৬ হাজার ৬৫৪ সেচ অবকাঠামো সংস্কারে ব্যয় ৩২২ কোটি ৯৮ লাখ টাকা
শোভন দত্ত : সংস্কার হচ্ছে ৬ হাজার ৬৫৪টি সেচ অবকাঠামো। এর মধ্যে গভীর নলকূপ ১ হাজার ৩৫৮টি এবং পাম্প হাউজ ৫ হাজার ২৯৬টি পুনর্বাসন করা হবে। এর ফলে ৪০ হাজার ৭৪০ হেক্টর জমিতে সেচ কার্যক্রম অব্যাহত রেখে বছরে অতিরিক্ত প্রায় ৩ লাখ ২৬ হাজার মেট্রিন টন ফসল উৎপাদন, সেচনালা মেরামত সংস্কারের মাধ্যমে সেচের পানি অপচয়রোধ করা হবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা। এজন্য সেচ অবকাঠামো পুনর্বাসন শীর্ষক একটি প্রকল্প হাতে নিচ্ছে কৃষি মন্ত্রণালয়।
প্রকল্পটি বাস্তবায়নে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৩২২ কোটি ৯৮ লাখ ৭১ হাজার টাকা। প্রকল্পটি রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের ১৬টি জেলার ১২০টি উপজেলায় বাস্তবায়ন করা হবে। পরিকল্পনা কমিশনের একাধিক কর্মকর্তা জানান, কৃষি মন্ত্রণালয় থেকে প্রস্তাব পাওয়ার পর চলতি ২৫ মার্চ অনুষ্ঠিত হয় প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সভা।
ওই সভায় দেওয়া সুপারিশগুলো প্রতিপালন করায় জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) আগামী বৈঠকে অনুমোদনের জন্য উপস্থাপনের সুপারিশ করা হয়েছে। অনুমোদন পেলে চলতি বছর হতে শুরু হয়ে ২০২৬ সালের জুনের মধ্যে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিএমডিএ)।
সূত্র জানায়, রাজশাহী ও রংপুর বিভাগে বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিএমডিএ) নিয়ন্ত্রণাধীন ১৫ হাজার ৫১৭টি গভীর নলকূপের দ্বারা প্রায় ৫ লাখ হেক্টর জমিতে সেচ সম্প্রসারণ করে দুই থেকে তিনটি ফসল উৎপাদন করা হয়ে থাকে এবং এতে বছরে প্রায় ৪৫ লাখ টন ফসল উৎপাদিত হয়। ষাট থেকে আশির দশকে স্থাপিত এসব গভীর নলকূপের মধ্যে ৪৫ থেকে ৫০ শতাংশ নলকূপের বয়স ইতোমধ্যে ২৫ থেকে ৪০ বছর পার হয়েছে।
গভীর নলকূপগুলোর জীবনকাল পার হওয়ায় নলকূপের হাউজিং পাইপ, স্ট্রেইনার, রিডিউসার ইত্যাদি নষ্ট হয়ে পানির সাথে বালি পাথর বের হচ্ছে। নলকূপের পাম্প হাউজগুলো দীর্ঘদিন মেরামত সংস্কার না হওয়ায় ঘরের দেয়াল, ছাদ ও বীম ভেঙ্গে যাচ্ছে। এছাড়া পাম্প, মটর ট্রান্সফরমার দীর্ঘদিনের পুরাতন হওয়ায় ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। ফলে প্রতিটি নলকূপের কমান্ড এরিয়ায় ভূ-গর্ভস্থ সেচনালা, বিদ্যুৎ লাইনসহ অন্যান্য অবকাঠামো থাকা সত্ত্বেও নলকূপের সমস্যার কারণে সেচ কার্যক্রম বাঁধাগ্রস্ত হচ্ছে।
এসব বিবেচনায় সেচ অবকাঠামো পুনর্বাসনের মাধ্যমে নিরবচ্ছিন্ন সেচ কার্যক্রম অব্যাহত রাখার জন্য প্রকল্পটি প্রস্তাব করা হয়েছে। প্রকল্পের মূল কার্যক্রম হচ্ছে, ১ হাজার ৩৫৮টি গভীর নলকূপ পুনর্বাসন, ১ হাজার ৩৫৮টি সাবমার্সিবল পাম্প ক্রয়, ২ হাজার ৩০৯টি ব্যবহার অযোগ্য পাম্প হাউজ পুনঃনির্মাণ, ২ হাজার ৯৮৭টি পাম্প হাউজ মেরামত এবং ১ হাজার ৩৫৮টি বিদ্যুৎ লাইন পুনঃসংযোগ দেওয়া হবে।
এ বিষয়ে প্রকল্পটির দায়িত্বপ্রাপ্ত পরিকল্পনা কমিশনের কৃষি, পানি সম্পদ ও পল্লী প্রতিষ্ঠান বিভাগের সদস্য রমেন্দ্র নাথ বিশ্বাস পরিকল্পনা কমিশনের মতামত দিতে গিয়ে বলেন, প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে বরেন্দ্র এলাকায় সেচ কার্যক্রম সম্প্রসারণের মাধ্যমে ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে, যা খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন ধরে রাখাসহ দারিদ্র্য বিমোচনে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে। সূত্র : সারাবাংলা, বাংলাট্রিবিউন। গ্রন্থনা : শোভন দত্ত। সম্পাদনা : ভিকটর রোজারিও