চালের দাম নিয়ন্ত্রণে উৎপাদন-চাহিদার সঠিক হিসাব বের করতে হবে
আমিরুল ইসলাম : ইন্দোনেশিয়াকে টপকে বিশে^র তৃতীয় চাল উৎপাদনকারী দেশ হতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। কিন্তু গত বছরের একই সময়ের চেয়ে এবার চালের দাম বেড়েছে গড়ে ১২ শতাংশ। রেকর্ড উৎপাদনের বছরে চালের সর্বোচ্চ দামের বিষয়টিকে কীভাবে দেখছেন এবং চালের দাম নিয়ন্ত্রণে করণীয় কী জানতে চাইলে এনবিআরের সাবেক চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ আবদুল মজিদ বলেন, সরকারের ধান-চাল ক্রয়, বিক্রয় ও রপ্তানির জন্য যে কমিটি আছে, সে কমিটির এই বিষয়টিকে ভালো করে দেখা উচিত। এ বছর ধান উৎপাদন খুব ভালো হয়েছে। কিন্তু আমাদের প্রয়োজনের তুলনায় এটা যথেষ্ট কিনা সেটা খুঁজে বের করতে হবে।
এ প্রতিবেদকের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, আমরা সঠিকভাবে বলতে পারি না, আমাদের প্রয়োজন কতোটুকু। আমাদের কতোটুকু প্রয়োজনÑ এর হিসাবের মধ্যে ত্রুটি আছে। দেশে চাল আমদানি করা হচ্ছে। আবার আরেকদিকে প্রচার করা হচ্ছে, চাল উৎপাদন বেশি হওয়ায় আমরা রপ্তানিও করবো। পুরো হিসাবটা ভালো করে বের করলেই বোঝা যাবে, প্রকৃতপক্ষে আমাদের সঙ্কট আছে কিনা। চালের উৎপাদন আমাদের চাহিদার সঙ্গে মিলছে কিনা সেটা বের করত পারলে দাম বৃদ্ধির সঙ্কট দূর হবে।
তথ্যের বা হিসাবেব গড়মিল থাকলে একপক্ষ আছে যারা শুধু আমদানির দিকে আগ্রহ দেখাবে। কিন্তু আমাদের দেশের মজুদ কতোটুকু আছে সেটা তারা দেখবে না। সঠিক হিসেব নেই বলে কৃত্রিম সংকট তৈরি করা হচ্ছে। মিলারারা সঠিক তথ্য দিচ্ছে না। যার ফলে চালের দাম ক্রমশই বাড়ছে। আর বাইরেও একটা ধারণা হচ্ছে যে চালের উৎপাদন বৃদ্ধি পাওয়া সত্ত্বেও দাম কমছে না। এই মেকানিজমটা আসলেই জটিল। তাই এদিকে নজর দিয়ে বিষয়টি পরিষ্কার করতে হবে।
তিনি বলেন, চালের দাম বাড়তেই পারে যদি উৎপাদন খরচ বেশি হয়ে থাকে। যদি বিদেশ থেেেক অধিক পরিমাণে চাল আমদানি করতে হয়। মোট উৎপাদন ও চাহিদার পার্থক্য বের করে সেই পরিমাণ চাল আমদানি করতে হবে। উৎপাদন ভালো হলো, চাহিদা না থাকলেও আমদানি করতে থাকলে দাম বাড়তেই থাকে। অভ্যন্তরীণ ভাবে কতো দামে কৃষকের কাছে ক্রয় করছি, সেটা কোথায় রাখছি? মিলাররা কৃত্রিম সংকট তৈরি করছে কিনা। ম্যানেজমেন্টকে এটা দেখতে হবে। করোনাকালে মানুষ সঠিকভাবে খাদ্য না পেলে অস্থিতিশীল পরিবেশের সৃষ্টি হবে। তাই অন্যান্য সময় থেকে এখন চালের দাম বৃদ্ধির বিষয়টিকে আরও বেশি গুরুত্ব দিয়ে দেখতে হবে।