতে একটা সংকট চলছে। তাই যেটা প্রয়োজন সেটাই খরচ করছি। অহেতুক খরচ একেবারে বন্ধ করে দিয়েছি। আমাদের থেকে টাকা নিয়ে অপচয় করবেন সেই অপরচুনিটি যদি আমরা বন্ধ করি, সেজন্য আমাদের ফুল মার্কস দেয়া দরকার। আমরা এই অপচয় রোধ করতে এই কাজটি করেছি।
‘বাজেটের কিছু জায়গা পলিশ করার প্রয়োজন আছে’ অতি সম্প্রতি এক ওয়েবিনারে পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান-এর এমন অভিমত প্রসঙ্গে অর্থমন্ত্রীর প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটি আপনারা যেমন বুঝেননি, আমিও তেমনি বুঝিনি। পরিকল্পনামন্ত্রীকে এটি জিজ্ঞেস করতে হবে, তিনি কী মিন করেছেন। বাজেটের ব্যাপারে তার যে মতামত, সেগুলো তো আমরা আগেই পেয়েছি। এখন তিনি আবার নতুন করে কী ভাবছেন আমি জানি না। বাজেট আমাদের সামনেই আছে, বাজেট সবার জন্য উন্মুক্ত। সবাই বাজেটের বিষয়গুলো বিবেচনা করছেন এবং পর্যালোচনাও করছেন। পরিকল্পনামন্ত্রী কিসের ভিত্তিতে এ মন্তব্য করেছেন আমি জানি না। এটা না জানা পর্যন্ত কোনো মন্তব্য করা ঠিক না।
গার্মেন্টস মালিকদের প্রণোদনার টাকা পরিশোধের সময় বাড়ানোর আবেদন প্রসঙ্গে জানতে চাইলে অর্থমন্ত্রী বলেন, এ বিষয়ে এখনও সিদ্ধান্ত হয়নি, সিদ্ধান্ত হলে আপনাদের জানানো হবে। সবাই এটি নিয়ে কাজ করছে। দেখা যাক কি করা যায় শেষ পর্যন্ত।
করোনা পরিস্থিতিতে সামনে অর্থনীতিতে কী ধরনের প্রভাব পড়তে পারেÑ জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমরা সব সময় ভালোটাই প্রত্যাশা করি। এখনও আমাদের সেটাই প্রত্যাশা। আমাদের চলতি অর্থবছরে যে ধরনের প্রজেকশন ছিল, সেগুলো কিন্তু আমরা এচিভ করতে পেরেছি। আমাদের সব প্রজেকশন অর্জন হচ্ছে। এটার সবার কাছে অবিশ্বাস্য মনে হতে পারে।
লিবিয়া থেকে ইতালি যাওয়ার পথে ভূমধ্যসাগর থেকে ২৬৪ অভিবাসনপ্রত্যাশী বাংলাদেশিকে উদ্ধার করেছে তিউনিসিয়ার নৌবাহিনী ও কোস্টগার্ড। দেশে ব্যাপক উন্নতির পরও তারা কেন যাচ্ছেÑ এমন প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘শুধু বাংলাদেশের মানুষ না, সেখানে আমরা দেখি এভাবে অন্যান্য দেশের মানুষ যাত্রা করছে। দেখে-শুনে কেন তারা এই ঝুঁকি নিচ্ছে, সেটা আমার নিজেরও জানতে ইচ্ছা হয়। আমার কথা কেন অবৈধ চ্যানেলে যেতে হবে। সবাই বৈধ চ্যানেলে বিদেশে যেতে পারলে অনেক সুযোগ-সুবিধাও বৃদ্ধি পাবে। আমরা প্রবাসী মন্ত্রণালয়কে এই বিষয়ে বলেছি, বৈধ পথে বিদেশে যাওয়ার বিষয়ে। তাই আমার অনুরোধ আপনারা অবৈধ পথে বা অবৈধ ফাঁদে পা দেবেন না।