রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় সমাহিত ফকির আলমগীর
কে এম নাহিদ : গণসংগীতশিল্পী ফকির আলমগীরকে রাজধানীর খিলগাঁওয়ের তালতলা কবরস্থানে চিরনিদ্রায় শায়িত করা হয়েছে। শনিবার দুপুর আড়াইটায় তার দাফন সম্পন্ন হয়েছে।
বাদ যোহর চৌধুরীপাড়া মাটির মসজিদে ফকির আলমগীরের দ্বিতীয় জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। সেখান থেকেই দাফনের জন্য মরদেহ তালতলা কবরস্থানে নিয়ে যাওয়া হয়।
এর আগে সকাল ১১টা ১৬ মিনিটে রাজধানীর খিলগাঁওয়ের পল্লীমা সংসদ প্রাঙ্গণে ফকির আলমগীরের প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এরপর সেখান থেকে তার মরদেহ দুপুর পৌনে ১২টায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে নিয়ে যাওয়া হয়। ফকির আলমগীর স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের অন্যতম শিল্পী। তারও আগে থেকে তিনি শ্রমজীবী মানুষের জন্য গণসংগীত করে আসছিলেন। স্বাধীনতার পর পাশ্চাত্য সংগীতের সঙ্গে দেশজ সুরের মেলবন্ধন ঘটিয়ে বাংলা পপ গানের বিকাশে ভূমিকা রেখেছেন ফকির আলমগীর।
দীর্ঘ ক্যারিয়ারে তার কণ্ঠের বেশ কয়েকটি গান দারুণ জনপ্রিয়তা পায়। এরমধ্যে ‘ও সখিনা’ গানটি এখনও মানুষের মুখে মুখে ফেরে। ১৯৮২ সালের বিটিভির ‘আনন্দমেলা’ অনুষ্ঠানে গানটি প্রচারের পর দর্শকের মধ্যে সাড়া ফেলে। কণ্ঠ দেওয়ার পাশাপাশি গানটির সুরও করেছেন ফকির আলমগীর।
তিনি সাংস্কৃতিক সংগঠন ঋষিজ শিল্পীগোষ্ঠীর প্রতিষ্ঠাতা, গণসংগীত চর্চার আরেক সংগঠন গণসংগীতশিল্পী পরিষদের সাবেক সভাপতি।
সংগীতে অসামান্য অবদানের জন্য ১৯৯৯ সালে সরকার তাকে একুশে পদক দিয়ে সম্মানিত করে।
সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের ব্যবস্থাপনায় শহীদ মিনারে ফকির আলমগীরের নাগরিক শ্রদ্ধাঞ্জলি অনুষ্ঠিত হয়। ‘কঠোর বিধিনিষেধ’ ও বৃষ্টি উপেক্ষা করে অনেকেই তাকে শেষবারের মতো শ্রদ্ধা জানাতে ছুটে যান।
শ্রদ্ধা নিবেদন করে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট, গণসংগীত সমন্বয় পরিষদ, পথনাটক পরিষদ, উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী, ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, কৃষক লীগ, দনিয়া সাংস্কৃতিক জোট, মহাকাল নাট্য সম্প্রদায়, স্পন্দন, আদিঢাকা সাংস্কৃতিক জোট, যুব ইউনিয়ন, কেন্দ্রীয় খেলাঘর আসর, জাসদ, ছাত্রমৈত্রী, বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোটসহ বিভিন্ন সাংস্কৃতিক, সামাজিক ও রাজনৈতিক সংগঠন।
গণসংগীত শিল্পী ও স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শব্দসৈনিক ফকির আলমগীর শুক্রবার রাত ১০টা ৫৬ মিনিটে করোনায় আক্রান্ত হয়ে ইউনাইটেড হাসপাতালে মারা যান। গত ১৫ জুলাই থেকে হাসপাতালটিতে তিনি ভর্তি ছিলেন।