ডিএসইর বাজার মূলধন ইতিহাসের সর্বোচ্চ স্থানে ব্যাংক বীমা আর্থিকখাতের কল্যাণে শেয়ারবাজারে বড় উত্থান
মাসুদ মিয়া : দেশের শেয়ারবাজার প্রথম কার্যদিবস মিশ্র প্রবণতা থাকলেও মঙ্গলবার সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবস ব্যাংক-বীমা ও আর্থিক খাতের প্রতিষ্ঠানগুলোর কল্যাণে বড় উত্থান হয়েছে। এদিন প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) বাজার মূলধন ইতিহাসের সর্বোচ্চ স্থানে অবস্থান করছে। সেই সঙ্গে বেড়েছে লেনদেনের পরিমাণ। গতকাল ডিএসইতে লেনদেন ১৬০০ কোটি টাকার উপরে হয়েছে।
এদিন লেনদেনের শুরু থেকেই বেশিরভাগ ব্যাংকের শেয়ার দাম বাড়ার প্রবণতা দেখা যায়, যা অব্যাহত থাকে লেনদেনের শেষ পর্যন্ত। ব্যাংকের মতো বেশিরভাগ আর্থিক প্রতিষ্ঠান কোম্পানির শেয়ার দাম বাড়ার প্রবণতা লেনদেনের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত অব্যাহত থাকে।
দিনের লেনদেন শেষে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে তালিকাভুক্ত ৩১টি ব্যাংকের মধ্যে ২৪টির শেয়ার দাম বাড়ার তালিকায় নাম লেখায়। বিপরীতে দাম কমে মাত্র একটির। আর ৫টির দাম অপরিবর্তিত থাকে এবং একটির শেয়ার লেনদেন হয়নি।
অপরদিকে তালিকাভুক্ত ২৩টি অব্যাংকিং আর্থিক প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১৮টির শেয়ারের দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৪টির। বাকি একটির শেয়ার লেনদেন হয়নি।
প্রায় সবকটি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম বাড়ার ইতিবাচক প্রভাব পড়ে সার্বিক শেয়ারবাজারে। ফলে দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইতে সব খাত মিলে ২১২টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১২৯টির। আর ৩২টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ায় দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ৫৭ পয়েন্ট বেড়ে ৬ হাজার ২৬৬ পয়েন্টে উঠে এসেছে। যা ২০১৮ সালের ৭ জানুয়ারির পর সর্বোচ্চ।
২০১৮ সালের ৭ জানুয়ারি সূচকটি ছিল ৬ হাজার ২৬৮ পয়েন্টে। আর গতকাল ডিএসই’র বাজার মূলধন ইতিহাসের সর্বোচ্চ স্থানে অবস্থান করছে ৫ লাখ ২১ হাজার ৯০৮ কোটি ৫৬ লাখ ১৯ হাজার ৪২৯ টাকা।
প্রধান মূল্য সূচকের বড় উত্থানের পাশাপাশি বেড়েছে ডিএসইর অপর দুই সূচক। এর মধ্যে বাছাই করা ভালো কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক ১৪ পয়েন্ট বেড়ে ২ হাজার ২৭৩ পয়েন্টে অবস্থান করছে। আর ডিএসইর শরিয়াহ্ সূচক ৭ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ৩৫৪ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।
সূচকের এই দিনে ডিএসইতে বেড়েছে লেনদেনের পরিমাণও। দিনভর বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ১ হাজার ৬৬৮ কোটি ৫১ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ১ হাজার ৫৯৯ কোটি ২১ লাখ টাকা। সে হিসাবে লেনদেন বেড়েছে ৬৯ কোটি ৩০ লাখ টাকা। টাকার অঙ্কে ডিএসইতে সব থেকে বেশি লেনদেন হয়েছে বেক্সিমকোর শেয়ার। কোম্পানিটির ১৮১ কোটি ১৬ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা পাওয়ার গ্রিডের ৫৭ কোটি ৭৩ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে। ৪৭ কোটি ৭ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে লাফার্জহোলসিম।
এ ছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছেÑ সাউথইস্ট ব্যাংক, লংকাবাংলা ফাইন্যান্স, প্যারামাউন্ট টেক্সটাইল, ফরচুন সুজ, অ্যাডভেন্ট ফার্মা, কেয়া কমমেটিকস এবং আমান ফিড।
অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের সার্বিক মূল্য সূচক সিএএসপিআই বেড়েছে ১৭৯ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৫৭ কোটি ৭৩ লাখ টাকা। লেনদেনে অংশ নেয়া ৩১০টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১৬৫টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১৬৫টির এবং ২৭টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।