কোরবানির চামড়া সংগ্রহ সংরক্ষণ ন্যায্যমূল্য নিশ্চিতে বিশেষ মনিটরিং সেল
সোহেল রহমান : ‘জাতীয় সম্পদ চামড়া, রক্ষা করবো আমরা’- এ শ্লোগান নিয়ে কোরবানির পশুর চামড়া সংগ্রহ, নিরাপদ সংরক্ষণ ও ক্রয়-বিক্রয়ে ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করতে ‘বিশেষ মনিটরিং সেল’ গঠন করেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন) মালেকা খায়রুন্নেছাকে (মোবাইল- ০১৭১১০০৫৬৪৬) প্রধান করে রোববার চার সদস্য বিশিষ্ট বিশেষ মনিটরিং সেল গঠন করা হয়। মনিটরিং সেলের অপর তিন সদস্য হচ্ছেন- একই মন্ত্রণালয়ের উপসচিব (রপ্তানি-৭) মো. আমিনুল ইসলাম (মোবাইল- ০১৭১৬৪৬২৪৮৪), উপসচিব (এফটিএ) মো. সেলিম (মোবাইল ০১৭১৩৪২৫৫৯৩) ও বাণিজ্য বিষয়ক পরামর্শক মো. জিয়াউর রহমান (মোবাইল ০১৭১২১৬৮৯১৭)।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় জানায়, কোরবানির পশুর চামড়া আহরণ, সংরক্ষণ, পরিবহন ও ক্রয়-বিক্রয় সংক্রান্ত সাপ্লাই চেইনে যাতে কোন ধরনের সমস্যা না হয়, সেজন্য বাণিজ্য মন্ত্রণালয়সহ সারাদেশের প্রশাসন কাজ শুরু করেছে। বিশেষ মনিটরিং সেলের যে কোন সদস্যকে ফোন করলেই সহযোগিতা পাওয়া যাবে। মাঠ পর্যায়ে সব ধরনের সহযোগিতা প্রদানের জন্য প্রশাসনকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। লবণযুক্ত চামড়া সংরক্ষণ, পরিবহন ও ক্রয়-বিক্রয়ের ক্ষেত্রে সকল বিষয় তদারকির জন্য প্রতিটি জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় করবে। আশা করা যাচ্ছে, এবার কোরবানির চামড়া সংগ্রহ, সংরক্ষণ এবং নির্ধারিত মূল্যে ক্রয়-বিক্রয়ে কোন ধরনের সমস্যা হবে না।প্রসঙ্গত, গত বৃহস্পতিবার দেশের চামড়া ও পাদুকা ব্যবসায়ী সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে এক ভার্চুয়াল বৈঠকে কোরবানির পশুর চামড়ার ক্রয়মূল্য নির্ধারণ করে দিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুন্শি।
নির্ধারিত দর অনুযায়ী, লবণযুক্ত প্রতি বর্গফুট গরুর চামড়ার ক্রয়মূল্য ঢাকায় ৪০ থেকে ৪৫ টাকা এবং ঢাকার বাইরে ৩৩ থেকে ৩৭ টাকা। এছাড়া খাসী ও বকরির প্রতি বর্গফুট চামড়ার ক্রয়মূল্য সারাদেশে যথাক্রমে ১৫ থেকে ১৭ টাকা এবং ১২ থেকে ১৪ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
ঐ ভার্চুয়াল বৈঠকে চামড়ার গুণগত মান নিশ্চিত করতে যথাযথভাবে চামড়া সংগ্রহ ও সংরক্ষণের ওপর গুরুত্বারোপ করে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, কোন চামড়া যাতে নষ্ট না হয়। সরকার এ বিষয়ে জনসাধারণকে সচেতন করার জন্য দেশের প্রচার মাধ্যমে টিভিসি প্রচার, শ্লোগান ও লিফলেট বিতরণসহ পর্যাপ্ত প্রয়োজনীয় প্রচার অভিযান চালাচ্ছে।
এদিকে যথাযথভাবে কোরবানির পশুর চামড়া সংরক্ষণে একটি নির্দেশিকাও তৈরি করেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। নির্দেশিকা মতে, কোরবানির পশু জবাইয়ের স্থান সমতল ও পরিষ্কার হতে হবে। জবাইয়ের পর পশুর রক্ত সম্পূর্ণ ঝরাতে সময় দিতে হবে। কোরবানির পর পশুকে টানা-হেঁচড়া করা যাবে না, এতে ঘর্ষণে চামড়া নষ্ট হতে পারে। কোরবানির পর সুচালো মাথার ছুরি দিয়ে সঠিক ও লম্বালম্বিভাবে চামড়া কাটতে হবে। বাঁকানো মাথার ছুড়ি দিয়ে চামড়া ছাড়াতে হবে। রক্তমাখা ছুড়ি কোনভাবেই চামড়ায় মোছা যাবে না।
কাঁচা চামড়া সংরক্ষণ পদ্ধতি : লবণ দিয়ে চামড়া সংরক্ষণের পূর্বে চামড়ায় লেগে থাকা মাংস, চর্বি, রক্ত, পানি, মাটি ও গোবর ভালোভাবে পরিষ্কার করতে হবে। চামড়া ছাড়ানোর ৪-৫ ঘন্টার মধ্যে গরুর চামড়ায় ৭-৮ কেজি, ছাগলের চামড়ায় ৩-৪ কেজি লবণ ভালোভাবে লাগাতে হবে, যাতে কোন স্থান ফাঁকা না থাকে। চামড়া সংরক্ষণের স্থান একটু উঁচু হতে হবে, যাতে চামড়া থেকে পানি ও রক্ত সহজেই গড়িয়ে যেতে পারে। এমন ভাবে চামড়া সংরক্ষণ করতে হবে, যাতে বৃষ্টির পানি বা রোদ না লাগে এবং স্বাভাবিক বাতাস চলাচল করতে পারে। সম্পাদনা : প্রিয়াংকা