সবজির দাম চড়া হলেও অপরিবর্তিত রয়েছে চাল ডাল পেঁয়াজ
মাসুদ মিয়া : রাজধানীতে নিত্যপণ্যের দাম বেড়েই চলছে। সপ্তাহ ব্যাবধানে বেড়েছে অধিকাংশ সবজির দাম। তবে অপরিবর্তিত রয়েছে চাল ডাল সবজি, পেঁয়াজ, ডিম, মুরগি এবং গরু ও খাসির মাংসের দাম। সেই সঙ্গে সব ধরনের মাছের দামও বেশ চড়া।
শুক্রবার রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, আগের মতো সব থেকে বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে গাজর। এই সবজিটি কিনতে ক্রেতাদের কেজিতে ১০০ থেকে ১৩০ টাকা দিতে হচ্ছে। মিনিকেট চাল বিক্রি হচ্ছে ৬৪ টাকা আগের সপ্তাহ একই দাম ছিল। আটাইস বিক্রি হচ্ছে ৫২ টাকা কেজি। মোটা চাল বিক্রি হচ্ছে ৪৮ টাকা কেজি। আমদানি করা আদার কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৬০ থেকে ১৭০ টাকা, আদার এই দাম বাড়ার বিষয়ে লক্ষিবাজারের ব্যবসায়ী মো. নাজমুল হোসেন বলেন, পাইকারি বাজারে হঠাৎ করে আদার দাম অস্বাভাবিক বেড়েছে। বেশি দামে কেনায় আমরা বাড়তি দামে বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছি।
তিনি আরও বলেন, পাইকারি বাজার থেকে শুনেছি বাইরে থেকে আদা আমদানি হচ্ছে খুব কম। এ কারণে দাম বেড়েছে। তাছাড়া কোরবানির ঈদও কাছাকাছি চলে এসেছে। আমাদের ধারণা এখন আদার দাম বাড়ার পিছনে এটাও একটা কারণ।
এছাড়া কেজি একশ টাকার ওপরে বিক্রি হওয়ার তালিকায় রয়েছে পাকা টমেটো। আগের সপ্তাহের মতো পাকা টমেটোর কেজি বিক্রি হচ্ছে ১০০ থেকে ১২০ টাকা।
এর সঙ্গে বেগুন, ঝিঙে, করলা, বরবটি, চিচিঙ্গার দামও বেশ চড়া। তবে সপ্তাহের ব্যবধানে সবগুলোরই দাম প্রায় অপরিবর্তিত রয়েছে। বেগুন, ঝিঙে এবং করলার কেজি ৬০ থেকে ৭০ টাকা, চিচিঙ্গার কেজি ৫০ থেকে ৬০ টাকা, বরবটির কেজি ৭০ থেকে ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
এছাড়া আগের মতো ঢ্যাঁড়স এবং পটল ৪০ থেকে ৫০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। কাঁচা কলার হালি বিক্রি হচ্ছে ৩৫ থেকে ৪০ টাকা। পেঁপের কেজি ৪০ থেকে ৫০ টাকা। সবজির দামের বিষয়ে কারওয়ান বাজারের ব্যবসায়ী সবুর সরদার বলেন, আমাদের হিসেবে সবজির দাম যে হারে বাড়ার কথা, সে হারে বাড়নি। কারণ এবার বৃষ্টিতে প্রচুর সবজি নষ্ট হয়ে গেছে। আবার করোনার কারণে সবজির সরবরাহ কম। সে হিসেবে সবজির দাম অনেক বেড়ে যাওয়ায় কথা, তবে বাড়েনি। ঈদের পর সবজির দাম বাড়বে বলে আমাদের ধারণা।
লক্ষিবাজারের ব্যবসায়ী মো. আলম বলেন, আড়তে এখন সবজির দাম অনেক। বেশি দামে কিনে আনার কারণে আমরা বেশি দামে বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছি। শীতের সবজি বাজারে আসার আগে দাম কমার সম্ভাবনা নেই। বরং ঈদের পর সবজির দাম আরও বাড়তে পারে। মাছ বাজারে গিয়ে দেখা যায়, তেলাপিয়া মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৫০ থেকে ১৬০ টাকা, রুই মাছ ২৩০ থেকে ২৮০ টাকা, মৃগেল ২০০ থেকে ২৫০ টাকা, চিংড়ি ৬০০ থেকে ৭০০ টাকা, পাবদা ৪০০-৫০০ টাকা এবং রূপচাঁদা মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৭০০ থেকে ৮৫০ টাকা।
মাংসের বাজারে খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, আগের মতো ব্রয়লার মুরগির কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৩০ থেকে ১৪০ টাকায়। লেয়ার মুরগি ২৩০-২৪০ টাকা আর সোনালি মুরগির কেজি বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ২৩০ টাকা।
মুরগির পাশাপাশি দাম অপরিবর্তিত রয়েছে গরু ও খাসির মাংসের। গরুর মাংসের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫৮০ থেকে ৬০০ টাকা। আর খাসির মাংসের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৮০০ থেকে ৯০০ টাকা।
এর সঙ্গে সপ্তাহের ব্যবধানে দাম অপরিবর্তিত রয়েছে আলু এবং ডিমের। আলুর কেজি বিক্রি হচ্ছে ২৫ টাকা। আর ফার্মের মুরগির ডিম ডজন বিক্রি হচ্ছে ১০৫ টাকায়। লক্ষিবাজারে থেকে সবজি ও মাছ কেনা রিয়াজুল বলেন, ‘বাজারে সবকিছুর দাম চড়া। আমাদের কিছু করার নেই। সবকিছু মুখ বন্ধ করে সহ্য করে নিতে হবে। এই করোনার মধ্যে সাধারণ মানুষ কী পরিমাণ কষ্টে আছে, বলে বোঝানো যাবে না।’