বিশ্বজিৎ দত্ত : গার্মেন্ট কারখানাগুলোতে প্রায় সকল শ্রমিকই উপস্থিত হয়েছেন। সকাল থেকেই তারা কাজ করছেন। ঢাকা ও আশেপাশের এলাকার শ্রমিকরা কারখানার পাশেই থাকেন। কিছু শ্রমিক ঈদের সময় বাইরে গিয়েছিলেন। তারাও গত শুক্র ও শনিবারে চলে এসেছেন। সুতরাং আজকে কারখানায় তেমন শ্রমিক সংকট নেই। গতকাল গার্মেন্ট খোলা নিয়ে এ কথা জানিয়েছেন বিজিএমএইর সভাপতি ফারুক হাসান।
বিকেএমইএর সাবেক সভাপতি ফজরুল হক জানান, আমার কারখানাগুলো যথারীতি চলছে। শ্রমিকদের স্বাস্থ্যবিধি মেনে কাজ করার জন্য সরকারের যে সব নির্দেশনা আছে তা পালন করেই তারা কারখানায় সকালে এসেছেন। কারখানার পক্ষ থেকে যে সব সুরক্ষা নেয়া দরকার সবই নেয়া হয়েছে।
৫ আগস্ট পর্যন্ত লকডাউনের মধ্যেই মালিকদের দাবির প্রেক্ষিতে সরকার ১ আগস্ট গার্মেন্ট খোলে দেয় সরকার। শ্রমিকরা যারা কারখানার বাইরে ছিল তারা লকডাউনের মধ্যেই ঢাকা এসে উপস্থিত হয়। গতকাল প্রত্যেক কারখানাতেই বেশির ভাগ শ্রমিক কাজ করছেন। বিজিএমই সভাপতি জানান, কারখানায় কাজ করলে শ্রমিকরা টিফিন পায়। অনেক কারখানায় দুপুরের খাবারও দেয়া হয়। তারা নিজেরাই কারখানা খোলার জন্য মালিকদের বলছেন। আমরা এখন আবার ভাবছি, শ্রমিকদের বেতন নিয়ে। মাস শেষ হয়েছে গার্মেনট বন্ধ ছিল। কিন্তু শ্রমিকদের তো বেতন দিতে হবে।
অন্যদিকে গার্মেন্ট খোলা নিয়ে সরকার, বিরোধী দল ও বিশেষজ্ঞ সবাই মনে করছেন এতে করোনা সংক্রমন বাড়বে। স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালিক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, জীবন জীবিকার কথা বিবেচনায় নিয়ে গার্মেন্ট খোলতে হয়েছে। কিন্তু এতে করোনার প্রকোপ আরো বাড়বে। বিএনপির মহাসচিব মির্জ্জা ফখরুলও বলেন, গার্মেন্ট খোলে দেয়ায় দেশে করোনার সংক্রমন বাড়বে। তিনি সরকারের এ সিদ্ধান্তের সমালোচনা করেছেন।
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. লেলিন চৌধুরী বলেন, লকডাউনের ফলে সরকারের কত ক্ষতি হয় আর এর কারণে কি লাভ হয় এর একটি হিসাব থাকা দরকার। কারণ ব্যাবসায়ীরা নানা সময়ে বিভিন্ন দাবি করে। তাদের দাবির একটি অন্যতম বিষয় হলো আর্থিক ক্ষতি হবে। কিন্তু করোনার বিস্তার হলে এই আর্থিক ক্ষতির চেয়ে বড় ক্ষতিহবে মানুষের। এর পরিমাপ না করে লকডাউন তুলে দেয়া ঠিক নয়। দেশে র্যাপিড করোনার কোন টেস্ট নেই। ভারতে ফার্মেসিতেও র্যাপিড টেস্টের কীট পাওয়া যায়।
যে কেউ ঘর বসেই করোনা টেস্ট করতে পারেন। আমাদের সরকারের মধ্যে এই কিট ব্যবহার করতে দেয়ায় কোথায় যেন একটা সমস্যা রয়েছে। গার্মেন্ট কারখানায় শ্রমিকদের র্যাপিড টেস্ট করে কারখানা খুলে দিলে কোন সমস্যা হতো না।
গতকাল গার্মেন্ট খোলার পর শ্রমিকদের উপস্থিতি ঠিক মতোই হয়েছে বলে জানিয়েছেন আরো কয়েকজন গার্মেন্ট মালিক। তাদের মতে, গার্মেন্ট শিল্পটি প্রধানত সময় নীর্ভর। সঠিক সময়ে সঠিক মৌসুমে পণ্য গ্রাহকদের দিতে হয়। তাই কারখানার শ্রমিকদের প্রয়োজন। একটি কারখানা বন্ধ থাকলে ও পরে চালু হলে এটি তার পুরো গতিতে ফিরে আসতে সময় লাগে। কিন্তু গার্মেন্ট শিল্পের হাতে এতটা সময় নেই। তাই গার্মেন্ট খুলতে হয়েছে।