গ্রামীণ অর্থনীতিতে ক্ষতির আশঙ্কা বেড়েছে কৃষকদের সুবিধা দেওয়া উচিত
শাহিন হাওলাদার : এনবিআরের সাবেক চেয়ারম্যান ড. আব্দুল মজিদ বলেছেন, প্রথমদিকে করোনা-ভাইরাসের অর্থনৈতিক প্রভাব শুধু শহর ও নগরের গরিব ও মধ্যবিত্ত মানুষের মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিলো। বর্তমানে এর প্রভাব বিস্তারিত হয়ে গ্রাম পর্যন্ত পৌঁছে গেছে। করোনা মহামারীতে গ্রামের মানুষও এখন সমানভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। ব্যাহত হচ্ছে কৃষি খাতের অগ্রগতি।
দ্বিতীয় ঢেউয়ের আগে শহরের মানুষও তেমন ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি, যেমনটা এবার হচ্ছে। গ্রাম থেকে শহরে কৃষি পণ্যর সরবরাহ অব্যাহত ছিলো। মানুষ চাকরি হারিয়ে গ্রামে গিয়ে নিজেদের উদ্যোগে নানমুখী কৃষিকাজে নিয়োজিত করেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক শিক্ষার্থীরাও ধানকাটাসহ নানা কাজে মনোনিবেশ করেছে। যেহেতু গ্রামেই এখন সংক্রমণের মাত্রা বৃদ্ধি পেয়েছে, তাই গ্রামীণ অর্থনৈতিক ব্যবস্থায় ক্ষতির আশঙ্কা বেড়েছে। তবে করোনা এ প্রভাব সাময়িক বলেই মনে হচ্ছে। সুযোগ পেলে গ্রামীণ অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়াতে বেশি সময় লাগবে না।
তাদের জন্য এমন কোনো নাটকীয় বিষয় নেই যা করলেই অর্থনীতি আগের অবস্থায় যাবে, সবাইকে একটু ধৈর্য ধরতে হবে। যেকোনো সিদ্ধান্ত আসতে একটু দেরি হবেই। গ্রামের গরিব মানুষ ও প্রকৃত উদ্যোক্তাদের সাময়িক কষ্ট লাগবের জন্য প্রণোদনাসহ সমাজিক নিরপত্তা ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজানোর পাশাপাশি কার্যক্রমগুলোকে আরও জোরদার করতে হবে।
আশঙ্কার কথা হলো গ্রামে প্রায় ৭০ শতাংশ মানুষের বসবাস। তারাই বাংলাদেশে খাদ্যের অন্যতম জোগান দাতা। কৃষক যদি ক্ষতিগ্রস্ত হয় তাহলে অর্থনীতির ওপর একটা চাপ তৈরি হবে। কোনো নির্দিষ্ট খাত যেমন পোল্ট্রি কিংবা মৎস্যকে আলাদাভাবে চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নেওয়া এই মুহূর্তে সম্ভব নয়। বর্তমানে সরকারের উচিত হবে করোনাভাইরাস মোকাবেলায় কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া। কারণ পরিস্থিতি যতো দ্রুত স্বাভাবিক হবে মানুষ ততো তাড়াতাড়ি কাজে ফিরতে পারবে। অর্থনীতিও চাঙা হবে আপন গতিতে।
করোনা মহামারীতে গরিব মানুষের জন্য সরকারের যে সব চলমান কর্মসূচি আছে তা আরও বেশি জোরদার করতে হবে। সরকার অন্যান্য খাতের জন্য যে ঋণ কর্মসূচি নিয়েছে সে সুবিধা কৃষকদেরও পাওয়া উচিত। কৃষকদের ঋণের বোঝা কমানো একটি সময়সাপেক্ষ ব্যাপার। রাতারাতি কোনো সমস্যার সমাধান করা যায় না।
ঈদকে সামনে রেখে যে লকডাউন কর্মসূচি আসছে সেক্ষেত্রে গুরু-ছাগলের খামারিরা যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয় তা বিবেচনা করে সঠিক ব্যবস্থা নিতে হবে। চামড়া শিল্পের ওপর যেন প্রভাব না পড়ে সেদিকে বিশেষ নজর দেওয়া উচিত, কারণ এটি বাংলাদেশের অন্যতম রপ্তানি পণ্য। যেকোনো বিষয়কেই আগে বিদ্যমান পদ্ধতির আওতায় আনতে হবে। তাৎক্ষণিকভাবে কারও জন্য কিছু করা সম্ভব নয়, তবে সরকার সকল খাতকে প্রাধান্য দিয়ে কার্যকর পদক্ষেপ নিচ্ছে। করোনার ফলে যে অভিঘাত কৃষিসহ অন্যান্য খাতে আসতে পারে সেগুলো বিবেচনায় নিয়েই এবারের বাজেট হচ্ছে।